ঝিনাইদহের শৈলকুপার সারুটিয়া ইউপি নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের কাতলাগাড়ি বাজারে এই সংঘর্ষ বাধে। নিহত ব্যক্তির নাম হারান আলী (৬৫)। তিনি ইউনিয়নের নাদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই ইউপি নির্বাচনের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুনের কর্মী ছিলেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, পঞ্চম ধাপে ৫ জানুয়ারি সারুটিয়া ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ওই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (আনারস প্রতীক) হয়েছেন জুলফিকার কায়সার। তিনি শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সারুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকে সম্প্রতি বহিষ্কৃত হয়েছেন।বিকেল থেকেই ইউনিয়নের কাতলাগাড়ি বাজার এলাকায় এই দুই প্রার্থীর সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ একপর্যায়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি বাড়িঘর ভাঙচুর। সন্ধ্যায় কাতলাগাড়ি বাজারে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তিনজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে হারান আলীকে সংকটাপন্ন অবস্থায় শৈলকুপা হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। অন্য দুজনকে ফরিদপুরে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নৌকার প্রার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, তিন দিন আগেই তিনি আইনশৃঙ্খলা সভায় তাঁর লোকজনকে মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, প্রতিপক্ষ তাঁর বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। শেষ পর্যন্ত সেই ঘটনাই ঘটানো হলো। সন্ধ্যায় তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাঁর সক্রিয় কর্মী হারান আলীকে খুন করা হলো। অন্য দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জুলফিকার কায়সারের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিপক্ষের হামলায় নৌকার একজন সমর্থক নিহত হয়েছেন। তাঁরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। থানায় ফিরে অভিযোগ পেলে মামলা নেবেন।