ভাসানচরে যেতে উখিয়া ছাড়ল আরও ৯৯৩ রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে ৩৩৮ পরিবারের ৯৯৩ জন রোহিঙ্গা। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৮টি ও রাত পৌনে ৯টার দিকে ১২টি বাসে করে তাদের চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে এই রোহিঙ্গাদের ভাসানচর আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হবে।

এর আগে ১৬ দফায় কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছিল ৩১ হাজার রোহিঙ্গাকে। সব মিলিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে ১৭ দফায় মোট ৩২ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তর করা হলো।

 

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয়শিবিরের চাপ কমায় অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। সরকারি তথ্যানুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই জায়গায় ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, বিকেল থেকে উখিয়ার কুতুপালং, লম্বাশিয়া, মধুরছড়া আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের ছোট আকৃতির বাসে তুলে আনা হয় উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠের অস্থায়ী কেন্দ্রে। সেখানে রোহিঙ্গাদের তথ্য যাচাই, স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৮টি ও রাত পৌনে ৯টার দিকে ১২টি বাসে ৩৩৮ পরিবারের ৯৯৩ জন রোহিঙ্গাকে ওঠানো হয়, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। এরপর পুলিশি পাহারায় গাড়িবহর উখিয়া ত্যাগ করে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, সোমবার সকালের আগেই রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলো চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় পৌঁছার কথা। রোহিঙ্গাদের বাসের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজনের গাড়ি আছে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলো চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর নৌবাহিনীর জাহাজে তুলে নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হবে। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবনযাপনের সব ব্যবস্থা করা আছে।

উখিয়ার বালুখালী (ক্যাম্প-১৫) আশ্রয়শিবির ছেড়ে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাসানচরের পথে রওনা দিয়েছেন রোহিঙ্গা মো. রফিক (৩২)। কারণ জানতে চাইলে রফিক বলেন, উখিয়ায় আশ্রয়শিবিরে খুনখারাবি, অপহরণ বেড়ে গেছে। মাদকের বেচাবিক্রির পাশাপাশি ব্যবহারও বাড়ছে। কিশোরীরা নিরাপত্তাহীন, সব সময় অপহরণ আতঙ্কে থাকতে হয়। এ কারণে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে চলে যাচ্ছেন তিনি। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সময়-সুযোগ তৈরি হলে ফিরে আসবেন।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ (৩৮) বলেন, ৯ মাস আগে তাঁর ভাই-ভাবিসহ পরিবারের ৫ জন ভাসানচরে গেছেন। সেখানে থাকার পরিবেশ ভালো। তাই তিনিও যাচ্ছেন।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *