নাগা মধ্যস্থতাকারীকে দিল্লিতে সরালো

নাগা মধ্যস্থতাকারীকে দিল্লিতে সরালোনাগা মধ্যস্থতাকারীকে দিল্লিতে সরালো

উত্তর-পূর্ব ভারতের মিয়ানমার-লাগোয়া নাগাল্যান্ড রাজ্যে নতুন করে অস্থিরতা শুরু হওয়ার মুখেই রাজ্যপাল রবীন্দ্রনারায়ন রবিকে সরিয়ে দিল কেন্দ্র সরকার। একসময়ে নাগাল্যান্ডের শক্তিশালী জঙ্গি সংগঠন ও বর্তমানে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ড আইজ্যাক-মুইভা (এনএসসিএন-আইএম) ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী রবিকে একটি রুটিন নির্দেশ মারফত বদলি করে দেওয়া হলো। তিনি এখন তামিলনাড়ুতে রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করবেন।

সার্বভৌমত্ব ও বৃহত্তর নাগাল্যান্ডের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে উত্তর-পূর্ব ভারতে যে আন্দোলন, নাগাল্যান্ড সেই আন্দোলনের কেন্দ্রে। সেই সমস্যার সমাধানে রবি যে ব্যর্থ, এমন বদলিই এর প্রমাণ।

ভারতে ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর উত্তর-পূর্বে বড় সাফল্য বলে এনএসসিএন-আইএমের সঙ্গে অন্তর্বর্তী শান্তি চুক্তিকে তুলে ধরা হয়েছিল। ‘ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট’ বলে এই চুক্তির রূপকার ছিলেন রবীন্দ্রনারায়ন রবি। কেন্দ্র সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর সাবেক মহাপরিচালক রবিকে ২০১৯ সালে নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল নিযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ‘ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট’ করার ছয় বছর পরেও চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারেননি কেন্দ্র ও রবি। এই চুক্তির বিষয়বস্তুও গোপন রাখা হয়েছিল। তবে জানা যায় এনএসসিএন-আইএম তাদের পুরোনো দাবি থেকে পুরোপুরি সরে আসেনি। তাদের দাবি ছিল অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও মণিপুরের কিছু অংশ বৃহত্তর নাগাল্যান্ড রাজ্যের সঙ্গে জুড়তে হবে। দাবি মানা হলে সব রাজ্য সীমানা পরিবর্তনের বিরোধিতা করত। বস্তুত, সীমানা নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে রাজ্যে রাজ্যে এখন ভালোরকম অশান্তি চলছে।

এনএসসিএন-আইএমের এক নেতা শনিবার বলেন, ‘রবি মূল চুক্তির বয়ান এককভাবে পাল্টে ছিলেন। এ ছাড়া তিনি অন্যান্য নাগা গোষ্ঠীকে নিয়ে একটি আলাদা মঞ্চ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল এনএসসিএন-আইএমবিরোধী জোট গঠন করা। তাঁর গোপন কার্যকলাপের কারণে আমরা গত বছর অন্তর্বর্তী চুক্তির মূল খসড়া প্রকাশ করেছিলাম। কেন্দ্র সরকারকেও বলেছিলাম তাঁকে সরাতে।’

গত কয়েক মাস যাবৎ ছোটখাটো আন্দোলনের মাধ্যমে এনএসসিএন-আইএম ইঙ্গিত দেয়, তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে। এই সংগঠনের কাছে কত অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে তা নিয়ে সরকার নিশ্চিত নয়। তাই আন্দোলন কঠোর হওয়ার আগেই সরানো হলো রবিকে। এর সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর-পূর্ব ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে প্রচারিত নাগা শান্তি-আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়ল। রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বলা হয়েছে, আসামের রাজ্যপাল জগদীপ মুখি এখন নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করবেন।

মিয়ানমারের সংঘর্ষ চিন্তা বাড়াচ্ছে ভারতের

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে এখনো পর্যন্ত পশ্চিম মিয়ানমারের চিন প্রদেশ থেকে বেশ কয়েক শ মানুষ উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরামে প্রবেশ করেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। এরা সশস্ত্র বলেই মনে করা হচ্ছে। মিজোরাম-লাগোয়া চিন প্রদেশে চিন ন্যাশনাল আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে শুক্রবার ভোর থেকে ব্যাপক লড়াই শুরু হয়েছে। আঞ্চলিক স্তরে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করা চীন ন্যাশনাল আর্মির ওপরে বোমারু বিমান নিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হামলা চালালে সাধারণ মানুষ এবং ন্যাশনাল আর্মির গেরিলারা মিজোরামে ঢোকে।

অনুপ্রবেশের আশঙ্কাতে ভারত সরকার আগেই মিজোরাম-চিন সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা প্রতিবাদ করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, পশ্চিম মিজোরামের কিছু অংশের মানুষ ও চিনের বাসিন্দারা একই জাতিগোষ্ঠীর হওয়ার কারণে সীমান্ত বন্ধ করা যাবে না। সীমান্ত এখন খোলা।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *