বোলিংয়ের পর ব্যাটিং ব্যর্থতায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও হারল বাংলাদেশ

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চোট নিয়ে সতর্কতা হিসেবে খেলেননি এ ম্যাচেও, সাকিব আল হাসান ব্যস্ত আইপিএলে। এ দিন বাংলাদেশ অবশ্য পেল মোস্তাফিজুর রহমানকে। তবে মোস্তাফিজও এদিন হয়ে থাকলেন বাংলাদেশের ব্যর্থতার প্রতীকই। বিশ্বকাপ শুরুর আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকদফা হোঁচট ঠিকই খেল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তবুও বোলিং পারফরম্যান্স পক্ষে এসেছিল, এবার এল না সেটিও। আবুধাবিতে গ্যারেথ ডেলানির ৫০ বলে ৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের তোলা ৩ উইকেটে ১৭৭ রানের জবাবে ২০ ওভারে ১৪৪ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ও নুরুল হাসান ছাড়া ব্যাটিংয়ে সেভাবে ছাপ রাখতে পারেননি কেউই।

জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড—এই তিনটি দেশের বিপক্ষে টানা তিনটি সিরিজ খেলেই টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামবে বাংলাদেশ। সিরিজ তিনটি জিতলেও বাংলাদেশের বড় দুশ্চিন্তা ছিল ব্যাটিং। মাঝখানে ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিংটা ক্লিক করলেও মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে আবার দুশ্চিন্তা হয়ে এসেছিল সেটা। আজও পুনরাবৃত্তি হলো সেটারই। বড় রান তাড়ায় বাংলাদেশ হোঁচট খেয়েছে শুরুতেই। ক্রেইগ ইয়াংয়ের করা প্রথম ওভারেই ক্যাচ দিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম, ৪ বলে ৩ রান করে। পরের ওভারে নাঈমকে অনুসরণ করেছেন লিটন দাসও, জশ লিটলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করেন ৩ বলে ১ রান। বেশিক্ষণ টেকেননি মুশফিকুর রহিমও। ইয়াংয়ের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৪ বল খেলে ৪ রান করেছেন তিনি।

১৫ রানেই ৩ উইকেট হারানোর চাপটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনে নামা সৌম্য সরকার ও পাঁচে আসা আফিফ হোসেন। তবে আফিফকে থামতে হয়েছে ১৬ বলে ১৭ রানে করেই, বেন হোয়াইটের বলে ক্যাচ দিয়ে। এরপর ৫ম উইকেটে নুরুল হাসানের সঙ্গে সৌম্যর জুটিতে ওঠে ৩৬ রান। ৩০ বলে ৩৭ রান করা সৌম্যকে ফিরতে হয় রান-আউট হয়ে। এরপর নুরুল একটু চেষ্টা করেছেন, তবে তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ ছিলেন না। শামীম হোসেন ৭ বল খেলে ১ রান করে বোল্ড হয়েছেন সিমি সিংয়ের বলে, মেহেদী হাসান মার্ক এডেয়ারের বলে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১২ বলে করতে পেরেছেন ৯ রান। ততক্ষণে লক্ষ্য থেকে বেশ ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৮১ রান। হোয়াইটের এক ওভারে টানা তিন চারসহ নুরুল তাঁর ইনিংসে মেরেছেন ৬টি চার। তবে এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের ২৪ বলে ৩৮ রানের ইনিংসটা ব্যবধানই কমাতে পেরেছে শুধু।

এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে বোলিংটাও খুব ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরীফুল ইসলাম ছিলেন বেশ খরুচে। ৪ ওভার করে বোলিং করে ৪০ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ, শরীফুল খরচ করেছেন ৪১ রান। খরুচে ছিলেন বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদও। একটি উইকেট পেলেও তিনি ৩ ওভারে দিয়েছেন ৩৩ রান। দিনে বাংলাদেশের সফলতম বোলার তাসকিন আহমেদ, ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। উইকেটের দিক দিয়ে দলের সফলতম বোলার তিনিই। তবে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী উইকেট না পেলেও ৩ ওভারে দিয়েছেন ১৫ রান।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আয়ারল্যান্ডের ওপেনিং জুটি ভেঙেছে চতুর্থ ওভারে। নাসুমের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ১৬ বলে ৫ চারে ২২ রান করা পল স্টার্লিং। এরপর অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নির সঙ্গে ডেলানির জুটিতে ওঠে ৩১ রান। ২২ বলে ২৫ রান করে তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে বলবার্নি ফিরলেও ডেলানিকে থামাতে পারেনি বাংলাদেশ। জর্জ ডকরেল ৯ বলে ৯ রান করেই ক্যাচ দেন তাসকিনের বলে। এরপর ডেলানিকে সঙ্গ দেন হ্যারি টেকটর। টেকটর অপরাজিত থাকেন ২৩ বলে ২৩ রানে, তবে ডেলানির সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৯৯ রান। শেষ পর্যন্ত ডেলানি তাঁর ইনিংসে মারেন ৩টি চারের সঙ্গে ৮টি ছয়। আবুধাবির এ প্রস্তুতি ম্যাচের পর আজই ওমান ফিরে যাবে বাংলাদেশ। আগামী ১৭ অক্টোবর মাসকাটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে।

Leave a Comment