চীনের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় জিয়ান শহরে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। শহরজুড়ে জারি করা হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। শহরের ১ কোটি ৩০ লাখ বাসিন্দা ১২ দিন ধরে গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাবার বা প্রয়োজনীয় রসদ কিনতেও বাইরে যেতে পারছেন না জিয়ানের বাসিন্দারা। বাসায় বাসায় খাবার সরবরাহ করছে শহর কর্তৃপক্ষ। তবে এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। অনেকেই বলেছেন, বাসায় খাবারের মজুত কমে আসছে। এরপরও সহায়তা পাননি তাঁরা।
চীনে বর্তমান করোনা সংক্রমণের কেন্দ্র এই জিয়ান শহর। শহরটিতে গত ৯ ডিসেম্বর থেকে ১ হাজার ৬০০ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সিএনএন বলছে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চীনা কর্তৃপক্ষ জিয়ান শহরে যে ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করেছে, তা ২০২০ সালের শুরুতে উহান শহরে আরোপিত বিধিনিষেধের পর সবচেয়ে কঠোরতম।
এর মধ্যেই গত ১ জানুয়ারি মধ্যরাতের পর জিয়ানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি আবাসিক এলাকা থেকে কয়েক শ বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়। শহর কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
চীনা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম উইবোতে একজন জানিয়েছেন, ওই রাতে আবাসিক এলাকার বাইরে ৩০টি বাস দেখেছেন তিনি। অপর একজনের ভাষ্য, সেখান থেকে ১ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কোয়ারেন্টিনে নেওয়া ব্যক্তিদের অনেকের অভিযোগ, বাসের ভেতর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে বৃদ্ধ, শিশু এমনকি অন্তঃসত্ত্বা নারীও ছিলেন। কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নেওয়ার পথে এক বৃদ্ধের ছবি ভাইরাল হয়। সেখানে ওই বৃদ্ধকে শীতের রাতে একাকী বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এ নিয়ে অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। অভিযোগ উঠেছে, কোয়ারেন্টিন সেন্টারের সুযোগ-সুবিধা নিয়েও।
শুধু কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার ঘটনাই নয়, আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বাড়ি থেকে বের হয়ে মহামারি প্রতিরোধকারী কর্মীদের মারধরের শিকার হন এক ব্যক্তি। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে অবশ্য শহর কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই কর্মীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।
অপর এক ঘটনায় পরীক্ষায় অংশ নিতে এসে জিয়ান শহরে আটকা পড়েন একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে একজন জানান, গত দুই সপ্তাহে শুধু নুডলস খেয়ে ক্ষুধা মিটিয়েছেন তিনি। বাকি আছে মাত্র পাঁচটি প্যাকেট।