এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার শতভাগ প্রশ্নপত্র ফাঁসের লোভ দেখিয়ে ৪ বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। এ কাজে চক্রের সদস্যরা ফেসবুক, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রুপ খুলে বিজ্ঞাপনের আদলে রীতিমতো প্রচারণা চালাত।
এদিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এসব প্রচারণার ফাঁদে পা দিলে বিভিন্ন গোপন গ্রুপে যুক্ত করা হতো তাঁদের। গ্রুপের সদস্য হতে আদায় করা হতো ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর প্রতি সেট প্রশ্নের জন্য ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা নিতেন এ চক্রের সদস্যরা।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগে এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। রোববার ভোরে রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুরের পুবাইল ও নেত্রকোনা জেলায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কারিমুল্লাহ, আল রাফি ওরফে টুটুল ও আবদুল্লাহ আল মারুফ।
ওদিকে চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার পর অন্য সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। সেটিও নজরে এসেছে গোয়েন্দাদের। সেখানে তাঁরা লিখেছেন, ‘আমাদের লোকজন পুলিশের হাতে ধরা খেয়েছে। আমরা পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্ন সংগ্রহের চেষ্টা করছি। প্রশ্ন দিতে না পারলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’
রবিবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তত ছয়টি গ্রুপ খুলে প্রতারণা করে আসছিল প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রটি। এসব গ্রুপে ৪ হাজার ৭০০ সদস্য রয়েছেন, যাঁদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
তবে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের কাছ থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রশ্ন সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করলে তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আল রাফি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র, কারিমুল্লাহ গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর মারুফ রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল, ছয়টি সিম কার্ড ও ১২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।