আর সাম্প্রদায়িক হামলা চালাতে দেওয়া হবে না

আর সাম্প্রদায়িক হামলা চালাতে দেওয়া হবে না

দুর্গাপূজাকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর মতো ঘটনা আর ঘটতে দেওয়া হবে না বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বাস দিয়েছে সরকার। গত রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশি দূতাবাস, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে পাঠানো চিঠিতে সরকার ওই আশ্বাস দেয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সব গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল ও তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি ও জটিলতা দূর হবে। আইনের শাসন সমুন্নত থাকবে এবং আন্ত সম্প্রদায় ও আন্তর্ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা যারা করবে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ধর্ষণ ও মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাচার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অপপ্রচারে বাংলাদেশ সরকার উদ্বিগ্ন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান নেবে। দেশে ও বিদেশে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো পক্ষেরই এ ধরনের মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোকে হিন্দু ধর্মীয় স্থাপনাগুলোতে হামলার ঘটনার বিষয়ে সরকারের অবস্থানপত্র পাঠানো হয়েছে। সেখানে সাম্প্রতিক হামলাগুলো মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টা, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগসহ সরকারের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। জানা গেছে, চিঠিতে দুর্গাপূজার সময় হামলার খবর পাওয়ার পরপরই ৩৭টি জেলায় নিরাপত্তা জোরদারে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি মোতায়েনের কথা তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে গুজবে কান না দেওয়ার এবং সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সবাইকে যেকোনো উপায়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের জ্যেষ্ঠ নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এরই মধ্যে অনেক স্থানে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। হামলাগুলোর ঘটনায় মামলা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু, অন্যজন পানিতে ডুবে মারা গেছেন। কোনো মন্দির ভাঙা হয়নি। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাউকে ধর্ষণ করা হয়নি।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধে দরিদ্র কিছু ব্যক্তির বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার দ্রুত ২০টিরও বেশি বাড়ি পুনর্নির্মাণের ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, সম্ভবত বাংলাদেশই বিশ্বে একমাত্র দেশ যেখানে সব ধর্মের উৎসবে সরকারি ছুটি পালন করা হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়কে সহায়তায় এখানে আলাদা ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বছরও দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টে তিন কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *