ঢলের পানিতে হবিগঞ্জের হাওরের আধা পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে

ঢলের পানিতে হবিগঞ্জের হাওরের আধা পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছেঢলের পানিতে হবিগঞ্জের হাওরের আধা পাকা ধান তলিয়ে যাচ্ছে

উজান থেকে আসা ঢলে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চলের বোরো ধান। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি হাওরের ৫০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। হাওরে এখন চলছে ফসল তোলার প্রাণপণ চেষ্টা। অনেক কৃষক আতঙ্কে আধা পাকা ধানই কেটে তুলছেন। হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে সোমবার এ দৃশ্য দেখা যায়।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উজানে বৃষ্টি কমে গেলেও যে পরিমাণ ঢলের পানি এসেছে, তা এখন নামছে। ফলে হবিগঞ্জের কালনী, মেঘনাসহ নদ-নদীর পানি বাড়ছে। নতুন করে উজানে বৃষ্টি না হলে দুই–তিন দিনের মধ্যে ঢলের পানি নেমে যাবে। তবে যেসব হাওরে পানি ঢুকেছে, তা নামার সম্ভাবনা কম।

কৃষি অধিদপ্তরের হবিগঞ্জ জেলার উপপরিচালক তমিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা স্থানীয় কৃষকদের নির্দেশ দিয়েছি ৮০ শতাংশ ধান পাকলেই যেন কেটে ফেলা হয়। তাহলে ধানের গুণাগুণের কোনো ক্ষতি হবে না। আশা করি বৃষ্টি না হলে বা নতুন করে ঢল নামার আগেই হাওরের বেশির ভাগ ধান কেটে ফেলা যাবে।’

লাখাই উপজেলা কৃষি দপ্তর জানায়, এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১১ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু লাখাই ইউনিয়নে হয়েছে ৩ হাজার হেক্টর। এসব জমির ধান অর্ধেক এখনো পাকেনি। গত দুই দিনে ভাটির পানি কালনী ও মেঘনা নদী হয়ে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার হাওরগুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার লাখাইসদর, বামৈ ও বুল্লা ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ হেক্টরের ধান তলিয়ে গেছে। টাকার অঙ্কে এ পর্যন্ত প্রায় কোটি টাকার ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় নতুন করে পানি প্রবেশ করায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে।

সোমবার লাখাই উপজেলার লাখাই সদর ইউনিয়নের স্বজন গ্রাম, শিবপুর, জরিপপুর সুজনপুর, সন্তোষপুর ও কৃষ্ণপুর এবং বামৈ ইউনিয়নের নয়াগাঁও, বুল্লা ইউনিয়নের মাদনা ও ফরিদপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন হাওরে নতুন করে পানি প্রবেশ করেছে। তবে সেখানকার জমির ধান কাটা সম্ভব হয়নি। এসব জমির ধানের শিষ পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকেরা জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া অধিকাংশ ধানই আধা পাকা।
স্বজন গ্রামের কৃষক আশিষ দাশগুপ্ত বলেন, হাওরের অর্ধেক ধান এখনো কাঁচা। কৃষকেরা প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির আধা পাকা ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। বাকি অধিকাংশ জমির ধান তলিয়ে গেছে।

লাখাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিমত ভট্টাচার্য বলেন, লাখাই উপজেলার হাওরের সঙ্গে কালনী ও মেঘনা নদী সরাসরি যুক্ত হওয়ায় পানি বেশি ঢুকছে। এসব পানি সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার উজান থেকে নেমে আসছে। উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ হেক্টর বোরো জমির ধান কাটা সম্ভব হলেও বাকি ৫০০ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরিভাবে তলিয়ে গেছে। আগামী দুই দিন এভাবে পানি বাড়লে অন্তত আরও ৫০০ হেক্টর জমি তলিয়ে যাবে। এ বিষয়ে তাঁরা তালিকা করছেন।

লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, লাখাই ইউনিয়নের বোরো জমিগুলো তুলনামূলক নিচু। যে কারণে নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধানখেত পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় দ্রুত ধান কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *