ছাত্রজীবনে পড়াশুনার পাশাপাশি অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নিলে ছাত্রজীবন হয়ে উঠে মনে রাখার মতো। ছাত্রজীবন থেকেই অর্থ উপার্জন করলে ছাত্রজীবনেই স্বনির্ভরশীল হবার একটা সুযোগ পাওয়া যায়। আবার অনেক ধরনের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজে নিজেকে নিয়োজিত রাখলে শুধুমাত্র পড়াশুনার একঘেয়েমি থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। যার ফলে শরীর ও মন থাকে সবসময় ফুরফুরে।
ছাত্রজীবন হচ্ছে নিজেকে তৈরি করার মোক্ষম সময়। যে নিজেকে যতো বেশি স্কিলড করে তুলতে পারবে, সে ততোবেশি এগিয়ে যাবে। ছাত্রজীবন থেকে অর্থ উপার্জন করা শিখা উচিত। তাহলে পরবর্তী জীবনে অর্থের মূল্য বুঝতে পারবে সবাই । জেনে নেয়া যাক ছাত্রজীবনেই অর্থ উপার্জনের কিছু মাধ্যম।
টিউশনি- শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য আয়ের উৎস টিউশন। মোটামুটি বেসিক জানা থাকলে এবং বোঝানোর সক্ষমতা থাকলে ভালো টিউশন পাওয়া যায়।সবচেয়ে বড় উপকারিতা হচ্ছে, সময়টি ভালো উদ্দেশ্যে ব্যয় হয়, বোঝানোর ক্ষমতা বাড়ে, কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে ধারনা পোক্ত হয় এবং অভিজ্ঞতা বাড়ে। ভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা অর্থ উপার্জন করেন, তাদের মধ্যে শতকরা ৮০ শতাংশই টিউশনির উপর নির্ভরশীল।
ডিজাইনিং- ডিজাইনিং স্কিলের ডিমান্ড বর্তমান সময়ে অনেক বেশি। গ্রাফিং ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ইলাস্ট্রেটিং এই স্কিলগুলো ছাত্রাবস্থায় সহজেই অর্জিত হয়। ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার ত ছাত্রদের লাগেই। তাই অযথা সময় নষ্ট না করে ডিজাইনিং কাজ শিখে তা থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে সহজেই ঘরে বসেই পড়াশুনার পাশাপাশি আয় করা সম্ভব।
এডিটিং স্কিল- ভিডিও এডিটিং” এর ধারণাটি খুব বেশি পুরনো না হলেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ন স্কিল।এই এডিটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। বর্তমান যুগে সবাই উন্নতমানের ভিডিও চায় কিন্তু ভালো ভিডিও এডিটর পায় না। তাই যারা ভালো এডিটিং পারে তাদের জন্য এটি সুবর্ণ সুযোগ অর্থোপার্জনের।
টাইপিং- বাংলা কিংবা ইংলিশ যে ভাষাই হোক টাইপিং সবাই কমবেশি পারেই। আবার অনেকের রয়েছে সৃজনশীল লিখার মেধা। তাই এই লিখাই হতে পারে ছাত্রাবস্থায় উপার্জনের আরেক উপায়। প্রচুর ব্লগিং সাইট আছে, নিউজ পেপার, অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে যে সব জায়গায় প্রচুর রাইটারের প্রয়োজন। তাই যারা লেখালেখিতে ভালো, এই গুণটি কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জনের পন্থা খুঁজে নিতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং – ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে কাজ করার একটি মাধ্যম, যার জন্য প্রয়োজন এক বা একাধিক সেক্টরে দক্ষতা অর্জন। যেমন — কেউ ফ্রিল্যান্সিং করেন গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে, কেউ বা করে কন্টেন্ট রাইটিং নিয়ে, কেউবা করে ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্টে। যেটা নিয়েই করেন না কেনো, সবার আগে প্রয়োজন সেই বিষয়ে দক্ষতা।এই দক্ষতা বৃদ্ধি যেমন একটি শিক্ষার্থীকে পরবর্তী চাকুরি বা ব্যবসায়ের জন্য শক্তভাবে গড়ে তুলবে, তেমনি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অধিক আয়ের ব্যবস্থা করে দিবে।
এজেন্সির হয়ে কাজ– এটি এক ধরণের কোম্পানি যে কোম্পানিগুলো বড় বড় কোম্পানির জন্য ভিডিও এডিটিং করে দেয়, ডিজাইনিং করে দেয়, প্রেজেন্টেশন তৈরী করে দেয়, কর্পোরেট ইভেন্ট নামিয়ে দেয়। এ ধরনের কাজে দক্ষতা অর্জিত হলে খুব সহজেই এর মাধ্যমে ছাত্রাবস্থায় উপার্জন করা সম্ভব।
কোডিং– বর্তমান সময় তথ্য প্রযুক্তির সময়। আইসিটি সেক্টরের মূল্য অনেক বেশি। কোন ছাত্র যদি কোডিংয়ে ভালো হয় সে এ্যাপস ডেভেলপমেন্ট করতে পারে , ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করতে পারে, এমনকি সফট্ওয়ারও তৈরি করতে পারে । তাই কোডার হয়ে থাকলে সেই স্কিলকে অবশ্যই কাজে লাগানো উচিত এই ছাত্রাবস্থায়ই৷