“শ্রমিক ” কোন গালি দেওয়া বস্তু নয়। শ্রমিকরা আলাদা কোন জাতিও নয়। যারা শ্রম দিয়ে জীবিকা আহরন করে তারা সবাই শ্রমিক।
একজন পোশাক শ্রমিক যেমন শ্রমিক, তেমনি একজন প্রকৌশলীও শ্রমিক । ডাক্তার,শিক্ষকও শ্রমিক । শুধুমাত্র কাজের ধরন আলাদা। যেহেতু কাজের ধরণ ও ক্ষেত্র আলাদা সেহেতু সকলের বেতনের ধরনও আলাদা। যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ এবং কাজ অনুযায়ী বেতন। হিসেব বরাবর। এছাড়া আর কোন কিছুই আলাদা না। সবাই সমান। সবাই মানুষ।
সময় এসেছে সামাজিক বৈষম্য দূর করার। অপেক্ষাকৃত কম বেতনের শ্রমিকদের হেয় করে কথা বলার অভ্যাস সবার দূর করতে হবে। গার্মেন্টস কর্মী, বাস ড্রাইভার, বাসের হেল্পার, রিক্সা ওয়ালা, ভ্যান ওয়ালা, ইটভাটার কর্মী সবাই মানুষ। সবাই সমান।
রিক্সাওয়ালা রিক্সা চালায় বলে পিতার বয়সী বৃদ্ধকে তুমি করে সম্বোধন করার দিন শেষ। গার্মেন্টস কর্মীর সাথে বন্ধুত্ব করলে ইজ্জত চলে যাওয়ার দিন শেষ। গৃহকর্মীকে আলাদা প্লেটে খাবার দেয়ার দিন শেষ। সবাই মানুষ। সবার উপরে মানুষ। জগতে যত বৈধ পেশা আছে সেই পেশায় নিয়োজিত সকলেই সমান। কোন বৈষম্য রাখবেন না। নিজে এই কালচার প্র্যাকটিস করুন। নিজের ছেলে মেয়ে, অফিসের কলিগ সকলকে এটা প্র্যাকটিস করতে সাহায্য করুন। ভুল ধরিয়ে দিন।
সমাজে হেয় হতে হলে তারা হবে যারা এসব মেহনতি মানুষের অধিকার নষ্ট করে নিজেরা ভোগ করে।
পারলে দুর্নীতিবাজদের সমাজে একঘরে করে ফেলুন। তাদের পরিবারদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করুন। তাদের সন্তানদের বুঝিয়ে দেন যে তোমার বাবার অবৈধ পয়সার কারণে তোমাকে আমার পাশে বসতে দিতে লজ্জা হয়। তোমার বাবাকে থামাও।
মানুষের ঘামে ঝড়া পয়সা মেরে খাওয়া ব্যাক্তিরাই ছোট লোক, যারা ঘাম ঝড়িয়ে পয়সা উপার্জন করে তারা ছোট নয়।
সৈয়দ মসিউর রহমান
প্রধান শিক্ষক
নীল দরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, পীরগঞ্জ, রংপুর।