স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া ও আপস বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কিছু বিবাহিত দম্পতি একে অপরের থেকে এতটাই মানসিক এবং শারীরিকভাবে বিচ্ছিন্ন বোধ করেন যে এটি সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। বিশ্বজুড়ে দম্পতিরা বেডরুমে তৈরি হওয়া দূরত্ব সম্পর্কে কথা বলা এড়িয়ে চলে, যদিও দম্পতি এবং বৃহত্তর পরিবারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আসলে ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শুধু সন্তান ধারণ করা এবং এক ছাদের নিচে বসবাস করা নয়। এক ছাদের নিচে বসবাস করা একটি ঘর বা আশ্রয় হতে পারে, পরিবার নয়। সংসার নামক দীর্ঘ পথটি সামনে থেকে পেছনে পাড়ি দেওয়া যায় না, পায়ে হেঁটেও গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এতটা মজবুত নয় যে দিনের পর দিন একজনের ভুল সহ্য করে একসাথে থাকবে। আবার এতটা সূক্ষ্ম নয় যে একটু ভুলেই সম্পর্ক শেষ করে দেওয়া যায়।
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া
সন্তানের সাথে পিতামাতার সম্পর্ক ছাড়া পৃথিবীতে কোন সম্পর্কই চিরস্থায়ী নয়। তাই সম্পর্কের যত্ন নিতে হবে দুই দৃষ্টিকোণ থেকে। সম্পর্কটিকে একটি চারা বলা যেতে পারে যা একটি সুপ্ত বীজ থেকে অঙ্কুরিত হয়েছে। কে ঘুম থেকে উঠতে হবে যত্ন ও পানি ও আগাছা দিয়ে সময়মতো। তবেই পাতা বেরিয়ে আসবে এবং গাছে পরিণত হতে থাকবে। কালের আবর্তনে কোন এক সময় সেই গাছে ফুল ও ফল আসবে। আর এই বাগানের মালি একজন নয়, দুজন।
জীবন মানুষের একটি। এই ছোট জীবন যুদ্ধ করে কাটিয়ে লাভ কি? আমার সামান্য ত্যাগ যদি আমার পরিবারে সুখ নিয়ে আসে, তবে আমি তা করব। একই মনোভাব রাখুন।
টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয় কেন?
টাকা নিয়ে দম্পতির মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হওয়া অস্বাভাবিক নয়। স্বামী-স্ত্রী প্রায়ই আর্থিক বিষয়ে মতানৈক্য করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন সবার জীবনেই টাকার গুরুত্ব বেড়েছে। প্রত্যেকেরই অনেক চাহিদা রয়েছে। চাহিদা মেটাতে যতটা আয় করা দরকার। এক্ষেত্রে প্রেমের প্রথম পর্যায়ে সমস্যা দেখা দেয় না।
তবে পরিবারের চাপ বাড়লে দাম্পত্য জীবনে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে এবং দাম্পত্য কলহ এড়াতে সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তার আগে জেনে নিন কেন টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হচ্ছে দম্পতির মধ্যে।
- অনেকেই সঙ্গীকে লুকিয়ে বিভিন্ন খাতে টাকা খরচ করেন। সমস্যা দেখা দেয় যখন আপনার সঙ্গী জানতে পারে যে আপনি গোপনে তার জন্য অর্থ ব্যয় করছেন। তাই কোথাও খরচ করতে হলে অন্তত আপনার সঙ্গীকে জানান।
- অনেকেই অতিরিক্ত হাত খরচ করেন। সেক্ষেত্রে আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে এসব বিষয়ে লাগাম টেনে ধরতে বলে এবং আপনি যদি তার দিকে মনোযোগ না দেন, তাহলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসলে বেশি খরচ করলে বাজেট বাড়ে। তাই সবাইকে নিজের খরচের দিকে নজর দিতে হবে।
- অনেকেই নানা কারণে সঙ্গীর কাছ থেকে টাকা ধার নেন। প্রয়োজনে ধার নিতে পারেন। যাইহোক, যখন আপনি আপনার নিজের চিন্তা এটি ফিরিয়ে না দেন, তখন স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হতে পারে। তাই কথা বলতে শিখুন। আপনি আপনার সঙ্গীর দ্বারা সম্মানিত হবে.
বেগম রোকেয়া বলেন, ‘গাড়ির দুই চাকা, গাড়ি চললে দুই চাকা সমান হতে হয়। একটি চাকা বড় এবং একটি চাকা ছোট হলে গাড়ি চলবে না। নারী পুরুষের ক্ষেত্রেও একই কথা। ‘একটি পরিবারের সুখী হওয়ার জন্য কী দরকার? আবেগপ্রবণ কেউ হয়তো বলবে ভালোবাসা? বাস্তববাদী বলতে পারে টাকা! ভালোবাসায় যেমন পেট ভরে না তেমনি টাকা দিয়ে সুখ বা শান্তি কেনা যায় না।
ধরুন একটি পরিবারে ভালোবাসা এবং সমৃদ্ধি দুটোই আছে! তবুও কেন সে সংসারে সুখী নয়? উত্তর কি? সমন্বয়ের সমস্যা নাকি মতানৈক্য নাকি বোঝার অভাব! ভাই-বোন, বোন, বাবা, ছেলে, মা ও মেয়ের মধ্যে মতানৈক্য থাকলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কেন হয় না?
বিভিন্ন পরিবারে বেড়ে ওঠা মানুষগুলো আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এগুলো থেকে আমরা আমাদের জীবনসঙ্গী খুঁজে পাই না। তাহলে কি অস্বাভাবিক মতভেদ আছে? উদাহরণ স্বরূপ, খুব আধুনিক সচ্ছল পরিবারের একজন বিবাহিত মেয়ে এবং গ্রামের একজন শিক্ষিত, চাকুরীজীবী ছেলের বিয়ে হলে, সমন্বয়ে সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। মেলে না! একজন মানুষ যখন অন্য একজনের প্রেমে পড়ে তখন সে অনেক খারাপ অভ্যাসকেও উপেক্ষা করে। ভালোবাসা হয়ত অন্ধ!! কিন্তু পারিবারিক জীবনে প্রবেশ করলে তিল তিল হতে সময় লাগে না।
বিয়ের প্রথম কয়েক বছর হাসি-খেলতে কেটে যায়। কিন্তু না! তখন শুধু সঙ্গীর অভ্যাস, পছন্দ-অপছন্দের নাম জানা যায়। একজন মানুষ যেমন বড় হয়, তেমনি মনের পরিপক্কতা বাড়ে, সম্পর্কের বয়সও বাড়ে। বুঝুন- মানুষের মন কত জটিল! অর্থাৎ সম্পর্কের সুখের সময় থেকে যেমন দুঃখ উপলব্ধি করা যায় না, তেমনি দুঃখের সময় থেকেও সুখ উপলব্ধি করা যায় না। তাই সম্পর্ককে সময় ও স্থান দুটোই দিতে হয়।
প্রতিটি মানুষ একে অপরের থেকে আলাদা। একই দৃষ্টি দিয়ে একই বস্তু দেখে। তিনটি অন্ধ হাতি দেখার গল্প আপনি নিশ্চয়ই জানেন। ঠিক যার জায়গা থেকে। তাই আপনার সঙ্গী যখন আপনার সাথে একমত হবেন, আপনি অন্তত একবার তার দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে বিচার করার চেষ্টা করুন।
আমি অনেক লোককে রাগ করে বলতে শুনি, ‘আমার সাথে কিছুই মেলে না। আমি কেন আমার জীবন আপস করব? ‘
শার্টের সঙ্গে টাই ম্যাচ, সালোয়ার কামিজের সঙ্গে স্কার্ফ ম্যাচ! সবকিছু কি একই রঙের? আপনি কি সবসময় একই রঙ পছন্দ করেন! বিভিন্ন রং বিপরীত না! কেন সব একই রং সঙ্গে বৈসাদৃশ্য এত জনপ্রিয়? চুম্বক কেন বিপরীত ধর্মকে আকর্ষণ করে?
আপনি সিরিয়াস টাইপ, তাই আপনার সঙ্গী; আপনি কিছু হিসাব ছাড়া জীবন উপভোগ করবেন? আপনার খারাপ মেজাজের সঙ্গীও তাই; আপনার পরিবারে কি শান্তি থাকবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি! যখন দুজন মানুষ আলাদা হয়, তখন একজন আরেকজনকে বোঝার চেষ্টা করে একঘেয়ে জীবন থেকে দূরে সরে যায়। তাই হয়তো মহান আল্লাহ উপর থেকে আমাদের জুটি বানিয়েছেন।
দাম্পত্য কলহ নিরসনে কোরানের নির্দেশনা
ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের উদ্দেশ্য শুধু জৈবিক চাহিদা মেটানো নয়; বরং বিবাহ হল পারস্পরিক দায়িত্বশীলতা, শ্রদ্ধা, ভালবাসা এবং আন্তরিকতার সম্পর্ক সহ একটি পবিত্র সম্পর্ক। ইসলাম বৈবাহিক সম্পর্ককে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টিকিয়ে রাখার আহ্বান জানায় এবং সেই লক্ষ্যে ধৈর্য, সহনশীলতা ও দায়িত্বশীল আচরণের শিক্ষা দেয়।
বিরোধ মীমাংসার জন্য কোরানের নির্দেশনা: বৈবাহিক সংকট সমাধানের জন্য কোরানের দুটি আয়াতে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ করেন, ‘পুরুষরা নারীর প্রভু।
কারণ আল্লাহ তাদেরকে একে অপরের থেকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এজন্যই পুরুষরা তাদের সম্পদ ব্যয় করে। তাই ধার্মিক স্ত্রীরা আনুগত্যের পিছনে এবং মানুষের দৃষ্টিতে আল্লাহ যা সংরক্ষণ করেছেন তা হেফাজত করে। নারীদের মধ্যে যারা অবাধ্য হওয়ার ভয়ে তাদের সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের বিছানা থেকে ফেলে দাও এবং তাদের প্রহার কর। যদি তারা আপনার অনুগত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ খুঁজবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহান, সর্বোত্তম। তাদের দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে আপনি একজনকে তার (স্বামীর) পরিবার থেকে এবং একজনকে তার (স্ত্রীর) পরিবার থেকে নিয়োগ করবেন। উভয়ে মীমাংসা করতে চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, খবরদার। (সূরা আন-নিসা, আয়াত 34-35)
স্বামীর অভিভাবক: উপরোক্ত আয়াতে পুরুষদেরকে অভিভাবক ও পরিবার-পরিচালক হিসেবে নারীদের উপর কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়েছে। অন্যথায়, নারীদেরও তাদের স্বামীর উপর এবং পরিবারে বিধিবদ্ধ অধিকার রয়েছে। তাই স্বামী কর্তৃত্ববাদী ও কর্তৃত্ববাদী আচরণ করবে না। পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে, ‘নারীদের ওপর পুরুষদের যেমন ন্যায়বিচার রয়েছে, তেমনি তাদের অধিকার রয়েছে। কিন্তু নারীর ওপর পুরুষের মর্যাদা আছে। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, সবচেয়ে জ্ঞানী। (সূরা বাকারা, আয়াত: 227)
যে দুটি গুণের কারণে কলহ সৃষ্টি হয়: আয়াতটিতে আল্লাহ আদর্শ স্ত্রীর দুটি গুণ উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্বামীর আনুগত্য ও সতীত্ব বজায় রাখা। বিবাদের আয়াতে এ দুটি গুণের উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ করছেন যে, অধিকাংশ দাম্পত্য কলহের জন্য অবাধ্যতা ও অনৈতিকতা দায়ী। তবে ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়কেই অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। ইরশাদ করেন, ‘মুমিন পুরুষদের বলুন যেন তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের গোপনাঙ্গের হেফাজত করে। … মুমিন নারীদের বলুন যেন তারা তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের গোপনাঙ্গ হেফাজত করে। (সূরা নূর, আয়াত: ৩০-৩১)
সংশোধনের জন্য করণীয়ঃ স্ত্রীর মধ্যে শরীয়ত বিরোধী কিছু থাকলে যা বিবাহিত জীবন যাপন করা সম্ভব নয়, স্বামী তাকে সংশোধনের চেষ্টা করবে। তিনি প্রথমে তাকে ভাল পরামর্শ দেবেন। যদি এটি কাজ না করে তবে এটি বিছানা আলাদা করবে এবং যদি এটি কাজ না করে তবে আপনি এটিকে আলতো করে মারতে পারেন। কুরআনের বর্ণনা থেকে এটা স্পষ্ট যে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে কেবল অক্ষমতার সময়ই মৃদু আঘাত করতে পারে এবং এটি অবশ্যই প্রশংসনীয় কিছু নয়; বরং ইসলাম স্ত্রীদের প্রতি ভালো ব্যবহারকে উৎসাহিত করেছে।
ইমাম জাসসাস (রহ.) মৃদু প্রহারের তিনটি শর্ত উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ এক. রাগ, বিরক্তি বা প্রতিশোধের জন্য আঘাত করবেন না; বরং তা সংশোধনের উদ্দেশ্যে স্ত্রীর জন্য কল্যাণকর বলে শাসন করবে।
দুই. ভাল পরামর্শ এবং বিছানা থেকে উঠার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে শুধুমাত্র হালকা আঘাত হতে পারে।
তিন. স্ত্রীর মুখমণ্ডল ও স্পর্শকাতর অংশে আঘাত করা যাবে না। এমনভাবে আঘাত করবেন না যাতে ক্ষত সৃষ্টি হয়, অঙ্গচ্ছেদের ভয় বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা হয়। তাকে শুধুমাত্র ছোটখাটো আঘাত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। (আহকামুল কুরআন লিল-জাসসাস : ৩/১৫)
আল্লামা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) মৃদু আঘাতের সংজ্ঞায় বলেন, ‘আঘাত শরীরে কোনো চিহ্ন বা চিহ্ন রাখে না। (তালিমুদ্দিন)
বিবাদ মীমাংসার জন্য দুই পরিবারের প্রচেষ্টা: স্বামী-স্ত্রী বিবাদ ও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার সময় তাদের স্বাভাবিক চিন্তাভাবনা, বিবেক ও অনুভূতি হারিয়ে ফেলতে পারে। তারা রাগ থেকে কল্যাণের দিকগুলি উপেক্ষা করতে পারে। তাই ইসলাম বিরোধ মীমাংসার ক্ষেত্রে দুই পরিবারের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। আইনবিদগণ বলেন, সালিসকারীরা বাস্তববাদী, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, পরোপকারী এবং সুস্থ মনের মানুষ হওয়া উচিত; যারা স্বামী বা স্ত্রীর কথায় প্রভাবিত না হয়ে রায় কার্যকর করতে সক্ষম স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। উভয় পক্ষের সালিসকারীরা যদি কল্যাণকর হয় এবং সমাধানের আশা করে, তাহলে আল্লাহ তাদের সমাধানের পথ দেখাবেন। ইরশাদ করেন, উভয়েই সমাধান চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, খবরদার। (সূরা নিসা: ৩৫)
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াপূর্ণ বিয়ে ভেঙে ফেলার ছুটি: অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াপূর্ণ বিয়ে ভেঙে ফেলাই ভালো। যদি কোনোভাবে স্বামী-স্ত্রী সমঝোতায় আসতে না পারে এবং একে অপরের প্রতি সন্তুষ্ট হতে না পারে, তাহলে ইসলাম অসুখী দাম্পত্য জীবন শেষ করার সুযোগ দিয়েছে। এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর ঝগড়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে অভিযোগ করলেন।
স্ত্রীকে মারধরের অনুমতি চাইছিলেন তিনি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে প্রহার করার অনুমতি না দিয়ে তাকে তালাক দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। প্রখ্যাত তাবেয়ী আতা ইবনে রাবিয়া (রহ.) বলেন, ‘স্ত্রী যদি তার স্বামীর আদেশ অমান্য করে তবে সে তাকে প্রহার না করে তার প্রতি তার ক্ষোভ প্রকাশ করবে। কাজী ইবনুল আরাবী (রহ.) এ মতকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছেন। (আহকামুল কুরআন লি-ইবনিল আরাবীঃ ১/৫৩৬)
স্বামী ও স্ত্রী দু’জন এর মাঝে মধুর ঝগড়া
