নিরপেক্ষ অবস্থান ইস্যুতে আলোচনায় প্রস্তুত ইউক্রেন – জেলেনস্কি

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ: ভলোদোমির জেলেনস্কি বলেছেন তার দেশ নিরপেক্ষ অবস্থান ইস্যুতে আলোচনার জন্য প্রস্তুত

ভলোদোমির জেলেনস্কি বলেছেন তার আগে কোন তৃতীয় পক্ষের নিশ্চয়তা থাকতে হবে

নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে একটি শান্তি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি। তবে তিনি বলেছেন তার আগে কোন তৃতীয় পক্ষের নিশ্চয়তা থাকতে হবে এবং একটি গণভোট হতে হবে।

রাশিয়ান সাংবাদিকদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এর পরপরই তার সাক্ষাৎকার প্রকাশ না করার ব্যাপারে মস্কো থেকে সতর্কবার্তা এসেছে।

এই সপ্তাহেই তুরস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পরবর্তী মুখোমুখি আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

সেখানে ইউক্রেনের স্বাধীনতা প্রাধান্য পাবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

জোর করে ইউক্রেনদের রাশিয়া নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
ওদিকে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে যে মারিউপল থেকে জোর করে হাজার হাজার বেসামরিক ইউক্রেনিয়ান নাগরিকদের সীমান্ত পার করে রাশিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে মারিউপলের পূর্বে রাশিয়ার সীমান্তের ভেতরে একটি অস্থায়ী শিবির। যেখানে পাঁচ হাজারের মতো ইউক্রেনিয়ানকে রাখা হয়েছে।

রাশিয়ান হামলায় বিধ্বস্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিউপল।

ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইরানা ভেরেশুক বলেছেন, ৪০ হাজারের মতো ইউক্রেনিয়ানকে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জোর করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রাশিয়াতে রয়েছেন মারিউপলের এরকম একজন শরণার্থী জানিয়েছেন, “আমাদের সবাইকে জোর করে নিয়ে আসা হয়েছে।”

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে বর্ণনা করতে গিয়ে “সংশোধনী শিবির” শব্দটি ব্যাবহার করেছেন। যা চেচনিয়া যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়।

এই যুদ্ধে হাজার হাজার চেচেন নাগরিকদের অস্থায়ী শিবিরে আটকে রেখে নৃশংস কায়দায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যাদের অনেকেই আর ফিরে আসেননি।

পাঁচ হাজারের মতো ইউক্রেনিয়ানকে একটি অস্থায়ী শিবিরে রাখা হয়েছে।

যুদ্ধকালীন সময়ে বেসামরিক নাগরিক এভাবে জোর করে নিয়ে স্থানান্তর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করা হয়।

মারিউপলের কর্তৃপক্ষ বলছে, এক লাখ চল্লিশ হাজারের মত বাসিন্দা অবরুদ্ধ শহরটি থেকে পালাতে সক্ষম হলেও আরও এক লাখ সত্তর হাজারের মতো মানুষ সেখানে আটকে পড়েছেন।

তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে রাশিয়ান বোমা হামলা শহরটিকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। আতঙ্কগ্রস্ত অধিবাসীরা মাটির নিচে আশ্রয় নিয়েছে। ব্যপক খাবার, পানি ও ঔষধের সংকটের মুখে পড়েছেন তারা।

মারিউপল থেকে কত লোককে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অথবা সেখানে হতাহতের সংখ্যা কত সেটি কোন নিরপেক্ষ সূত্র থেকে বিবিসি যাচাই করতে পারেনি।

‘মানবিক করিডোর’ নিরাপদ নয়
নাগরিকদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য যে ‘হিউম্যানিট্যারিয়ান করিডোর’ চালু করতে দুপক্ষই সম্মত হয়েছে সেটি ব্যাবহার করে গুটিকতক মানুষ নিরাপদ স্থানে যেতে পেরেছেন।

বেসামরিক নাগরিকদের জন্য নিরাপদ হওয়ার কথা এরকম ‘মানবিক করিডোর’ লক্ষ্য করে রাশিয়ার বোমা হামলা অব্যাহত রয়েছে বলে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে।

এরকম খবরও আসছে যে, মারিউপলের ক্ষুধার্ত, অসুস্থ বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল, এমনকি রাশিয়ার সীমান্তের ভেতরে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না।

তিন সপ্তাহ ধরে রাশিয়ান বোমা হামলা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে মারিউপল।

এরপর তারা চার কিলোমিটার হেঁটে একটি রাশিয়ান চেক পয়েন্টে পৌঁছান। সেখান থেকে তাদের রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন দোনেৎস্ক নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, “সেখানে পৌঁছানোর পর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি সেখানে থাকবেন নাকি রাশিয়ার ভেতরে যাবেন।”

“কিছু বয়স্ক লোকদের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে তারা জানেনও না যে কোথায় তারা যাচ্ছেন এবং কেন। তাদের ধারণা তারা রাশিয়ার রস্তভে কয়েক মাস থাকতে পারবেন এবং তারপর হয়ত আবার মারিউপলে ফিরে আসবেন।”

কিন্তু তাদের রস্তভের উত্তরে সামারা নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে দুই সপ্তাহের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

রাশিয়া-ইউক্রেনের শত শত বছরের পুরনো ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তাদের দুই পাশেই আত্মীয় স্বজন রয়েছে। কিন্তু মারিউপলের এই মানুষগুলো স্বেচ্ছায় ওদিকে গেছেন কিনা সেটি পরিষ্কার নয়।

রাশিয়ার খবরের কাগজ রসিস্কায়া গ্যাজেটা ২১ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে লেখা হয়েছে যে শরণার্থী বহনকারী দীর্ঘ গাড়িবহর মারিউপলের পূর্বের একটি গ্রাম বেজিমেন পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় নিয়েছে।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *