সাপ দিয়ে নির্যাতনের পর গৃহবধূকে অ্যাসিড নিক্ষেপ

ফেনীর পরশুরামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে সাপ দিয়ে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতনের পর অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। রবিবার বেলা ১২টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

তার বোন জানান, রবিবার সকালে মা-সহ তিনি ট্রাংক রোডের সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে খবর পান বাড়িতে তার বোনকে জানালা দিয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। অ্যাসিডে তার চোখ-মুখ ও হাত ঝলসে গেছে।

নির্যাতনে বাক্‌শক্তি হ্রাস পাওয়া গৃহবধূ জানিয়েছেন, নিলক্ষ্মী শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা তারেক ও মিনার এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারেক সম্পর্কে তার স্বামী লিখন আহমেদের ফুপাতো ভাই ও মিনার তার ভাগনে।

অভিযুক্ত তারেক ও মিনারকে ফুলগাজির আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী খবর পেয়ে তাকে দেখতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ছুটে যান।

গৃহবধূর মা জানান, তার স্বামীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে যৌতুকের জন্য নানাভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করে আসছে। গত ৭ আগস্ট রাতে তাকে একটি বিষধর সাপ কাটে। সে মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করলেও কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরদিন ৮ আগস্ট বিকেলে পাশের এলাকার একজন সাপুড়ে এনে (ওঝা) পুনরায় সাপ দিয়ে চিকিৎসার নামে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে।

তিনি জানান, নির্যাতনের ভিডিও ও ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পরদিন ৯ আগস্ট তাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আট দিন চিকিৎসা নেয়ার পর গত ১৬ আগস্ট তাকে ফুলগাজীর  নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

গৃহবধূকে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই যুবক তারেক ও মিনারকে ফুলগাজীর আমজাদ হাট বাজার থেকে আটক করা হয়েছে বলে রবিবার সন্ধ্যায় জানান ফুলগাজী থানার ওসি নুরুজ্জামান।

পরশুরাম উপজেলার প্রবাসীর সঙ্গে ৫ বছর আগে ওই গৃহবধূর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামীর মা ও ভাই-বোনরা মিলে তাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকে। এ ঘটনায় তার মা ফুলগাজী থানায় মামলা দায়ের করলে ননদ হাসিনা আক্তার ও তার স্বামী আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Leave a Comment