ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আসলে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক হবার যোগ্যতাও রাখে না!

গত দুই দিনে বাংলাদেশের দুটো বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। এক শিক্ষক তার ছাত্রদের চুল কেটে দিয়েছে ক্লাস রুমে’ই! অন্য আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নাকি পরীক্ষা দিতে দেয়নি কিংবা ছাত্রত্ব’ই কেড়ে নেয়া হচ্ছে! কারন তারা লুঙ্গি পরে ক্লাসে এসছিল!
আমি তো জানতাম বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার জায়গা। আমরা তো এইসব দেশে আমাদের ছাত্রদের শেখাই- কিভাবে শৃঙ্খল ভেঙে নতুন কিছু আবিষ্কার করতে হবে। আমরা তো আমাদের ছাত্রদের শেখাই কিভাবে প্রথা ভেঙে ক্রিয়েটিভ হতে হবে। আমরা আমাদের ছাত্রদের শেখাই- প্রচলিত কোন কিছু সহজে মেনে নেবে না। তোমার দৃষ্টিতে যেটাই মনে হবে অসঙ্গত; সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন করবে। চেষ্টা করবে এর কারন বের করার। এমনকি কোন তাত্ত্বিকের দেয়া তত্ত্ব’ও অন্ধের মতো মেনে নেবে না। আর আমাদের কেউ ব্যস্ত লুঙ্গি পরা নিয়ে! কেউ আবার সিঙ্গারা-চপ এইসব নিয়ে ব্যস্ত!
আরেকজন তো রীতিমত চুল কাটা নিয়ে ব্যস্ত। কেন ছেলেরা চুল বড় রাখছে! এর মানে উনি ধরেই নিয়েছেন ছেলেরা চুল বড় রাখতে পারবে না! তো, উনাকে এই তত্ত্ব কে শিখিয়েছেন? শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম নাকি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়! তা, রবীন্দ্রনাথের নিজেরই তো অনেক বড় বড় চুল ছিল। তিনি আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যোগ্যতা রাখতেন তো?
আমার জানাও ছিল না এই নামে দেশে একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কঠিন ভাষায় একটা পত্র লিখবো
আর লুঙ্গি পরে (তাও আবার অন লাইনে!) ক্লাসে যাওয়া যাবে না, কোন আইনে আছে এটা? আপনাদের বাপ-চাচারা কি স্যুট-টাই পরে ঘুরে বেড়াত? নাকি দুই দিনের শিক্ষক হয়ে এখন লুঙ্গি’কে ক্ষেত ড্রেস মনে হচ্ছে?
এরপরও যদি আপনাদের মনে হয়- চুল বড় রাখা যাবে না। লুঙ্গি পরে আসা যাবে না। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এমন আইন করুন। সে আইন যদি পাশ হয়, তাহলে ছাত্রদের সেটা জানিয়ে দিন। এছাড়া কোন আইনে আপনারা ছাত্রদের চুল কেটে দিচ্ছেন? লুঙ্গি পড়ে আসা যাবে না বলছেন?
জ্ঞান-বিজ্ঞানে চর্চা করার এতো কিছু থাকতে কেন আপনারা চুল, লুঙ্গি, চা-সিঙ্গারা নিয়ে ব্যস্ত?
কারন আপনারা আসলে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক হবার যোগ্যতাও রাখেন না। সেই আপনারা হয়ে বসেছেন- ইউনিভার্সিটির শিক্ষক!

Leave a Comment