প্রতারণার শিকার বাংলাদেশের দূতাবাস

প্রতারণার শিকার বাংলাদেশের দূতাবাস

শুভঙ্কর বসু, কলকাতা: প্রতারণার শিকার বাংলাদেশের দূতাবাস। শ্রেয়া ঘোষালের নামে ভুয়ো ই-মেল আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে লোপাট কয়েক লক্ষ টাকা। জালিয়াতির খপ্পরে পড়েছেন শহরের এক সঙ্গীতশিল্পীও। অভিযোগের তির মুম্বইয়ের একটি সংস্থার দিকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

 

ঘটনার সূত্রপাত গত জানুয়ারিতে। বাংলাদেশের এক অনুষ্ঠানে শ্রেয়া ঘোষালকে দিয়ে গান গাওয়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয় ‘হিটমেকার্স প্রোডাকশন্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা। অভিযোগ, এই ফঁাদ পেতেই দূতাবাসের থেকে ৮ লক্ষ টাকা অগ্রিম নেয় তারা। কৃষ্ণ শর্মা নামে ওই সংস্থার ডিরেক্টরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়। জনপ্রিয় শিল্পীর নামে তৈরি ই-মেল আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে প্রাপ্তিস্বীকার করে মেসেজও আসে। জানানো হয়, অনুষ্ঠানের জন্য গায়িকা নির্ধারিত দিনের আগেই পৌঁছে যাবেন। তাঁর থাকার জন্য পাঁচতারা হোটেলে দু’টি ঘরও বুক করে রাখতে বলা হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে গোটা বিষয়টি নিশ্চিত করতে দূতাবাসের কর্তারা বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাননি। তখনই বোঝা যায়, পুরোটাই ভুয়ো। ওই ই-মেল আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরের কোনও অস্তিত্বই নেই।

 

জানা গিয়েছে, চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক সঙ্গীতশিল্পী মারফত ওই কোম্পানির সঙ্গে দূতাবাসের যোগাযোগ হয়েছিল। তিনি বাংলার সঙ্গীত ও সিনেমা জগতে পরিচিত মুখ। ২০০৮ সালে একটি রিয়েলিটি শো থেকে তাঁর উত্থান। এরপর একাধিক সিনেমা, সিরিয়ালে গানের পাশাপাশি অভিনয়ও করেছেন। দূতাবাসের হয়ে সেদেশে একধিক গানের অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন তিনি। প্রতারিত হওয়ার পর দূতাবাসের পক্ষ থেকে কলকাতার প্রতারণা দমন শাখায় তাঁর নামে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। তারই ভিত্তিতে চিরন্তনবাবুকে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

 

এদিকে চিরন্তনবাবু নিজেও ওই কোম্পানির প্রতারণার শিকার বলে অভিযোগ। প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী ওরফে প্রিন্স নামে হওড়ার এক যুবকের মাধ্যমে অভিযুক্ত সংস্থার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। সে নিজেকে হিটমেকার্সের এজেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছিল। একটি গানের অ্যালবাম তৈরি জন্য প্রিন্স মারফত কৃষ্ণ শর্মা নামে ওই অভিযুক্তকে আগাম ২০ লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন চিরন্তনবাবু। বলা হয়েছিল, রনবীর সিং, ভিকি কৌশলের মতো তারকাদের ওই অ্যালবামে দেখা যাবে। কিন্তু সেই কাজ শুরুর আগেই দূতাবাসের সঙ্গে জালিয়াতির ঘটনা সামনে আসে। প্রিন্স আপাতত বেপাত্তা। চিরন্তন যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় ভিন রাজ্যের প্রতারণা চক্র জড়িয়ে থাকায় তদন্তে বেশিদূর এগতে পারেনি পুলিস। বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলাটি উঠলে প্রতারণার গোটা বৃত্তান্ত তুলে ধরেন চিরন্তনবাবুর আইনজীবী সমিত ভঞ্জ ও অরিন্দম সেন। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বিচারপতি মান্থা কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগকে দু’টি প্রতারণার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ, দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রেস সচিব রঞ্জন সেন বলেন, ‘ঈদের ছুটির পর এই ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য জানানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সোর্চ: বর্তমান পত্রিকা

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *