এটিএম কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা চুরি করে বছর দুয়েক আগে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবারকান। এবার ঢাকার একটি ব্যাংকের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে তিন দিনে ৮৪ বার টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হাকান জানবারকান ১৯ দিন আগে ব্যবসায়ী ভিসায় ঢাকায় আসেন। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হাকানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বাংলাদেশি সহযোগী মফিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে ১৭টি ক্লোন করা এটিএম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হাকান জানবারকান (৫৫) এটিএম কার্ড জালিয়াতির আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য। এই চক্রে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত। হাকান জানবারকান ও তাঁর সহযোগীরা ক্লোন করা এটিএম কার্ড ব্যবহার করে ভারতের বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন। ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টন বাজার পুলিশ স্টেশনে এটিএম জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার হন হাকান জানবারকান। ওই মামলায় তুরস্কের আরেক নাগরিক এবং দুই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। প্রায় ২০ মাস কারাগারে ছিলেন হাকান জানবারকান।
গ্রেপ্তার অবস্থায় অসুস্থতার কারণে কারা হেফাজতে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন হাকান জানবারকান। সেখানে কারারক্ষীর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে কৌশলে কারাগার থেকে পালিয়ে যান তিনি। পরে দুই লাখ রুপির বিনিময়ে ভারতীয় এক নাগরিকের সহায়তায় তিনি সিকিম হয়ে নেপালে পৌঁছান। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে তুরস্কে ফিরে যান। পরে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে গত ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন তিনি।
হাকান জানবারকান ও তাঁর বাংলাদেশি সহযোগী ২ থেকে ৪ জানুয়ারির মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংকের (ইবিএল) বিভিন্ন বুথে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জার্মানি, তুরস্ক, সৌদি আরব, স্পেন, নরওয়েসহ ৪০টি দেশের নাগরিকদের এটিএম কার্ড ক্লোন করে সেগুলো দিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ব্যাংকের অ্যান্টি স্ক্যামিং প্রযুক্তির অ্যালার্ম সিস্টেমে ঘটনাটি ধরা পড়ে। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ডিএমপিকে জানায়। সিটিটিসি প্রযুক্তির সহায়তায় হাকান জানবারকানকে শনাক্ত করে।