ভালোবাসার গল্পটি পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না

ওর সাথে পারিবারিক ভাবেই বিয়েটা হয়েছিলো। বাসর রাতে ওর প্রথম প্রশ্ন ছিলো,কয়টা প্রেম করছেন? . আমি ওর মুখের দিকে অনেকক্ষন তাকিয়ে ছিলাম। আবার বলেছিলো,কয়টা প্রেম করছেন?

আমি বলেছিলাম একটাও না! উওরটা শুনে অনেক খুশি হয়েছিলো।বলেছিলো,এখন থেকে শুধু আমাকেই ভালোবাসবেন,অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালে মেরে ফেলবো! ও আমাকে কতটা ভালোবাসে বুঝছিলাম সেই দিন।যেদিন আমি ওর চাচাতো বোনের সাথে হেসে হেসে কথা কিছুক্ষন বলছিলাম। ও আমাকে জড়িযে ধরে সে কি কান্না! আমাকে বলেছিলো, তোমাকে না বলেছি আর কারো সাথে কথা বলবে না।

আমি মরে গেলে ইচ্ছেমত কথা বলো! তখন আর নিষেধ করবো না! ওর কাঁন্না দেখে আমি নিজেই কেঁদেছিলাম। . ও আমাকে বলেছিলো,আমি নাকি বাবা হবো! কথাটা শুনে যে কি খুশি হয়েছিলাম বোঝাতে পারবো না! ওকে কোলে করে সারা বাড়ি ঘুরেছিলাম। . ও আমাকে বলতো রান্না করার সময় ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে না থাকলে নাকি ওর রান্না করতে ইচ্ছে করে না।

আমি ওর সব আবদার হাসি মুখে পুরন করতাম। বড্ড ভালোবাসতাম ওকে। এখনো বাসি। ও আমাকে বলেছিলো,আমাকে জড়িয়ে ধরে না ঘুমালে নাকি ওর ঘুমই আসে না! সারারাত জড়িযে ধরে থাকতো। তাই কোথাও রাতে থাকতাম না যত রাতই হোক বাসায় আসতাম! . ও যখন ৬ মাসের অন্তঃসন্তা তখন আমাকে বলেছিলো,আমাকে ছাড়া তোমার কেমন লাগবে গো?

আমি ওর কথা উওর দিতে পারি নি শুধু কেঁদেছিলাম! ও আমাকে প্রায় বলতো,আমার যদি কিছু হয়ে যায় তুমি আবার আরেক টা বিয়ে করো না যেন! মরে গিয়েও তোমাকে অন্য কারও হতে দিবো না! আমাকে ভুলে যেও না। ওর কথা শুনে কাঁদতাম।

ঘুমানোর সময় আমাকে বলতো,আমাকে ছাড়া ঘুমানোর চেষ্টা করো? বলা তো যায় না………. আমি ওকে আরও জড়িয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতাম! . একদিন ওর ব্যথা উঠলো! সাথে সাথে ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। ও আমাকে বলেছিলো,আমার যদি কিছু হয়ে যায় প্লিজ আমাকে ভুলে যেও না! বড্ড ভালোবাসি তোমাকে।

কথাটা শুনে কান্না ধরে রাখতে পারি নি! ওকে বলেছিলাম,কিছু হবে না তোমার আমি তো আছি। কিছু হতে দিবো না! ও আমাকে বলেছিলো, শেষ বারের মত একবার বুকে নিবে? কথাটা বলেই হাউ মাউ করে কেঁদে দিছিলো! আমিও কান্না ধরে রাখতে পারি নি।ও আমাকে ছেড়ে দিতে চাইছিলো না, জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলো! আমিও কাঁদছিলাম! সবাই হা করে তাকিয়ে ছিলো।

নিয়েছিলাম ওকে বুকে কিন্তু এটাই যে শেষবার বুঝতে পারি নি।বুঝতে পারলে কখনোই ছেড়ে দিতাম না।ও আমাকে বলছিলো,আমার সাথে তুমিও চলো আমার খুব ভয় করছে! ডাক্তারকে কত বার বলেছিলাম,আমিও ওর পাশে থাকবো! কিন্তু আমাকে যেতে দিলো না। . অপারেশন থিয়েটার থেকে একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনলাম। বাচ্চাকে পেলাম,কিন্তু ওকে আর পেলাম না! .

পাগলেন মত ওর কাছে গেলাম,দেখলাম সাদা কাপড় দিয়ে ওকে ঢেকে রাখছে। কাপড়টা সরাতেই অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম! জ্ঞান ফিরার পর দেখলাম ওকে খাটলিতে শুয়ে রাখছে। ওর কাছে গেলাম।বলেছিলাম,এই কই যাও আমাকে ছেড়ে? আমার রাতে ঘুম হয় না তোমাকে ছাড়া জানো না? তোমাকে না জড়িয়ে ঘুমালে আমার ঘুম হয় না জানো না? কেন চলে যাচ্ছো? এই উঠো উঠো অনেক তো ঘুমালা আর কত ঘুমাবে?

আমার কথা মনে পড়েনি? এই তুমি না বলেছিলে আমার চোখের জল তুমি সহ্য করতে পারো না! এই দেখো আমি কাদছি, এই উঠো,আরে উঠো না! প্লিজ উঠো! ও শুনলোই না আমার কথা ঘুমিয়ে থাকলো! . ওকে যখন নিয়ে যাচ্ছিলো আমি পাগলের মত আচরন করছিলাম। তবুও উঠলো না! চলে গেলো। ও আমাকে বলতো যে দিন হারিয়ে যাবো সেই দিন বোঝবে কতটা ভালোবাসি তোমাকে!

চলে গেলো,হারিয়ে গেলো! . ১০ বছর ধরে তার স্মৃতি বুকে নিয়ে বেঁচে আছি। ছোট্ট মেয়ে বুঝতে শিখেছে।আমাকে বলে আব্বু আম্মুর জন্য আর কেঁদো না।তোমাকে আর কাঁদতে দিবো না! বলে চোখের পানি মুছে দেয়।আবার চোখ জলে ভরে উঠে,আবার মুছে দেয়। (গল্পটি কেমন লাগলো কমেন্টস করে জানাতে ভুলবেন না সবাই। আপনাদের এক একটি কমেন্টস আমার লেখার আগ্রহের এক একটি অনুপ্রেরন।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *