প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়: পুলিশ পরিদর্শকের স্ত্রী গ্রেফতার

পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আলী।গ্রেফতারকৃত কানিজ ফাতিমা তানিশা (৩৬) পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পরিদর্শক হাবিবুর রহমানের স্ত্রী বলে জানা গেছে।

তানিশার বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা ও হাবিবুর রহমানের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তবে তারা নগরীর বিকন মোড়ের ছয়তলা একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ভাড়ায় থাকতেন।

পুলিশ জানায়, রোববার (২ ডিসেম্বর) রাতে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও টর্চারসেলে নির্যাতনের অভিযোগে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকার বাড়ি থেকে শাহারুখ করিম অনিক (৩৪) ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারকে (২৪) গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এ ঘটনায় থানায় কোতয়ালী থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় মঙ্গলবার আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে কানিজ ফাতিমা তানিশার নাম উঠে আসে। পরে বিকেলেই নগরীর ঠিকাদার পাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।এ ঘটনায় রংপুর এক্সপ্রেসের ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

এর আগে সোমবার (০৩ জানুয়ারি) বিকালে রংপুর র‍্যাব-১৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ জানান, বেশ কিছুদিন থেকে প্রথমে নগরীর বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করতেন শাহারুখ করিম অনিক (৩৪) ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারসহ (২৪) অজ্ঞাত চার-পাঁচজন।পরে তাদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কৌশলে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যেতেন।

এরপর সেখানে অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো। এছাড়াও হত্যার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্রটি।অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি আমলে নিয়ে সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১৩।

একপর্যায়ে গত রোববার রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।অভিযান চলাকালীন সময়ে তাদের নিজ বাসার ৬ষ্ঠ তলায় একটি টর্চার সেলের সন্ধান পায় র‌্যাব। ওই সেলে টার্গেট করা ব্যক্তিদের জিম্মি করে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো। সেল থেকে দুটি চাপাতি, ইলেকট্রিক শর্কের তার, মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি, হাতুড়ি, ছুরি, স্ট্যাম্প, ভিডিও ধারনের দুইটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। তাদের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার জন্য র‌্যাবের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Comment