বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই বিয়েটা হয়েছিল। কলকাতার অবাঙালি ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে মঙ্গলসূত্রে বাঁধা পড়েছিলেন মডেল, অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। তারিখটা ২০১৯ সালের ১৯ জুন। সুদূর তুরস্কে হয়েছিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের হাতে গোনা কিছু সদস্য ও বন্ধুবান্ধব। ফিরে এসে কলকাতায় একটা বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানও করেছিলেন নুসরাত-নিখিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ সেখানে উপস্থিত ছিলেন টালিউডের একঝাঁক তারকা এবং কলকাতার বিশিষ্টজনেরা।
প্রায় দুই বছর পর এখন এই অভিনেত্রী ও সাংসদ দাবি করছেন, বিয়ে নয়, লিভ টুগেদার করছিলেন তাঁরা। কাজেই বিচ্ছেদের প্রশ্ন আসছে না।
নুসরাতের বিয়ে কিংবা লিভ টুগেদারের প্রসঙ্গ কলকাতার বিনোদন দুনিয়ায় এখন আলোচিত খবর। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছিল, সম্পর্কে ফাটল ধরেছে নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈনর।
এখন শুধু নামেই স্বামী-স্ত্রী। একে অপরের সঙ্গে তাঁরা আর থাকেন না। তাঁদের নাকি যোগাযোগ বন্ধ প্রায় ছয় মাস। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে এমনও খবর দেখা গেছে, শিগগিরই দুজনের আবার দেখা হতে যাচ্ছে। তবে সেই দেখা আর খুব সুখের হবে না। কারণ, দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদের পরে এবার কলকাতা শহরের আলিপুর আদালতে মুখোমুখি হবেন তাঁরা।
এসব নিয়ে নুসরাত এত দিন কোনো কথা বলেননি। গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লিখেছেন, ‘যে যাই বলুক, নীরব থাকতে শিখে গেছি।’
সেই নীরবতাও শেষ পর্যন্ত ভাঙলেন। এক লিখিত বিবৃতিতে নিখিলের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী। শুধু মুখই খোলেননি, রীতিমতো নুসরাতের বিস্ফোরক দাবি, তাঁদের বিয়েই হয়নি, বরং লিভ টুগেদার করতেন তাঁরা।
নায়িকা ও মডেল ছাড়াও নুসরাতের আরেক পরিচয়, তিনি লোকসভার একজন সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর চব্বিশ পরগনার বশিরহাট কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে জয়লাভ করেন। সেবার নির্বাচনে জয়ের পরে লোকসভায় প্রথমবার তাঁকে সিঁদুর পরতে দেখা যায়। সেই সময় নিজেকে নিখিলের স্ত্রী হিসেবেই দাবি করেছিলেন তিনি।
জানা গেছে, লকডাউনের মাঝামাঝি সময়ে নিখিলের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান নুসরাত। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নিখিলকে আনফলো ও আনফ্রেন্ড করেন। একজন আরেকজনের সব ছবিও ডিলিট করে দেন।
স্ত্রীকে আনফলো করার পরে তাঁর বেশির ভাগ ছবি মুছে দিয়েছিলেন নিখিল। ভালোবাসা দিবসে স্ত্রীকে নিয়ে সর্বশেষ পোস্ট দিয়েছিলেন। নুসরাতের নাম না নিয়েই লিখেছিলেন, ‘তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে। সেই প্রতিজ্ঞা রাখতে পারলে না। কেউ একজন গিয়ে অন্য মানুষে পরিণত হয়েছে। তবে আমি এখনো সেই আগের মতোই আছি।’
২০১১ সালে রাজ চক্রবর্তীর ‘শত্রু’ দিয়ে প্রথম চলচ্চিত্রে পা রাখেন নুসরাত জাহান। এরপর একে একে করেন ২২টি ছবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘খোকা-৪২০’, ‘খিলাড়ি’, ‘অ্যাকশন’, ‘যোদ্ধা’, ‘সন্ধে নামার আগে’, ‘জামাই-৪২০’, ‘হর হর ব্যোমকেশ’, ‘পাওয়ার’, ‘কেলোর কীর্তি’, ‘লাভ এক্সপ্রেস’, ‘জুলফিকার’, ‘হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’, ‘ওয়ান’, ‘আমি যে কী তোমার’, ‘বলো দুগ্গা মাঈ কী’, ‘উমা’, ‘ক্রিসক্রস’, ‘নেকাব’, ‘অসুর’, ‘এসওএস কলকাতা’ ইত্যাদি। ২০২১ সালের ছবি ‘ডিকশনারি’তে সর্বশেষ তাঁকে দেখা গেছে।