ই-অরেঞ্জ সম্পর্কে যা বললেন মাশরাফি

দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার চুক্তি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও পণ্য দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে । ঢাকা গুলশান-১ এর সড়ক অবরোধ শেষ করে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা জড়ো হয় বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার বাসার পথে।

আজ সোমবার (১৬ আগস্ট) রাতে ই-অরেঞ্জের বিক্ষুব্ধ জনতা মাশরাফির বাড়ির সামনে এসে জড়ো হলে তাদের সাথে দেখা করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
তারপরে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের সাথে কথা বলেন মাশরাফি। তিনি তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

এই বিষয়ে মাশরাফি মুর্তজা বলেন, ই-অরেঞ্জের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। চুক্তি অনুযায়ী তাদের সাথে আমার সব ধরনের লেনদেন শেষ। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ মাসের জন্য তাদের সাথে আমার চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মেয়াদ জুনে শেষ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই চুক্তি অনুযায়ী আমার ছয় মাস কাজ করার মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমার চুক্তি শেষ হওয়ার পরই গ্রাহকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসতে শুরু হয়। তবে তিনি গ্রাহকদের এমন বিপদের সময়ে পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমি সব সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে থাকবো। যারা বিপদে পড়েছে আমি তাদের পাশে আছি। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্য আমি কাজ করে যাব।

তিনি জানান, ই-অরেঞ্জের সিইও এর সাথে কথা হয়েছে। তারা জানায় ১৯ তারিখ থেকে গ্রাহকদের পন্য প্রদান করা শুরু করবে এবং যাদের চেক বাউঞ্জ হয়েছে তারা টাকা পাবে। এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সিইওকে গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানের জন্য ডিবি অফিসে ডাকা হয়েছে বলে জানান মাশরাফি। তার পক্ষ থেকে এমন আশ্বাস পাওয়ার পর বিক্ষোভ করা প্রায় দুই হাজার গ্রাহক অবশেষে ই-অরেঞ্জের কার্যালয় ছেড়েছেন।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান-১ এর সড়ক অবরোধ করেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা। অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। গুলশান থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, ৪০ জন গ্রাহক মোটরসাইকেল নিয়ে গুলশান-২ মোড়ে আসেন। পরে তারা সেখান থেকে গুলশান-১ এর দিকে চলে যান।

ই-অরেঞ্জের এক গ্রাহক বলেন, আমরা ই-অরেঞ্জ নামের ই-কমার্স সাইট থেকে বাইক, মোবাইলসহ নানা পণ্য অর্ডার করেছিলাম। আমরা সরকারের ই-কমার্স নীতিমালা প্রকাশের আগে ই-অরেঞ্জের ডাবল টাকা ভাউচার কিনেছিলাম। কর্তৃপক্ষ গত ১৬ মে (সম্ভাব্য তারিখ) থেকে সব ডেলিভারি বন্ধ রেখেছে। ১৮ জুলাই ই-অরেঞ্জ একটি ডেলিভারি ডেট প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে লকডাউনের দোহাই দিয়ে ডেলিভারি বন্ধ করে দেয়। পরে জানায় লকডাউন শেষ হলে ডেলিভারি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। লকডাউন শেষ হওয়ার আগের দিন ১০ আগস্ট তারা আবার নতুন করে ১৬ আগস্ট ডেলিভারির তারিখ প্রকাশ করে।

অপরদিকে সোমবার (১৬ আগস্ট) ই-অরেঞ্জ তাদের অফিসিয়াল পেজে জানায়, পূর্বের বাইক সেলারের সাথে তারা চুক্তি বাতিল করেছে। তারা নতুন সেলার পেতে বা নিজেরা বাইক ইমপোর্ট করতে ৪৫-৬০ কর্মদিবস লাগবে। তাই যারা বাইক নিতে চান, তাদের অপেক্ষা করতে হবে অথবা রিফান্ড রিকুয়েস্ট করতে হবে। বেশ কয়েকজন গ্রাহক রিফান্ড চেয়ে ফোন করায় তারা ২১ কর্মদিবসের কথা বলে। তখন সরকার নির্ধারিত ১০ দিনের কথা বলায় তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তাই ই-অরেঞ্জ এর গ্রাহকরা সড়কে অবস্থান নেয়।

Leave a Comment