কচু আর পাটশাক খেয়ে রোজা রাখা মহিতনকে দিলেন ১ মাসের বাজার ও ঈদ উপহার
‘বড় কষ্টে আছি বাবা। জীবন আর চলে না।’ এমনটা বলে নিজের কষ্টের কথা বলছিলেন ৮১ বছর বয়সী উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের কৈপাড়া গ্রামের মৃত জাফর আলীর স্ত্রী মহিতন (৮১)। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছে। অন্যের দয়ায় চলছে তার জীবনযাপন। তিন ছেলে এক মেয়ে থাকতেও নেই।
কয়েক বছর আগে দুই ছেলে মোন্নাফ ও মনির কাজ করতো। কুমিল্লা থেকে বাড়ি আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। আর ছোট ছেলে মতিয়ার বউ সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকে। আর মেয়েটিও থাকে অন্যের জমিতে। বাড়িতে নড়বড়ে একটি চালা। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। তখন বসে রাত কাটায় মহিতন। চালার চারিদিকে দেওয়া হয়েছে নেট।
যাতে পানি ভিতরে না ঢুকে। ঘরে ভাঙ্গা একটা চৌকি। তাও নড়বড়ে। ছেড়া কেতা বালিশ। ঘরে মানুষ ঘোরার মতো জায়গা নেই। মাঝে মাঝে রান্না করে বাহিরে। সীমাহীন কষ্ট মহিতনের। সরকারের মানবিক সহায়তা কিংবা ভিজিএফ এর টাকাও সে পায়নি। সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট মহিতনের। অন্যের দয়ায় চলে মহিতনের জীবন। ইফতার ও সেহরিতে খায় মানুষের দেওয়া খাবার। মাঝে মাঝে কচুশাক ও পাট শাক তার সম্বল।
একই গ্রামের মসজিদের মোয়াজ্জিন আবুবক্কর বলেন, খুব কষ্ট তার। মানুষ যেখানে দেয় সেটাই খায়। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, টাকা দেওয়ার সময় তাকে আমি পাইনি।
দৈনিক ইত্তেফাকে এমন একটি সংবাদ চোখে পড়ে রংপুর জেলা পুলিশের সম্মানিত অভিভাবক, বাংলাদেশ পুলিশের আইকন, মানবিক পুলিশ সুপার জনাব #বিপ্লবকুমারসরকার বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের। পুলিশ সুপার মহোদয় নিজেই ওই বৃদ্ধা মহিলার খোজ নেন এবং তার জন্য ১ মাসের বাজার হিসেবে চাল, ডাল, লবণ, তেল, পেয়াজ, আলু, মুরগী ইত্যাদি পাঠিয়ে দেন। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে সেমাই, চিনি, দুধ, মশলা, নতুন কাপড় ও নগদ সাহায্য দেন। রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) জনাব মোঃ আশরাফুল আলম পলাশ আজ সকালে পুলিশ সুপার মহোদয়ের পক্ষে এসকল উপহার পৌছে দেন।
পুলিশ সুপারের উপহার পেয়ে আনন্দে কেদে ফেলেন বৃদ্ধা। তিনি বলেন, দুই বেটা মরি গেছে, আরেক বেটা থাকিয়াও নাই। বেটি বেচে খাচুং। মাইনসের থাকি খুজি মিলি খাং। এসপি স্যার মোর বেটার চেয়েও বড় কাম করিল। আল্লাহ তোমাগুলাক ভালে থুক।
এসময় উপস্থিত স্থানীয় জনতা নিঃসঙ্গ এই বৃদ্ধার পাশে দাড়ানোর জন্য এসপি বিপ্লব কুমার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।