কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ গতকাল বুধবার দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশটি তার স্বাধীনতার ৩০ বছরের মধ্যে সম্প্রতি সবচেয়ে বাজে অস্থিরতার মুখোমুখি হয়। এই অস্থির সময়ে নেতৃত্ব প্রদর্শন ও যথাযথ উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরাত বেকতানভকে বরখাস্ত করলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোকে কেন্দ্র করে ১ জানুয়ারি কাজাখস্তানে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সহিংস বিক্ষোভের মুখে দেশটির সরকার পদত্যাগ করে। দেশজুড়ে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা।
বিক্ষোভ মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট রুশ নেতৃত্বাধীন জোটের সেনাদের সহযোগিতা চাইতে বাধ্য হন। তাঁর অনুরোধে কাজাখস্তানে রুশ সেনারা যান।একই সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনো ধরনের সতর্কসংকেত ছাড়াই নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট।কাজাখস্তানে সহিংস বিক্ষোভে অন্তত ২২৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাজারো মানুষকে।সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র কাজাখস্তানে অভূতপূর্ব এই অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তাঁর ক্ষমতাকে সুসংহত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে মুরাতকে বরখাস্ত করার ঘটনাটি এ পদক্ষেপেরই অংশ।
কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট বলেন, জানুয়ারির ঘটনাবলির সময় কাজাখস্তানের সশস্ত্র বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারেনি। এ জন্য তিনি নেতৃত্বের ঘাটতি ও উদ্যোগের অভাবকে দায়ী করেন।সংকটের সময় তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরাত তাঁর ‘কমান্ডিং গুণাবলি’ প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট।
মুরাতকে বরখাস্ত করে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে রুসলান জাকসিলিকভকে। তিনি আগে উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান ছিলেন।কাসিম-জোমার্ট বলেন, দেশকে নেতৃত্বকে দেওয়ার পাশাপাশি বাহ্যিক-অভ্যন্তরীণ হুমকি সম্পর্কে সময়োপযোগী-নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রদানের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর পুঙ্খানুপুঙ্খ আধুনিকায়ন ও উন্নততর সামরিক বুদ্ধিমত্তা প্রয়োজন।
সহিংস বিক্ষোভ কাজাখস্তানের স্থিতিশীলতার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কাজাখস্তান তার তেল ও খনিশিল্পে শত শত বিলিয়ন ডলার পশ্চিমা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এ ভাবমূর্তিকেই ব্যবহার করে।