কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে? আসুন জেনে নেয়া যাক। জীবনের এমন এক পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছি, যখন সামনে যাওয়ার কোনো পথই যেন খোলা নেই। হাল ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায়ই দেখছি না । সবকিছুই আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে, এমনকি সবচেয়ে সহজ জিনিসগুলোও।

হয়তো আমি কোনো কিছুতেই ভালো না। তবে এখন আর চেষ্টা করতেও ভালো লাগছে না। পরিবারের সমস্যা, স্কুল, কাজ, বন্ধুবান্ধব সবকিছুই যেন আমাকে ক্লান্ত করে তুলেছে। 

কলেজের পড়াশোনা তো ইতিমধ্যেই ছেড়ে দিয়েছি, যদিও আমার বাবা-মা তা জানে না। কাজও ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আমি। কেননা কাজ করতে প্রচন্ড বিরক্ত লাগে। সারাদিন বিছানায় শুয়ে শুয়ে ঘুমাতে চাই। আর কখনো উঠতে চাই না। 

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে? নিজেকে বদলানোর কোনো চেষ্টাই বাদ রাখিনি। কিন্তু এক ধাপ সামনে এগোলে দুই ধাপ পিছিয়ে যাই। এভাবে পিছপা হতে হতে জীবনে অনেকটাই পিছিয়ে গেছি। 

আমার বেশীরভাগ বন্ধুবান্ধবরাই বিয়ে-শাদী করে ফেলেছে। তাদের কলেজজীবন শেষ, কর্মক্ষেত্রেও বেশ এগিয়ে গেছে। আর আমি? আমার কোনো কিছুই ঠিকঠাক নেই।

কখনো ভাবিনি আমার জীবনটা এমন হয়ে যাবে। কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? আল্লাহর কাছে প্রতিনিয়ত দুআ করে যাচ্ছি। কিন্তু কবুলের কোনো লক্ষণ দেখছি না। 

অনেক কেঁদেছি। কাঁদতে কাঁদতে অনেক পরিশ্রান্ত আমি। কোনো আশাই এখন আর আমাকে আশান্বিত করতে পারে না। ছয় বছর ধরে এভাবেই চলছে। জীবনটা যেন আটকে গেছে। সময় ছাড়া চারপাশের সবকিছুই যেন থমকে আছে। 

কেন আমরা অসুখী? আসুন, পুরো দৃশ্যপটটার দিকে তাকাই

কেন আমরা অসুখী? আসুন, পুরো দৃশ্যপটটার দিকে তাকাই। আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার সামনে যেসব দুর্দশা আসে সেগুলো একটা চয়েসকে সামনে নিয়েই আসে। আপনি কি হতাশার মধ্যে দিয়ে যাবেন? আল্লাহর তাকদির এবং আপনার প্রতি আল্লাহর হিকমাহপূর্ণ পরিকল্পনাকে অস্বীকার করবেন? নাকি এটা অনুধাবন করবেন যে, আপনি যে বিপদের মধ্যে আছেন সেটা সামলানোর সক্ষমতা আপনার আছে? 

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? আপনার সামনে যে বিপদই আসুক সেটা আল্লাহর পরিকল্পনানুসারেই হয়েছে। তিনি জানেন বিপদটা আপনি সামলাতে পারবেন। কারণ, আপনি তো একজন মুমিন বান্দা। আর একজন মুমিনের আল্লাহর ও তাঁর প্রজ্ঞার ওপর বিশ্বাস থাকবে। 

আপনি হৃদয়ের গহীন থেকে জানেন যে দুঃখ আপনার হৃদয়ে বাসা বেঁধেছে তা আপনাকে সাময়িক কাবু করলেও পরাজিত করতে পারবে না। কেন আমরা অসুখী? আসুন, পুরো দৃশ্যপটটার দিকে তাকাই, সময়টা হয়তো কঠিন যাচ্ছে, কিন্তু আপনি অবশ্যই একে সামলানোর সামর্থ্য রাখেন, হে আমার ভাই/বোন।

সামনে যে বিপদ এসেছে তা একসময় কেটে যাবেই। এরপর একদিন দেখা হবে রবের সাথে। আপনি তার প্রতি যেমন সন্তুষ্ট, আশা করি, তিনি আপনার প্রতিও তেমন সন্তুষ্ট হবেন। 

একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী?

একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? মন খারাপ? মন খারাপ থাকলে আপনাকে দেওয়া আল্লাহর নিয়ামতরাশিগুলো নিয়ে ভাবুন। আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকুন।

কিন্তু অনেক সময় এগুলো নিয়ে ভাবলেও অনেকের ডিপ্রেশনের অনুভূতি কাটে না। মনে হয় আমি কি সঠিকভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করিনি? সেখানে কি দৃঢ়তার ঘাটতি ছিল? নাকি সমাধান হিসেবে শুধু প্রার্থনা করাই যথেষ্ট নয়? 

একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশা থেকে সমাধানের উপায়

একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশা থেকে সমাধানের উপায়, কুরআন ও হাদিসের দিকে আলোকপাত করলে দেখা যাবে, আমাদের ডিপ্রেশনের অনুভূতি কাটানোর জন্য কেবল অধিক অধিক ইবাদত বা প্রার্থনা করতে বলা হয়নি। এর বাইরেও আরো অনেক অপশন রয়েছে। যদিও সেই অপশনগুলো যে ইসলামের গণ্ডির ভেতরে রয়েছে তা আমাদের অনেকের জানা নেই। 

এই লেখায় একাকিত্ব, মন-খারাপি, হতাশা এবং ডিপ্রেশনের অনুভূতি মোকাবিলার কিছু উপায় নিয়ে কুরআন, হাদিস ও আলিমদের পরামর্শের আলোকে কথা বলব ইনশাআল্লাহ।

১)প্রথমত, ডিপ্রেশনে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য সাপোর্ট গ্রুপ খোঁজা ও কমিউনিটি গড়ে তোলা

ইসলামে, মুসলিমদেরকে তাদের পরিবার ও সমাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য উত্সাহিত করা হয়। কারণ যাতে  এর মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য বন্ধন গড়ে ওঠে এবং সম্পর্কগুলো সুদৃঢ় হয়। 

মুসলিমদের একে-অপরকে সাহায্য করতে শেখানো হয়, এতে সাহায্যপ্রাপ্ত ব্যক্তি জালিম হোক বা জুলুমের শিকার হোক না কেন। কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? যে কোনো উপায়ে নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। আস্থার একটা জায়গা থাকা, পরিবার ও সমাজের সদস্যদের সাথে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলা ইত্যাদি শোক, দুঃখবোধ, একাকিত্ব ও বিষণ্নতা কাটিয়ে ওঠার গুরত্বপূর্ণ মাধ্যম।

২) অন্যের পরামর্শ নিন।

ইসলামে মুসলিমদের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্যদের পরামর্শ নেওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি কোনো সিদ্ধান্তের দ্বারা প্রভাবিত হবে তার সাথে এই পরামর্শ করা যেতে পারে। এ ছাড়া প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের কাছেও পরামর্শের জন্য যাওয়া যায়।

সমাজের কাছে পরামর্শের সহায়তা চাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্য বা প্রোফেশনাল লোক যেমন থেরাপিস্টের সাথে কথা বলতে পারেন।

৩) ডায়েটের দিকে খেয়াল রাখা।

ইসলাম মুসলিমদের সকল বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে। এর মধ্যে উপযুক্ত ডায়েট বা খাদ্যাভাসও আছে।

আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ইসলাম ডায়েটের ব্যাপারে যেসব পরামর্শ দিয়েছে সেগুলোর সুফল শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। 

যেমন, 

◑সঠিক মাত্রায় পানি খাওয়া (পেটের এক-তৃতীয়াংশ পানি/তরল দিয়ে পূর্ণ করা),

◑সঠিক পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া (পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবার দিয়ে পূর্ণ করা),

◑এবং দিনের বিশেষ সময়ে খাওয়া।

ডায়েটে পরিবর্তন মানসিক অবস্থার নিয়ন্ত্রণেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

৪) বাইরে হাঁটাহাটি করা।

ইসলাম মুসলিমদের বাইরে ও প্রকৃতির মধ্যে হাঁটার জন্য উৎসাহিত করে। 

বর্তমানে বিজ্ঞান বলছে, সূর্যের আলোর সংস্পর্শ এবং শরীরচর্চার কারণে মানসিক ও শারীরিক অবস্থার উন্নতি সাধিত হয়। 

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? সপ্তাহে ৩-৪ বার বাইরে হাঁটতে হবে। হাঁটার সময়টা ৩০ মিনিট-৪০ মিনিট হতে পারে। এর চেয়েও বেশী হাঁটা যেতে পারে। এতে ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলো কমে যাবে ইনশাআল্লাহ। হাঁটার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করতে হবে।

৫) হাইড্রেটেড থাকা।

ইসলাম মুসলিমদের ভালভাবে হাইড্রেটেড থাকতেও উৎসাহিত করে। পাশাপাশি খাবার খেতে হবে পেটের এক-তৃতীয়াংশ।

দেহে পানিস্বল্পতা থাকলে মস্তিষ্কেও পানিস্বল্পতা দেখা দেয়। যা মন-মেজাজ, একাগ্রতা, শান্তি ও তৃপ্তির অনুভূতি নষ্ট করে। 

মানসিক নিয়ন্ত্রণ দক্ষতা বিকাশে হাইড্রেটেড থাকা অপরিহার্য। কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? বিষণ্নতা কাটানোর জন্য সুস্থ মস্তিষ্কের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানি ছাড়া মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে চাওয়া অবাস্তব ভাবনা।

৬) দৈনন্দিন রুটিন তৈরি করা

সালাতের সময়গুলো মুসলিমদের একটি রুটিনের মধ্যে চলতে সাহায্য করে। তবে এগুলোর পাশাপাশি আরো রুটিন সেট করা যেতে পারে।

আমাদের শরীরের প্রতিটি পেশী ও অংশের নিজস্ব স্মৃতি রয়েছে। তাই যখন আমরা আমাদের শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্য সুন্দর রুটিন তৈরী করি এবং তা মেনে চলি, তখন আমাদের দেহও সেটার দ্বারা প্রভাবিত হয়। পেশীর স্মৃতিও ইতিবাচকভাবে বাড়তে থাকে। 

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? বিষণ্ন অবস্থায় এমনকি ঘুম থেকে ওঠারও ইচ্ছাশক্তি থাকে না, সারাদিনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা দূরের কথা। কিন্তু নিজেদের জন্য সলিড রুটিন তৈরি করলে বিছানা থেকে উঠতে ও সারাদিন চলতে কিছুটা কষ্ট হলেও কেবল দৈনন্দিন রুটিনের অভ্যাসের কারণে আপনার জন্য তা অনেকটাই সহজ হবে।

৭) পরিস্থিতি নিজের হাতে নেওয়া

খারাপ কিছু ঘটলে সেটাকে নিজ হাতে পরিবর্তনের চেষ্টা করার নির্দেশনা দেয় ইসলাম।

অনেক সময় দাম্পত্য-জীবনে জুলুমের শিকার হওয়া, নিজের ব্যাপারে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং কর্মক্ষেত্রে সমস্যা ইত্যাদি কারণে জীবনে বিষণ্নতার কালো ছায়া নেমে আসতে পারে। এগুলো ডিপ্রেশনের কারণ হলে সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা সর্বোত্তম পন্থায় পদক্ষেপ নিতে পারি। 

দুর্দশা জীবনের অংশ। তাই বলে দুর্দশা জীবনে সহজ হয়ে আসে না। বুক কষ্টে ভেঙ্গে যায়, ভাঙবেই বা না কেন? আমরা তো মানবিক সৃষ্টি। আমাদের রয়েছে তীব্র আবেগ। আল্লাহ বলেন,

لَا یُکَلِّفُ اللّٰهُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَهَا

আল্লাহ কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু আরোপ করেন না। [সুরা বাকারাহ : ২৮৬]

সুতরাং আপনি যে অবস্থায়ই আছেন, তা আপনি সহ্য করতে পারবেন বলেই আল্লাহ আপনাকে এভাবে পরীক্ষা নিচ্ছেন। আর এই পরীক্ষার মাধ্যমেই আল্লাহ আপনার মর্যাদা বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আপনাকে অযথা কষ্টে রেখে আল্লাহর কি কোনো লাভ আছে, বলুন?

একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশা থেকে সমাধানে ইসলামিক নিয়ম

১) আল্লাহর প্রতি ধ্যানমগ্ন থাকা

রাসুল সাঃ-থেকে এমন অনেক হাদিস বর্ণিত আছে যেখানে তিনি নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে নিয়েছিলেন যেন তিনি ধ্যানমগ্ন হতে পারেন। 

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বা পরিস্থিতি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ক্ষমতা থাকা মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গুরত্বপূর্ণ। কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় – সেটা হতে পারে ১৫-২০ মিনিট – নিজেকে সবকিছু থেকে সরিয়ে নিয়ে চুপচাপ চিন্তাভাবনা করা, আল্লাহ ও তার সৃষ্টিকে নিয়ে ভাবা দরকার। যাতে আল্লাহ যেসব নিয়ামতরাজি আমাদের দিয়েছেন তার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি।

নিজেদের দৈনন্দিন রুটিনে এই অভ্যাসগুলো ঢোকানোর নানা উপায় রয়েছে। ফলে যেসব সমস্যাগুলো আমাদের একাকি, বিচ্ছিন্ন বা হতাশ করছে তা নিয়ে ভাবার সময় পাব।

২)সবর ও শোকর

ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় হলো-সবর ও শোকর। এগুলো নিয়ে অনেক কথাবার্তা হলেও প্রকৃতপক্ষে আমাদের মধ্যে এই দুটো বিষয়ের চর্চা খুব কম। আমরা এগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবি না।

ধৈর্যের আরবি প্রতিশব্দ ‘সবর’। এর শাব্দিক অর্থ  হলো বিরত থাকা, আটক থাকা ইত্যাদি। কতক আলিম ধৈর্যকে একটি উত্তম মানবিক গুণ বা নৈতিক মূল্যবোধ বলে অভিহিত করেছেন, যার অন্তর্নিহিত শক্তির সাহায্যে আমরা নিজেদের খারাপ কিছু থেকে বিরত রাখতে পারি।

আমর ইবনু উসমান আল-মাক্কি রাহ. বলেন, “ধৈর্য হচ্ছে আল্লাহর সহিত দৃঢ়ভাবে আকড়ে থাকা এবং তাঁর পক্ষ থেকে আসা বিপদ-আপদ নীরবে শান্তমনে গ্রহণ করা।”

শোকর দ্বারা সাধারণভাবে কৃতজ্ঞতা বোঝানো হয়। তবে এর সংজ্ঞা এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং শোকর হচ্ছে, জীবনের প্রতিটি ইতিবাচক-নেতিবাচক এবং প্রত্যেক জাগতিক অভিজ্ঞতার ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? এবং এটা মাথায় রাখা যে প্রতিটি জিনিস ঘটছে আপনার কল্যাণের জন্যই। যদিও সেই কল্যাণটা হয়তো আপনি তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারছেন না।

জীবনের প্রতিটি মূহুর্তকে উপভোগ করা, ভালো জিনিসকে উৎফুল্লতার সাথে সাদরে গ্রহণ করা এবং কঠিন সময়কে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি রেখে পাড়ি দেওয়া – উভয়ই আমাদের মানসিক অবস্থার জন্য কল্যাণকর। এ পর্যায়ের ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার স্তরে পৌঁছানো জটিল হতে পারে। কিন্তু একবার অর্জন করতে পারলে বিষণ্নতার সময়গুলোতে আমরা ততটাই স্বাভাবিক থাকতে পারব।

৩) খুশু-খুজুর সাথে সালাত আদায়

যারা বলেন যে  বিষণ্ণ অবস্থায় তারা সালাতে মনোযোগ দিতে পারেন না। তাদের অনেকেই সালাতে খুশু-খুজু সৃষ্টির নানা পন্থা শিখে সেগুলো পালনের দ্বারা বেশ উপকৃত হয়েছেন।

কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? হতাশাজনক অবস্থা থেকে পূর্ণ খুশু-খুজুময় সালাতে অবগাহন ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি দিতে পারে, রবের সাথে তৈরী করতে পারে সুগভীর আধ্যাত্মিক সম্পর্ক।

পরিশেষে

আল্লাহ তো আর রহমানের রহীম! আপনার বাবা মায়ের চেয়েও যিনি শতগুণ আপনাকে ভালোবাসেন। তিনি কেন আপনাকে খারাপ পরিস্থিতিতে ফেলবেন? যদি ফেলেই থাকেন তবে ধরে নিবেন অবশ্যই এর মাঝে হিকমাহ আছে। কেন আমরা অসুখী? একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও হতাশায় আমাদের করণীয় কী? যেটা আপনি হয়তো এখন বুঝতে পারছেন না তবে অতিসত্বরই তা জেনে যাবেন ইন শা আল্লহ। আল্লাহর উপর ভরশা রাখুন।

 

Islamic Guidance-এর “Why are we so unhappy in life?” ভিডিও অবলম্বনে

By মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

My name is Mahazabin Sharmin Priya, and I am an author who studied Mathematics at the National University. I have a deep passion for writing in various genres, including Islam, technology, and mathematics. With my knowledge and expertise, I strive to provide insightful and engaging content to readers in these areas.

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *