কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আজ সোমবার রাত নয়টায় রাজশাহী শহরে নিজ বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

হাসান আজিজুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি লেখালেখি করে গেছেন। তিনি একাধারে গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

৮২ বছর বয়সী হাসান আজিজুল হক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত ২১ আগস্ট এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দুই সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা নেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে রাজশাহীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

গত ১৬ আগস্ট হাসান আজিজুল হকের ছেলে ইমতিয়াজ হাসানের একটি ফেসবুক পোস্টে তাঁর বাবার অসুস্থতার কথা প্রথম জানা যায়। সে সময় পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছিল, হাসান আজিজুল হক অসুস্থ হয়ে প্রায় এক মাস বাসায় ছিলেন। করোনার কারণে বাসায় রেখেই চলছিল তাঁর চিকিৎসা।

বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও আগে থেকেই তাঁর হার্টে সমস্যা, ডায়াবেটিস ছিল। তাঁর শরীরে লবণের ঘাটতিও ছিল। করোনার কারণে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। চিকিৎসকের পরামর্শমতো বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তিনি একবার পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়েছিল।

হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন।

এর পর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে নগরের চৌদ্দপায় আবাসিক এলাকায় বসবাস করতেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য হাসান আজিজুল হক ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৯ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।

Leave a Comment