আমার জীবনের আসল গুরুত্বপূর্ণ কাজ কোন গুলো?

আমার জীবনের আসল গুরুত্বপূর্ণ কাজ কোন গুলো?
আমি কি সেটা সেটা চিহ্নিত করতে পারি? আমার ২৪ ঘন্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময়টা কি High value activities এর জন্য বরাদ্দ রাখি?

🔸 High value সম্পন্ন কাজ হচ্ছে যেগুলো: গুরুত্বপূর্ণ *এবং* যেগুলো আর্জেন্ট। যেমন: সময় মত নামাজ পড়া! এটা অবশ্যই আর্জেন্ট, কারন একটা নামাজের ওয়াক্ত এবং আওয়াল ওয়াক্ত চলে গেলে, সেটা কোনদিন আপনার কাছে ফেরত আসবে না‌। আপনি কাযা পড়তে পারেন, তাওবা করতে পারেন কিন্তু কোটি টাকা দিয়েও ঐ হারিয়ে যাওয়া নামাজের সময় আপনি-আমি ফেরত আনতে পারবো না! ফরজ ইবাদত গুলো হচ্ছে আর্জেন্ট এবং ইম্পরট্যান্ট: পর্দা করা শুরু করা, কবিরা গুনাহ ছেড়ে দেয়া, সময় নষ্ট বন্ধ করা, কুরআনের সাথে সময় বাড়ানো, আমার ছোট বাচ্চাকে ইবাদতের নিয়ত করে খাওয়ানো―এগুলো সবই প্রথম ক্যাটাগরির High value সম্পন্ন কাজ। এই ক্যাটাগরির কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব করে ফেলতে হবে।

🔸 কিছু কাজ এমন রয়েছে যেগুলো আর্জেন্ট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ না। একটু পরে করলেও সমস্যা নেই। যেমন: রাতের খাবার ঠিক করা। এটা গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, কিন্তু যদি মাত্র দুপুর বেলা হয়, রাত আসার আগ পর্যন্ত এটা তেমন আর্জেন্ট না। এই ক্যাটাগরির কাজগুলো পরে করা যায়, বা Delegate করা‌ যায়।

🔸কিছু কাজ এমন যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আর্জেন্ট না। এই কাজগুলোকে আমরা সবচেয়ে বেশি অবহেলা করি। নফল ইবাদত যেগুলো করতে পারলে খুবই ভালো কিন্তু না করলে কোন পাপ হয় না। একটা ভালো কোর্স করে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি, করা, আবার নিজের শরীরের, চুলের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি এই ক্যাটাগরির কাজ। এই গ্রুপের কাজগুলোকে পরে করার জন্য সিডিউল করে রাখতে হবে।

🔸কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো আর্জেন্ট-ও না এবং গুরুত্বপূর্ণ -ও না। যেমন আনমনে ফোন ক্রলিং করা! এই ধরনের low value কাজগুলোতে সবচেয়ে কম সময় খরচ করতে হবে, অথবা এগুলোকে সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে।

প্রডাক্টিভ মুসলিমের ২৪ ঘন্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় এবং শ্রম সে যে কাজগুলো আর্জেন্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্যাটাগরির সেগুলোতে খরচ করে। ফরজ আমলগুলোতে সে অত্যাধিক গুরুত্ব দেয়। আমরা অনেক সময় নফল আমল নিয়ে তর্কাতর্কি করি, অথচ আমাদের ফরজের কোন ঠিক নেই। সারারাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ে সকালে ফজরের নামাজ পড়তে পারলাম না―এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু আছে?

ফরজ আমল যে কত গুরুত্বপূর্ণ সেটা এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি,
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বলেন, “যে ব্যক্তি আমার কোনো বন্ধুর সাথে শত্রুতা করবে, তার বিরুদ্ধে আমার যুদ্ধের ঘোষণা রইল। আমার বান্দা যে সমস্ত জিনিস দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করে, তার মধ্যে আমার নিকট প্রিয়তম জিনিস হল তা, যা আমি তার উপর ফরজ করেছি। অর্থাৎ ফরজের দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করা আমার নিকটে বেশী পছন্দনীয়।…..আর আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে, পরিশেষে আমি তাকে ভালবাসতে শুরু করি … …”
[বুখারি ৬৫০২]

অর্থাৎ ফরজ দিয়ে আল্লাহর কাছে যাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে নফল আমল দিয়ে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায়। তাই ফরজ কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব করে ফেলতে হবে এবং নফল কাজগুলো কীভাবে এড করা যায়, সেটা দৈনন্দিন জীবনে শিডিউল করে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

আপনার জীবনের চব্বিশ ঘণ্টাকে কি আপনি ৪ ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে পারেন? আপনি কোন ক্যাটাগরিতে কতটুকু সময় খরচ করছেন সেটা কি মাইন্ডফুল ভাবে বুঝে করতে পারেন?

 

©ssa

By মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

My name is Mahazabin Sharmin Priya, and I am an author who studied Mathematics at the National University. I have a deep passion for writing in various genres, including Islam, technology, and mathematics. With my knowledge and expertise, I strive to provide insightful and engaging content to readers in these areas.

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *