দুটি মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার

দুটি মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে দুটি মাথার খুলি, হাড়ের অংশবিশেষ ও মাথার চুল উদ্ধার করেছে । এগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য। কারখানার চারতলায় তল্লাশি চালিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি । তবে তল্লাশিকালে সিআইডির সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং রূপগঞ্জ থানার পুলিশ উপস্থিত ছিল । এই অভিযান চালানো হয় তিন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছে মর্মে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে । তবে হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

তবে পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী নিখোঁজ শ্রমিকেরা হলেন ভোলার চর ফ্যাশনের ওমরপুর এলাকার সালাউদ্দিনের ছেলে মো. মহিউদ্দিন (২২), দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার উত্তর রসুলপুর গ্রামের ফয়জুল্লাহর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২০) ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবোর নান্টু মিয়ার মেয়ে লাবণি আক্তার (১৫)। সিআইডি নারায়ণগঞ্জ অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ রংপুর ডেইলীকে জানান, ওই কারখানার তিন শ্রমিক নিখোঁজ থাকার অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুড়ে যাওয়া কারখানার ভবনে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে চারতলার দক্ষিণ ও পূর্ব কোণের তিনটি জায়গা থেকে হাড়ের অংশবিশেষ, দুটি মাথার খুলি ও এক নারীর মাথার চুল উদ্ধার করা হয়।

হারুন অর রশীদ আরও জানান, মর্গে থাকা ৪৮ লাশের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষায় ফলাফল অনুযায়ী ৪৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনজনের লাশ মর্গে রয়েছে। সেগুলো ডিএনএ শনাক্তের জন্য পরিবারের কাছ থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় মিল পাওয়া গেলে সেগুলো হস্তান্তর করা হবে। তল্লাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন রংপুর ডেইলীকে জানান, নিখোঁজ ওই তিন শ্রমিক ওই কারখানার কর্মরত ছিলেন। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসকে সঙ্গে নিয়ে পুরো কারখানার প্রতিটি ফ্লোরে তল্লাশি চালানো হয়। কারখানাটি আগুনে পোড়া বর্জ্যে ভরা ছিল। সেগুলো সরিয়ে সেখানে তল্লাশি চালিয়ে মাথার খুলি, হাড়ের অংশ, চুল উদ্ধার করে সেগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মাথার খুলি ও হাড় উদ্ধার হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ অফিসের (সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জ) উপসহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম রংপুর ডেইলীকে বলেন, ওই সময় ৪৯ জনের নিখোঁজ হওয়ার তালিকা করা হয়েছিল। তালিকা অনুযায়ী লাশের সংখ্যা মিলে যাওয়ায় উদ্ধারকাজ সমাপ্ত করা হয়েছিল। তিনি জানান, ওই ভবনে আবার তল্লাশি অভিযান চালানো হবে। যখনই যা পাওয়া যাবে, তা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

গত ৮ জুলাই হাসেম ফুডসে আগুনে পুড়ে ৪৮ জনসহ মোট ৫১ (লাফিয়ে পড়ে ৩ জন) জনের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৪৮ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে কারখানার মালিক আবুল হাসেম, তাঁর চার ছেলেসহ আটজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় তদন্ত জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আলাদা আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষা শেষে নিহত ব্যক্তিদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে ৪৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনজনের লাশ ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত হওয়ার পর হস্তান্তর করবে সিআইডি।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *