হাত এত লম্বা শেখ সেলিমদের তা ধরাছোঁয়ার বাইরে

‘শেখ সেলিম সাহেব শেখ পরিবারের লোক। আমাদের দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্য। একসময় মন্ত্রী ছিলেন। কী কারণে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন, জানি না। উনি গোপালগঞ্জ থেকে ভোট করেন। সেখানে ৯৫ ভাগ আওয়ামী লীগ করে। নোয়াখালী এসে নির্বাচন করলে জামানত পাবেন কি না, আমি জানি না। সারা বাংলাদেশে প্রচার আছে, উনি ক্যাসিনো ব্যবসার সাথে জড়িত। আজকে ক্যাসিনো ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। শেখ সেলিমদের হাত এত লম্বা, ওনারা আজকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।’ শনিবার রাত আটটায় নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। লাইভ চলে ৩১ মিনিট ৩২ সেকেন্ড।

নিজের প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শেখ সেলিমের সঙ্গে দেখা করেছেন উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘শেখ সেলিমদের সাথে নাকি আমাদের এলাকার অপরাজনীতির হোতা সেই ছেলে (মিজানুর রহমান) পঙ্গুত্বের অভিনয় করে শেখ সেলিমের কাছে গেছেন। সেলিম সাহেব নাকি ডিআইজিকে বলেছেন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আপনার মতো একজন জাতীয় নেতা কিছু যাচাই না করে কেন আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন। বাংলাদেশে এখন একটা কথা আছে, অপরাজনীতির হোতাদের শেল্টার দিচ্ছেন শেখ সেলিম সাহেব। আমি আহ্বান জানাব, নেতৃত্বে আছেন নেতৃত্বসুলভ আচরণ করেন। আপনারা কী করেন সবাই জানে।’

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে কাদের মির্জা বলেন, ‘আপনাদের মাথায় ঢুকেছে জোর করে ভোট নিয়ে আপনারা আবার পরবর্তী সরকার গঠন করবেন। এটা কি রাজনীতি? ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধু নেতা হয়েছেন? ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধু কি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন? আজকে আপনাদের মাথায় ঢুকেছে ভোট চুরি করবেন। এলাকার সাথে সম্পর্কের দরকার নাই। ওবায়দুল কাদের সাহেব আজকে কয় বছর এখানে আসেন না? এলাকার খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন নাই। অন্য এমপিদের অবস্থাও একই। দুই-চারজন এলাকায় আসে টিআর–কাবিখার টাকা, রাস্তার কাজের ভাগ নেওয়ার জন্য। এভাবে চলতে দেওয়া যায়? বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করেছেন, তা ৫০ বছরেও কেউ করতে পারেনি। আর আপনার তাঁর সকল অর্জন ধ্বংস করে দিচ্ছেন।’


কাদের মির্জা নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘আমারে আপনি কোণঠাসা করবেন। আমার কর্মীদের গ্রেপ্তার করবেন। হত্যা করবেন। আলমগীর সাহেব (সাবেক এসপি মো. আলমগীর হোসেন) তো দরজা পাইছে যাইবার লাই। আমনে (আপনি) দুয়ার (দরজা) টোয়াই হাইতেন ন (খুঁজে পাবেন না)। সাবধান। এক সাংবাদিক পাঠাইছেন, এখানে আমার খবর নেওয়ার জন্য। তথ্য তো ঠিকমতো দিছি। আপনি যেগুলো করছেন। সরকারি খালের জায়গা আমি উদ্ধার করার জন্য গেছি, আপনি খাইছেন ১০ লাখ, আপনার ওসি খেয়েছে ৫ লাখ। টাকা খেয়ে পুলিশ পাহারা বসাইছেন। কত দিন পুলিশ পাহারা বসাবেন, আমি দেখতে চাই। ভানুমতীর খেল আমাকে দেখাইয়েন না। আমার কর্মীর ওপর হাত দিয়েন না। এগুলো বন্ধ করেন।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আপনাদের ওবায়দুল কাদের ভয় পেতে পারেন, কারণ তিনি তো মানুষের হৃদয়ে নাই। গ্যাস দিবে বলে দেননি। দক্ষিণ এলাকার মানুষ বাড়িঘর হারিয়ে রাস্তার ওপর বসবাস করছে। গত দুই বছরে কোম্পানীগঞ্জে তিনি কোনো উন্নয়ন করেননি। কবিরহাটে করেননি। ওনার লোকজন সারা দিন ব্যস্ত নারী নিয়ে। চাকরি দিবে বলে নারীদের এনে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে আর খবর নাই। ওনার লোকজন টাকা ও নারী নিয়ে ব্যস্ত। ওবায়দুল কাদের সাহেব ওনার স্ত্রীর কথায় ঘুমিয়ে আছেন। আপনার কবর রচনা হবে আগামী নির্বাচনে, কোম্পানীগঞ্জে। অস্ত্রধারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন এই কোম্পানীগঞ্জ।’

Leave a Comment