শেষ ওভারে মাঠ ছাড়তে চাওয়ার নাটকের পর মোস্তাফিজদের হার

শেষ ওভারে মাঠ ছাড়তে চাওয়ার নাটকের পর মোস্তাফিজদের হারশেষ ওভারে মাঠ ছাড়তে চাওয়ার নাটকের পর মোস্তাফিজদের হার

শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রয়োজন ছিল ৩৬ রান। কিন্তু ১৯তম ওভারে কোনো রান না দিয়ে ১টি উইকেট তুলে নিলেন রাজস্থানের পেসার প্রসিধ কৃষ্ণা। ১ ওভারে ৩৬ রান প্রয়োজন, এমন অবস্থায় দিল্লির জয়ের আশা করার লোকের সংখ্যা খুব বেশি ছিল বলে মনে হয় না। কিন্তু শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার ওবেদ ম্যাককয়ের প্রথম ৩ বলে ৩টি ছক্কা মেরে মৃতপ্রায় আশাটাকে জাগিয়ে তোলেন আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান, দিল্লির ব্যাটসম্যান রোভম্যান পাওয়েল।

ওই তৃতীয় বলই আবার জন্ম দেয় আরও বাড় নাটকের। বলটি ছিল ফুল টস। দেখে মনে হচ্ছিল, স্টাম্পের উচ্চতার চেয়ে ওপরে ছিল বলটি। পাওয়েলের সঙ্গে সেই সময় উইকেটে থাকা ভারতীয় খেলোয়াড় কুলদীপ যাদব আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। ওদিকে দিল্লির ডাগআউট থেকে অধিনায়ক ঋষভ পন্তসহ সবাই আম্পায়ারকে ইঙ্গিতে বোঝাচ্ছিলেন, তৃতীয় আম্পায়ারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দেওয়া হোক।

আম্পায়ার তাঁদের কথা শুনছিলেন না। এমন সময় হঠাৎ দুই ব্যাটসম্যানকে মাঠ ছাড়ার ইশারা দেন পন্ত। তাঁরা চলেও যেতে বসেছিলেন। কিন্তু আম্পায়ার কিছু একটা বোঝানোর পর চলে না গিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন পাওয়েল। সে সময় পন্ত হতাশা প্রকাশ করে কোচিং স্টাফের একজনকে মাঠে পাঠান। তিনি এসে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আম্পায়ার তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।

নাটক শেষে খেলা শুরু হয়। কিন্তু পাওয়েল পরের বল থেকে কোনো রান নিতে পারেননি। পরের বলে ২ রান নেন এবং শেষ বলে ছয় মারতে গিয়ে বল আকাশে তোলেন পাওয়েল। আউট হয়ে ফেরেন ১৫ বলে ৫টি ছয়ে ৩৬ রান করে। দিল্লিও ২০ ওভারে ৮ উইকেটে তুলতে পেরেছে ২০৭ রান। ম্যাচ হেরেছে তারা ১৫ রানে।

এর আগে টি-টোয়েন্টিতে অবিশ্বাস্য ছন্দটা ধরে রেখে আরেকটি শতক করলেন রাজস্থান রয়্যালসের ইংলিশ ব্যাটসম্যান। এবারের আইপিএলে এটা তাঁর তৃতীয় শতক। আইপিএলের এক মৌসুমে এর চেয়ে বেশি শতক আছে শুধু বিরাট কোহলিরই। ২০১৬ সালে চারটি শতক এসেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ভারতীয় ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে। সব মিলিয়ে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি শতক ক্রিস গেইলের—ছয়টি। কালকেরটি নিয়ে আইপিএলে বাটলারের মোট শতক হয়ে গেল চারটি।

বাটলারের শতকে মোস্তাফিজদের দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ২২২ রান করেছে রাজস্থান। ৬৫ বলে ৯টি করে চার ও ছয়ে ১১৬ রান করেছেন বাটলার, আউট হয়েছেন বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজের বলে। ৪ ওভারে ৪৭ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ। রাজস্থানের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেছেন দেবদূত পাড়িক্কাল। এই দুজন মিলে উদ্বোধনী জুটিতে ১৫.১ ওভারে তোলেন ১৫৫ রান। ৩৫ বলে ৭টি চার ও ২ ছক্কার ইনিংসটি খেলে পাড়িক্কাল ফিরেছেন খলিল আহমেদের বলে এলবিডব্লু হয়ে।

দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে বাটলার শুরুটা করেছিলেন ধীরগতিতেই। প্রথম ১৪ বলে করেছিলেন মাত্র ১৩ রান। পঞ্চম ওভারে গিয়ে যেন মনে হলো তাঁর—এখন বাউন্ডারির সময়। খলিলের করা ওই ওভারে মারলেন দুটি ছয়। এরপর থামেননি আর। দশম ওভারে শার্দূল ঠাকুরকে ছয় মেরে গেছেন ৪৯ রানে, পরের ওভারে কুলদীপ যাদবকে চার মেরে অর্ধশতক পেয়েছেন ৩৬ বলে। পরের পঞ্চাশে বাটলার সময় নিয়েছেন মাত্র ২১ বল।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৫৫ রান তুললেও হারিয়ে ফেলে ২ উইকেট। ডেভিড ওয়ার্নার আর সরফরাজ খানকে হারালেও রান তোলার গতিতে ভাটার তেমন টান আসেনি। পৃথ্বী শ আর ঋষভ পন্ত মিলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন লক্ষ্যের দিকে। কিন্তু দশম ওভারের শেষ বলে শ আউট হয়ে ফেরার পর ১২তম ওভারে ফিরেছেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ রান (২৪ বল) করা অধিনায়ক পন্তও।

এরপর হয়তো জয়ের আশা ছেড়েই দেন দিল্লির সমর্থকেরা। কিন্তু ললিত যাদব আর পাওয়েল হাল ছাড়েননি। তাঁদের দুজনের চেষ্টার ফলেই শেষ ওভারের ওই নাটক পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছে দিল্লি।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *