শাওন গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে: মির্জা ফখরুল

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া যুবদল কর্মী শাওন ভূঁইয়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে শাওনের জানাজার আগে তিনি এসব কথা বলেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই ফ্যাসিবাদী-কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটিয়ে শাওনের আত্মত্যাগের প্রতিদান দেব। শাওন গণতন্ত্র, ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, তবেই হবে শাওনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন।’

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন শাওন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মারা যান। আজ ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ফ্রিজিং ভ্যানে করে শাওনের লাশ বিএনপি কার্যালয়ে আনা হয়। এর আগে থেকেই হাজারো নেতা-কর্মী নয়াপল্টনে অবস্থান করছিলেন। মাগরিবের নামাজের পর তাঁর জানাজা হয়। এরপর বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ফুল দিয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

জানাজা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শাওনের লাশ নিয়ে ফ্রিজিং ভ্যানটি মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। আগামীকাল শাওনের মরদেহ দাফন করা হবে।

শাওনের সুরতহাল প্রতিবেদন
শহিদুল ইসলাম ওরফে শাওন ভূঁইয়ার (২৬) লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁর কপালের ডান পাশে মাথায় গভীর রক্তাক্ত জখম দেখা গেছে। সেখানে তাঁর মগজ আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি বেরিয়ে যায়। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে শাওনের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন ঢাকার শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে শাওনের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। বিকেল সোয়া চারটায় তাঁর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাত নাঈম।

গত বুধবার জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দলীয় নেতা-কর্মী হত্যার প্রতিবাদে মুন্সিগঞ্জ শহরের অদূরে মুক্তারপুরে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। বেলা তিনটার দিকে সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে শাওন ভূঁইয়া ও বিএনপির সমর্থক জাহাঙ্গীর মাদবর (৩৮) গুরুতর আহত হন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে শাওনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এর পর থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গতকাল রাত নয়টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

Leave a Comment