এভাবে রিজিকের ব্যবস্থা হয়

একটি পাকা আম উপর থেকে পড়লো হালকা বাতাসে। পড়েই ফেটে গেছে। ফাটা অংশটা দিয়ে পোকার ঘরবাড়ি দেখা যাচ্ছে। তার মানে হলো, গাছে থাকাবস্থা থেকেই আমের ভিতরে তারা বসত গড়েছিল।

এমনিতেই পোকাসমেত আম, তার উপর ফেটে চৌচির। অনেক্ষণ ধরে পড়ে আছে কিন্তু কোনো মানুষ তুলে নিচ্ছে না।

কোথা থেকে যেন দু’টো মুরগি এলো। চঞ্চু দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমটির ভিতরে লুকানো পোকাদের বের করে খেল। এরপর ঠোকর দিয়ে দিয়ে কিছুটা আমও খেল। তারপর চলে গেল অন্যদিকে।

কিছুক্ষণ পরে, একটা ছাগল এলো। এসেই আমটির খোসা ছিড়ে ছিড়ে খেয়ে নিল। খোসা খাওয়া শেষ হলে, পুরো আমটি নিল মুখে পুরে। কিন্তু চিবুতে পারছিল না। আমটি পরে গিয়ে বালুতে মাখামাখি হয়ে গেল। ছাগলের প্রস্থান।

কিছুক্ষণ পরে, ঐ বাড়ির ঝি এসে আবর্জনার সাথে ঐ আমটিও ফেলে দিল ময়লার স্তুপে। কয়েক সপ্তাহ বাদে ওখানে দেখা গেল, একটি কচি চারা। কিছুদিনের ভিতরেই সেটা পাতা বিকশিত করে পরিপূর্ণ আম গাছের রুপ নিয়েছে।

সুবহানআল্লাহ!

আপনি চিন্তা করেছেন, একটিমাত্র ফলে কতগুলো প্রাণীর রিজিক ছিল?
১.আমের ভিতরের পোকাগুলো
২.মুরগি দু’টি
৩.ছাগল
কে ব্যবস্থা করেছেন? আমার রব! আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আ’লামিন।

আবার দেখুন, ঐ নষ্ট আমটি থেকে একটি পুরো আমগাছেরই জন্ম হলো। এগুলো কার ইশারায় হয়েছে? একা একা হয়েছে সব? একটু ভাবুন। এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়গুলো নিয়ে যেখানেই ভাবনার শুরু, সেখানেই নাস্তিকতার পতনই।

মনে পড়ে সূরা হাদীদের ৬ নাম্বার আয়াত? আল্লাহ আমাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন-

وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ رِزۡقُہَا وَ یَعۡلَمُ
مُسۡتَقَرَّہَا وَ مُسۡتَوۡدَعَہَا ؕ کُلٌّ فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶﴾

আর ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যাদের রিয্ক আল্লাহর যিম্মায় না রয়েছে, আর তিনি প্রত্যেকের দীর্ঘ অবস্থানের স্থান এবং অল্প অবস্থানের স্থানকে জানেন, সবই কিতাবে মুবীনে (লাউহে মাহফুযে) রয়েছে।

তবুও কীভাবে আমরা রহমানের প্রশংসা না করে থাকি? আল্লাহর উপর ভরসা করলে আমরা কখনই নিরাশ হবো না। কিন্তু দুঃখ-কষ্টে পতিত হলে আমরা সব ভুলে যাই। আহাজারি করি কপাল চাপড়ে চাপড়ে। তাওয়াক্কুল করার কথা আর মনেই থাকে না। শয়তান সেই সময়টারই সুযোগ নেয়, আল্লাহুম্মাগ ফিরলি। আল্লাহ সকলকে সহীহ্ সমোঝ দান করুন, আমিন।

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

Leave a Comment