ঠাকুরগাঁওয়ে পশুর হাট বন্ধ, দুশ্চিন্তায় পশু খামারী

করোনা প্রতিরোধে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা ও উপজেলার পশুর হাটগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় পশু খামারীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে চলতি বছর কোরবানীর পশুর হাট বন্ধ থাকবে এমনটাই বলছে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে পশু কোরবানীর বাজারে বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে বলে আশংকা করছেন খামারীরা।

সীমান্তবর্তী এ জেলায় জুন মাসে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৭ তারিখে পশুর হাট বন্ধ ঘোষণাসহ দোকানপাট খোলা রাখা সময় নির্ধারণ করে ৭ দিনের বিধি নিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। পরে সংক্রমণ না কমলে ২৪ জুন থেকে জেলায় জরুরী সেবা ব্যতিত সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত জেলার পাচটি উপজেলায় জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাহির হতে পারবেনা, নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ও ঔষধের দোকান ছাড়া সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

এনজিওসহ সকল ঋণের কিস্তি আদায় কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।বড়বাড়ী ইউনিয়নের ধনিবস্তী গ্রামের রাজু হোসেন জানান, কোরবানীর বাজারে বিক্রির জন্য দেড় বছর ধরে গরু লালন-পালন করছেন। গত শুক্রবার স্থানীয় লাহিড়ী তিনি গরু বিক্রি করতে চেয়েছিলেন।

হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে গরুটিকে বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। দোগাছী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোকনুজ্জামান সাহেদীর পোষা ৯০০ কেজি ওজনের শাহীওয়াল জাতের ষাঁড়ের মূল্য রেখেছেন ৭ লাখ টাকা।

তবে পশুর হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ষাড়টি বিক্রি করে ন্যার্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শংঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।সাহেদী জানান, আমরা চাই স্থানীয় প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানীর পশু বিক্রির জন্য হাটগুলো খুলে দিবেন।

বাজারে পশু বিক্রি করতে না পারলে আমার মত অনেকেই লোকসানে পড়বে। চাড়োল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিলিপ কুমার চ্যাটার্জী জানান, উপজেলার একমাত্র ঐতিহ্যবাহী লাহিড়ী পশুর হাটে প্রতি বছর শেষ হাটে দেড় হাজার পশু কেনা বেচা হয়।

জেলার ৫টি উপজেলাসহ দিনাজপুর, পঞ্চগড় থেকে গরু কেনার লোকজন আসেন। আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে স্বাস্থবিধি মেনে পশু বিক্রির ব্যবস্থার।

লাহিড়ী পশুর হাটের ইজারাদার আব্দুর রশিদ বলেন, প্রতি বছর কোরবানীর বাজারেই ২০ লাখ টাকার বেশি ইজারা আদায় হয়। এ বছর বাজার বন্ধ হলে শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, আমরাও অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবো।উপজেলা

প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলায় গরু, মহিষ ও ছাগলসহ ২৪ হাজার ৩৭৭টি গবাদি পশু রয়েছে। পারিবারিক পর্যায়ে পশু খামারী রয়েছে ১ হাজার ৪শত ৮৭ জন।উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম জানান, অনলাইনে পশু বিক্রির জন্য ফেসবুকে আমাদের পেইজ রয়েছে।

খামারিরা চাইলে আমাদের সহযোগিতা নিয়ে সেখানেও পশু বিক্রি করতে পারে। তাছাড়া আমরা আশা করছি খামারিদের কথা চিন্তা করেও কোরবানীর পশুর হাটগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হবে।

Leave a Comment