‘যদি’, ‘কিন্তু’ পেরিয়ে রোনালদো যদি খেলতে আসেন বাংলাদেশে…

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো খেলছেন ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায়। হাজার হাজার দর্শকে ভরে গেছে গ্যালারি।

দৃশ্যটা কল্পনা করুন তো একবার! কেমন হবে ব্যাপারটা! বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশের ফুটবল দর্শকদের কাছে এর চেয়ে মহার্ঘ্য আর কিছু হতে পারে না। ২০১১ সালে লিওনেল মেসি খেলে গেছেন। সামনে যদি রোনালদো আসেন, তাহলে সোনায় সোহাগা।

এখন থেকে এমন কিছু ভাবতে শুরু করতে পারেন বাংলাদেশের অতি উৎসাহী ফুটবলপ্রেমীরা। আর ভাবলে সেটা বাড়াবাড়ি হবে না। কেননা পাকেচক্রে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বাংলাদেশে মাটিতে ম্যাচ খেলা অসম্ভব কিছু নয়।

সুযোগটা করে দিতে পারে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ। যেখানে খেলে এশিয়ার শীর্ষ স্তরের ক্লাবগুলো। তাদেরই অন্যতম সৌদি আরবের আল নাসর ক্লাবের যোগ দিয়েছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। বলতে পারেন, তাতে বাংলাদেশের ফুটবলে কী লাভ? এর সঙ্গে রোনালদোর বাংলাদেশের ক্লাবের বিপক্ষে খেলার সম্পর্ক–ই বা কী?

সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হচ্ছে বলেই আসলে এত কথা। বাংলাদেশের ক্লাব এমনিতে এএফসির দ্বিতীয় সারির ক্লাব টুর্নামেন্ট এএফসি কাপে খেললেও এ বছর এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের ঢোকার প্লে–অফ খেলার সুযোগ পাচ্ছে। এর আগে আবাহনী এএফসি কাপের আন্ত–আঞ্চলিক সেমিফাইনালে ওঠায় বাংলাদেশের পয়েন্ট বেড়েছে এবং তারই ভিত্তিতে আগামী চার বছর এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের সরাসরি না হোক, অন্তত প্লে–অফ খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশের লিগ চ্যাম্পিয়নরা। আর লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এ বছর সুযোগটা পাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। প্লে–অফে জিতলে গ্রুপ ঢোকার সুযোগ মিলবে। সে ক্ষেত্রে আল নাসরের সঙ্গে কিংসের খেলা পড়লেও পড়তে পারে।

ব্যাপারটা অনেকে ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফের তেল’ বলতে পারেন। তাতে কী, বিষয়টা নিয়ে চর্চা করতে তো দোষ নেই। কিন্তু তার আগে নিশ্চিত হতে হবে এ বছর এফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে সৌদি আরবের আল নাসর ক্লাব খেলবেই। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার জন্য দুটি পথ আছে নাসরের সামনে। একটি হলো, চলমান সৌদি লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, না হয় চ্যাম্পিয়ন হতে হবে সৌদি আরবের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট কিংস কাপে। আল নাসরের জন্য ভালো খবর, এখন পর্যন্ত ঘরোয়া লিগে তারা শীর্ষে আছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ পাওয়া দলটির নাম যে বসুন্ধরা কিংস হবে, তাতে কোনো সংশয় নেই। তবে একটা কিন্তু আছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে ক্লাব লাইসেন্সিং করতে হবে কিংসকে। এমনিতে এএফসি কাপে খেলতে ক্লাব লাইসেন্সিং করেছে তারা আগেই। চ্যাম্পিয়নস লিগেরটাও করবে, যা শুরু হবে এ মাসেই। চ্যাম্পিয়নস লিগের ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের শর্তাবলি এএফসি কাপের চেয়ে একটু কঠিন। তবে সেটা এমন নয় যে পূরণ কর যাবে না। বিশেষ করে বসুন্ধরা কিংসের মতো ক্লাবের জন্য এটা কঠিন কিছু নয়।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের অন্যতম একটি শর্ত, ঘরোয়া লিগে সংশ্লিষ্ট ক্লাবের যে ভেন্যু, সেটি সর্বোচ্চ দুটি ক্লাবের ভেন্যু হতে হবে। অর্থাৎ কিংসের ভেন্যু কিংস অ্যারেনাকে ভেন্যু করতে পারবে একটি ক্লাব। চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ভালো দিক হলো কোনো ভেন্যুরই স্বাগতিক দল দুটির বেশি নয়। সে হিসেবে শর্তটা পূরণ করতে পারছে কিংস।

এএফসি চ্যাম্পিয়ন লিগে খেলার সুযোগ বাংলাদেশের ক্লাবের জন্য কতটা বাস্তবসম্মত, জানতে চাইলে বাফুফের কম্পিটিশন্স ম্যানেজার জাবের বিন তাহের আনসারি  আজ বলেন, ‘ প্রথমত, কিংসকে ক্লাব লাইসেন্সিং করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্লে–অফ জিততে হবে। তাহলে কিংস খেলতে পারবে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে।’

তা কিংস কী ভাবছে? ক্লাবটির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর আবু জোবায়ের নিপু বলেন, ‘এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার বড় সুযোগ আমাদের সামনে। ক্লাব লাইসেন্সিং ভালোভাবেই করবে কিংস। অনেক শর্ত আছে, সেসব পূরণ করতে একটু সময় হয়তো লাগবে। তবে কিংস বিষয়টা খুব গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। কিংস চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে সম্ভব সবকিছু করবে।’

এর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের নিচের স্তর এএফসি কাপে দুবার খেলে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে কিংস। এবার তাদের স্বপ্ন অনেক বড়। তবে এ বছর কীভাবে চ্যাম্পিয়নস লিগ হবে, সেটা এখনো বাফুফেকে জানায়নি এএফসি। এত দিন এএফসির বর্ষপঞ্জি ছিল জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখন সেটা জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত। জানা গেছে, চ্যাম্পিয়নস লিগে প্লে–অফ আগামী আগস্টের আগে হবে না।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *