শিক্ষায় বড় পরিবর্তন, শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন

শিক্ষায় বড় পরিবর্তন, শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন

দেশের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন এনে প্রণয়ন করা প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) যৌথ সভায় এই রূপরেখার অনুমোদন দেওয়া হয়।

অবশ্য এনসিসিসির একজন সদস্য বলেছেন, এই অনুমোদন কেবল আনুষ্ঠানিকতা। কারণ, ইতিমধ্যেই মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়নও শুরু হয়ে গেছে। এমনকি প্রাথমিক স্তরে বিস্তারিত শিক্ষাক্রমও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

 

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলটিং) বাস্তবায়ন শেষে আগামী বছর থেকে বিভিন্ন শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি; ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি; ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (শিখনকালীন) বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না, পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন রকমের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম—দুটোই থাকছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে এখনকার মতো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে না। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে। প্রতি বর্ষ শেষে বোর্ডের অধীনে এই পরীক্ষা হবে। এরপর এই দুই পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।

এ ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে এখন থেকে শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন সিলেবাসে পড়বে। আর শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক না বাণিজ্য বিভাগে পড়বে, সেই বিভাজন হবে একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে।

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ ধরনের শেখার ক্ষেত্র ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হলো ভাষা ও যোগাযোগ, গণিত ও যুক্তি, জীবন ও জীবিকা, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। প্রাক্-প্রাথমিকের শিশুদের জন্য আলাদা বই থাকবে না, শিক্ষকেরাই শেখাবেন।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখাটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে দুই মন্ত্রণালয়ের এনসিসিসিতে অনুমোদন দেওয়ার ফলে এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের যৌথ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানসহ এনসিসিসির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *