খসে পড়েছে পলেস্তারা দেবে গেছে মেঝে

প্রধানমন্ত্রী মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীনদের নতুন ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহে । তবে এসব ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তরের পরই । আর কয়েকটি ঘরের মেঝে দেবে গেছে বলে জানা যায় । তবে সেপটিক ট্যাংক না থাকায় শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এমন টা বলছে ভূমিহীন বাসিন্দারা ।

তাছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্য নলকূপ না থাকায় খালের পানিতে গোসল ও থালা–বাসন ধোয়ার কাজ করতে গিয়ে বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে
তারা । তবে প্র কল্পের পরিপত্র অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলে ঘর বরাদ্দের তালিকা প্রস্তুত করবেন । ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি প্রস্থের ঘরের ভেতরে দুটি কক্ষ, রান্নাঘর ও শৌচাগার থাকবে প্রাক্কলন অনুযায়ী । তবে নকশা অনুযায়ী ঘর নির্মাণে ৬ হাজার ইট, ৫০ বস্তা সিমেন্ট, ২০০ ঘনফুট বালু এবং ভিটা নির্মাণে ৫০ ফুট বালু ব্যবহার করার কথা ।

ভোমরা ইউনিয়নের হাড়দ্দহের রাধানগর খালের দুই পাশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য ৯৪ শতক খাসজমি নির্বাচন করা হয় ,সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায় এই কথা । তবে এ জমিতে ৪৭টি ঘর নির্মাণ করা হয় । আর প্রতিটি ঘর নির্মাণে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় হয় । এসব ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয় মে মাসের মাঝামাঝি । নিবন্ধন হয়েছে ৪৭টি ঘরের মধ্যে ৩০টির দলিল । জমির দলিল শিগগিরই নিবন্ধন হবে বাকি ১৭টি ঘরের । ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয় মে মাসের শেষ সপ্তাহে উপকারভোগীদের কাছে ।

তিনটি ঘরের দেয়ালে পলেস্তারা খসে পড়ে আছে ,হাড়দ্দহ রাধানগর খালসংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায় । তবে এসব ঘরের মেঝেরও পলেস্তারা উঠে গেছে অনেক ঘরে । তবে কিছু ঘরের মেঝে দেবে গেছে । এসব ঘর সংস্কার করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন । শ্রীরামপুর গ্রামের আম্বিয়া খাতুন হাড়দ্দহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে নতুন ঘর পেয়েছেন । ঘর পেয়ে এক সপ্তাহ ধরে এখানে বাস করছেন তার কাছে নতুন ঘরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘরে ওঠার পরদিন থেকে দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে । আর এ ছাড়া ঘরের মেঝের কয়েকটি স্থান থেকে পলেস্তারা উঠে গেছে । দেয়াল ও মেঝে মেরামত করে দেওয়া হয়েছে চার দিন আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ।

কিছুদিন আগে নতুন ঘরে উঠেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা বৈচানা গ্রামের সন্ধ্যা রানী দাস বলেন । তবে তিন দিন যেতে না যেতেই রান্নাঘরের মেঝে দেবে গেছে । আর পলেস্তারা খসে পড়ছে কিছুটা অংশজুড়ে । তবে একই অবস্থা শোবার ঘরেও । গত রোববার তাঁর বাড়িও সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে অন্যদের মতো । তবে সেপটিক ট্যাংক না থাকায় শৌচাগারের গ্যাস দুর্গন্ধ ছাড়াচ্ছে । আর টিউবওয়েলের ব্যবস্থা না থাকায় দূর থেকে জল আনার পাশাপাশি পাশের রাধানগর খালের পানিতে তাঁদের গোসল ও থালা–বাসন ধোয়ার কাজ করতে হচ্ছে ।

তাঁর ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মিন্টু মোল্লা বলেন । সামান্য বাতাস হলেই ঘরের মেঝেতে পানি জমে ঘরের চালের টিন এত ছোট যে বৃষ্টির সঙ্গে মেঝেতে পানি জমে । যার কারণে রান্না–খাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাদের । মারুফা খাতুনসহ আরও কয়েকজন উপকারভোগী একই কথা বলেন । ঘরে কিছু ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখা দেওয়ায় তা মেরামত করা হচ্ছে স্থানীয় ভোমরা ইউপির চেয়ারম্যান গাজী ইসরাইল বলেন । তবে ওই প্রকল্পের তিনি একজন সদস্য হলেও তাঁর কোনো সই লাগে না । তবে সবই করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা । আর সবকিছু তিনি বলতে পারবেন।

কয়েক সপ্তাহ আগে উপকারভোগীরা ঘরে উঠেছেন। কয়েকটি ঘরে সামান্য ত্রুটি দেখা দিয়েছিল আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন ঘরগুলোর এই দুরবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম বলেন । তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাঠানোর পর তা আবার সংস্কার করা হয়েছে । আর উপকারভোগীরা কোনো সমস্যার কথা বললে তা ঠিক করে দেওয়া হবে । প্রকল্প এলাকায় প্রতি ১০টি পরিবারের জন্য একটি করে নলকূপ বরাদ্দ রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে নলকূপ না থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পিআইও বলেন । এসব নলকূপ নির্মাণ করে দেওয়ার কথা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ।

প্রকল্পে শৌচাগারে সেপটিক ট্যাংক নির্মাণের বিষয়টি রাখা হয়নি ,সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জানান। তবে হাড়দ্দহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে তিনি শুনেছেন । আর তিনি দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেবেন । ইতিমধ্যে সদর উপজেলায় কাজ শুরু হয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা কার্যালয়ের নিবাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান । তবে ঈদের পর হাড়দ্দহ আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় কাজ শুরু করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *