সাংসদ শামসুল হককে এলাকা ছাড়তে রিটার্নিং কর্মকর্তার চিঠি

সাংসদ শামসুল হককে এলাকা ছাড়তে রিটার্নিং কর্মকর্তার চিঠিসাংসদ শামসুল হককে এলাকা ছাড়তে রিটার্নিং কর্মকর্তার চিঠি

পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে পাবনা-১ আসনের সাংসদ শামসুল হক টুকুকে এলাকা ছাড়তে বলেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি আজ সোমবার সাংসদের কাছে ওই চিঠি পাঠান। সাংসদের ভাই ও পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আবদুল বাতেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘন করার এ অভিযোগ করেছেন।

বেড়া পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাংসদ টুকুর বড় ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আসিফ শামস। এখানে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন সাংসদ শামসুল হকের ছোট ভাই বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল বাতেন। একই সঙ্গে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাংসদের বড় ভাইয়ের মেয়ে এস এম সাদিয়া আলম।

স্থানীয় সূত্র জানায়, চাচা আবদুল বাতেনকে ‘লুটেরা’ ও ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যায়িত করে মেয়র পদে প্রচার চালাচ্ছেন সাংসদের ছেলে আসিফ শামস ও তাঁর চাচাতো বোন সাদিয়া। ফলে পারিবারিক বিরোধে বিভক্ত হয়ে পড়েছে  স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাংসদ শামসুল হকের ছোট ভাই আবদুল বাতেন বলেন, তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয় বসানো হয়েছে। বিষয়টিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অন্যদিকে শামসুল হকের নির্দেশে পৌর এলাকায় বহিরাগত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। সাংসদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য সভায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সাধারণ ভোটারদের হুমকি–ধমকি দিচ্ছে। তিনি নিজের ছেলের জন্য প্রকাশ্য ভোট চেয়ে হুমকি–ধমকি দিয়ে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। এ ঘটনায় সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন জায়গার অভিযোগ করা হয়েছে।

সাংসদ শামসুল হক রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী বিধান সম্পর্কে আমি অবহিত। আমি আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি, করার ইচ্ছেও নেই।’
সাংসদ শামসুল হকের বড় ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া আলম বলেন, ‘আমার কর্মী–সমর্থকদের নির্বাচনী মাঠে নামতেই দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা প্রচার চালাতে বাইরে নামলেই বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন চাই।’

আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের হুমকি–ধমকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসিফ শামস বলেন, ‘আমার চাচা আবদুল বাতেন দুর্নীতি–অনিয়মের কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তিনি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের লালন করেন। এ কারণেই দলীয় মনোনয়ন পাননি। এখন দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নৌকার বিপক্ষে ভোট করছেন।’

এ বিষয়ে জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সাংসদেরা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু পাবনা-১ আসনের সাংসদ শামসুল হক এই বিধান অমান্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে তাঁকে এলাকা ত্যাগ করতে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *