সেই চালক ছিলেন মাদকাসক্ত, ছিল না লাইসেন্স

বাগেরহাটে মোটরসাইকেল আরোহী ইউএনডিপির এক কর্মকর্তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ১২ দিন পর ট্রাকসহ ট্রাকের কথিত চালককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাওলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ মিজানুর রহমান (৩০) নামে ওই যুবককে আটক করে।

শনিবার দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিং এ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানানো হয়।  আটক মিজানুর রহমান (৩০) বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের এসকেন্দার আলীর ছেলে। তিনি ছিলেন ওই ট্রাকের চালকের সহকারী। তার কোনো লাইসেন্স নেই।

গত ২২ মে বাগেরহাট-চিতলমারী সড়কের বাগেরহাট শহরের অদূরে মুণিগঞ্জ সেতুর টাকা আদায়ের টোল প্লাজার বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে ট্রাকটি মোটরসাইকেল আরোহীদের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিলে শেখ মশিয়ার রহমান নামে এক ইউএনডিপির কর্মকর্তা নিহত হন। এসময় সংবাদের সাংবাদিকসহ আরও চারজন কমবেশি আহত হন। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় একটি মামলা করে। টোলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ট্রাকটি ও তার চালককে শনাক্ত করে।

নিহত মশিয়ার রহমান বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোটাপাড়া গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি ইউএনডিপি’র বাগেরহাটের একটি প্রকল্পে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ছিল তার কর্মস্থল।

প্রেস বিফ্রিংয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার দিন বাগেরহাট-চিতলমারী সড়কের বাংলা বাজার এলাকায় ট্রাকটি দাঁড় করিয়ে ট্রাকের চালকের আসনে বসে থাকা মিজানুর মাদকসেবন (গাঁজা) করছিলেন। এসময় স্থানীয় কিছু লোক তা দেখে ফেললে ট্রাক চালক ধরা পড়ার ভয়ে আর না দাঁড়িয়ে গাড়ি ছেড়ে সামনের দিকে রওনা করেন। স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে মাদকসেবন অবস্থায় বেপরোয়াগতিতে রাস্তায় গাড়ি চালাতে থাকেন। মুণিগঞ্জ এলাকায় পৌঁছে ওই গাড়ির চালক দেখেন টোল প্লাজার সামনে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া। তার ধারণা ছিল এই চেকপোস্টে তাকে আটকে দেয়া হতে পারে এজন্য তিনি বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে মোটরসাইকেল আরোহীদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যান। এতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত এক ইউএনডিপির কর্মকর্তা নিহত হন। আহত হন আরো কয়েকজন।

তিনি বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের হাতে আটক মিজানুর তা স্বীকার করেছেন। পুলিশের হাতে আটক হওয়া এই ব্যক্তি প্রকৃত চালক নন। তিনি ওই গাড়ির চালকের সহকারী ছিলেন। এসময় গাড়ির চালক তার পাশে বসা ছিলেন। গাড়ির চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। তাকে আজ আদালতে পাঠানো হচ্ছে। তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড চাওয়া হবে।

Leave a Comment