তালাকের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার: ইসলামী শরীয়তে, নারীদেরকে আদালতের মাধ্যমে ‘খুলা’, তালাক তাফবীজ এবং তালাক দাবি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। খুলা হল স্ত্রীর দাবি অনুযায়ী স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের একটি চুক্তি বা চুক্তি। তাফবীজ তালাক হল স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের অধিকার প্রদান করা। স্ত্রী যদি বৈবাহিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে অনিচ্ছুক হয় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, তাহলে সে তাফবীজ খোলা ও তালা দেওয়ার অধিকার প্রয়োগ করবে। আর স্বামী তালাক দিতে অস্বীকার করলে বা তালাকের অধিকার প্রদান করলে স্ত্রী ইসলামিক স্টেটের আদালতে যেতে পারে। (আল-ফিকহুল ইসলামি ওয়া আদিল্লাতুহু, তালাক ও খুলা অধ্যায়)
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া ও সমঝোতা
মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্য রয়েছে। প্রত্যেকের আচরণ, আচার-আচরণ, চাওয়া-পাওয়া ও আকাঙ্খা ভিন্ন। দুটি মানুষের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই আমরা একসাথে গেলে মতভেদ হয়।
মানুষের দাম্পত্য জীবন দীর্ঘ। পূর্বোক্ত বৈশিষ্ট্যের কারণে বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতানৈক্য ও একগামীতা থাকাটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় তা সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। কিন্তু প্রকৃতির ভিন্নতা সত্ত্বেও শান্তিতে বসবাস করা সম্ভব; যদি আমাদের মধ্যে মানবতা থাকে। আপনি যদি আল্লাহ তায়ালার ভয়ে এবং পরকালে জবাবদিহিতে বিশ্বাসী হন স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। আর এ জন্য কুরআনের শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কুরআনের আলোকে জীবনকে আলোকিত করা।
কুরআনে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের পারিবারিক জীবন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। পরকালের শাস্তি এড়াতে পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে বাঁচাও যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর এবং তাতে রয়েছে শক্তিশালী স্বভাব ও শক্তিশালী ফেরেশতাগণ। ‘ (সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: 8)। একইভাবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুখে শান্তিতে সংসার জীবন অতিবাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া লাগানোর নকশা
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সুন্দরভাবে বসবাস কর। আপনি যদি তাদের অপছন্দ করেন তবে হতে পারে আপনি কিছু অপছন্দ করেন, অথচ আল্লাহ তায়ালা এতে (তোমাদের জন্য) অনেক ভাল জিনিস রেখেছেন। ‘ (সূরা নিসা, আয়াত নম্বর: 19)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে পরিপূর্ণ ঈমানদার সেই ব্যক্তি যে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে। আর তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি যে পরিবার থেকে উত্তম। (তিরমিযী, হাদিস নম্বর: 1172)।
এই সময়ে করোনায় পারিবারিক অশান্তি বেড়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। বর্তমানে এর অন্যতম কারণ আর্থিক ঘাটতি। তবে একা আর্থিক সংকটকে দায়ী করা যায় না। আমাদের শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ও পারিবারিক রীতিনীতিও দায়ী।
দাম্পত্য জীবনের অর্থনৈতিক দিক নিয়ে কোরআনে অনেক সুন্দর আলোচনা আছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ধনী ব্যক্তি (স্ত্রীর জন্য) তার সম্পদ অনুযায়ী ব্যয় করবে। যার আয় সীমিত, সে আল্লাহ যা দিবেন তা থেকে (তার সামর্থ্য অনুযায়ী) ব্যয় করবে। আল্লাহ তায়ালা কাউকে যে পরিমাণ সম্পদ দেন তার চেয়ে বেশি ব্যয় করার নির্দেশ দেন না। আল্লাহ তায়ালা কষ্টের পর সুখ দেন। ‘ (সূরা: তালাক, আয়াত নম্বর: 6)। এই আয়াতে বিবাহিত জীবনের অর্থনৈতিক বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে।
স্ত্রীর চাহিদা স্বামীর আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করবে:
অনেক স্ত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে চান। তিনি তার আশা এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য তার স্বামীর উপর চাপ দেন। স্বামীর আয়-ব্যয়ের দিকে তাকাবেন না। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এতটাই গুরুতর যে তারা তাদের স্বামীদের কষ্ট দিলেও তাদের ইচ্ছা পূরণ করে। স্ত্রীর ভরণ-পোষণের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা হলো, স্ত্রীর চাহিদা স্বামীর আর্থিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
স্বামী ধনী হলে স্ত্রীকে সেই অনুযায়ী তাকে সমর্থন করতে হবে, যদিও স্ত্রী গরীব কন্যা। স্বামী আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হলে স্ত্রীকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী ভরণ-পোষণ দেবেন, স্ত্রী ধনী পরিবারের মেয়ে হলেও। তাই স্বামীর অবস্থা না দেখে তার ইচ্ছা পূরণের জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা গ্রহণযোগ্য নয়। না সামাজিকভাবে না ধর্মীয়ভাবে। এতে দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বাড়ে।
অসহায় স্বামীর ঘরে ধৈর্য্য ধারণ করার সুবিধা
আল্লাহ তায়ালা সূরা তালাকের ৬ নং আয়াতে বলেন, “কষ্টের পর সুখ দাও”। কুরআনের এই আয়াত থেকে এটা স্পষ্ট যে সীমিত আয়ের একজন পুরুষ তার স্ত্রীর জন্য তার সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে। এতে স্ত্রীর জন্য অনেক সময় সমস্যা হতে পারে। তাই আল্লাহ তায়ালা মটরের বাণী প্রচার করছেন
স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করুন এবং তার মতামতকে গুরুত্ব দিন
দাম্পত্য জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মত বিনিময়। স্বামী-স্ত্রী পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজও করবেন। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা তৈরি হবে। একে অপরকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা গড়ে উঠবে না। একটি বিখ্যাত উক্তি আছে, ‘যে ব্যক্তি উপদেশ নিয়ে কাজ করে সে কখনো ব্যর্থ হয় না। আর যে মানুষ কারো সাথে পরামর্শ না করে নিজেই সবকিছু করে সে কখনো সফল হয় না।
‘বউ যেন কখনো মনে না করে যে আমাকে অবহেলা করা হচ্ছে। যাইহোক, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা স্ত্রীর নয়, স্বামীর হাতে। তিনি বিবেচনা করতে চাইলে স্ত্রীর মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্তও নিতে পারেন। কোরানে বলা হয়েছে, ‘যদি তারা তোমাদের সন্তানদের দুধ দেয়, তাহলে তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক দাও। আর এ ব্যাপারে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সাথে পরামর্শ করবে। (সূরা: তালাক, আয়াত নম্বর: 6)।
স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া
আয়াতের উদ্দেশ্য হল স্বামী ও স্ত্রী, যারা বর্তমানে কোন কারণে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। সেক্ষেত্রে সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ফি আদায় করতে পারবে। পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকা উচিত নয়। তাই আল-কুরআনের নির্দেশ হল পরামর্শ করে ঠিক করা। তবে বিবাদের কারণে ক্ষতি হবে না, বিয়ে থাকা অবস্থায় বিবাদ হলে যে পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে। তবুও, কুরআন আমাদের পরামর্শ করার নির্দেশ দেয়। তাহলে দাম্পত্য জীবনে দ্বন্দ্ব এড়াতে কাউন্সেলিংকে কতটা গুরুত্ব দিতে হবে?
দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে স্বামী-স্ত্রীর একে অপরকে সম্মান করতে হবে। কাউকে ছোট করার জন্য নয়। ছোট জিনিস এড়িয়ে চলুন। কোন কোন বর্ণনা অনুসারে যে শাসক সর্বদা তার প্রজাদের পিছনে থাকে সে প্রজাদের চরিত্র নষ্ট করে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। তাই স্বামী-স্ত্রীর একে অপরকে অনুসরণ করা উচিত নয়। আমরা যদি কোরান ও হাদিস অধ্যয়ন করি, তাহলে আমরা আরও নির্দেশনা পাব যা আমাদের দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে সাহায্য করবে।
দাম্পত্য জীবনে সহনশীলতা এবং সহানুভূতি প্রয়োজন
দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে হলে বিশ্বাসের প্রয়োজন। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা এবং সহানুভূতি ভালবাসাকে গভীর করে, সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে। ছেলে নাকি মেয়ে, অনেকেরই অকারণে সন্দেহ করার অভ্যাস আছে। এতে পৃথিবীর শান্তি নষ্ট হয়।
মোবাইল ফোন এভাবে বেজে উঠলে সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তির সাথে তিনি কীভাবে কথা বলেছেন – সবাই লক্ষ্য করবে এবং এক পর্যায়ে এই ছোট্ট বিষয়টি নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে বড় ধরনের তর্ক শুরু হয়। ফলে স্বামী-স্ত্রীর সুখ-দুঃখ নষ্ট হয়। তখন কেউ মুখ তুলে তাকায় না বা কারো সাথে কথা বলে না। বেচারা স্বামী হয়তো ঘর ছেড়ে বিছানায় চলে গেছে। বাড়ির মালিকরা সহজেই এই ধরনের সমস্যা সমাধান করতে পারেন। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে যত বেশি সততা, বিশ্বাস এবং নির্ভরযোগ্যতা থাকবে, পরিবার তত সুন্দর এবং সুখী হবে।
স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া নিয়ে ওয়াজ
যেহেতু স্ত্রী সন্দিহান তাই তাকে কৌতুক বলার দরকার নেই। সর্বদা সত্য বলুন, প্রয়োজনে তাকে সময়ে সময়ে ফোন তুলতে দিন। দেখবেন সন্দেহ কেটে গেছে। স্ত্রীর যেমন অযৌক্তিক সন্দেহ করা ঠিক নয়, তেমনি একজন স্বামীরও সন্দেহজনক কিছু করা উচিত নয়। স্বামীদেরও খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন বাইরে সময় কাটায় এবং সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটায়। স্বামী বাসায় এলে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া শেষ হবে। সেক্ষেত্রে কিছুক্ষণ মোবাইল বন্ধ রাখুন। এটা সত্যি যে মোবাইল ফোনের কারণে অনেক পরিবারে নানা ধরনের ঝগড়া হয়, যার মধ্যে একটি হল দাম্পত্য কলহ।
দাম্পত্যের বোঝাপড়া
খুব কম পরিবারই আছে যেখানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া নেই। আবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া কেন হবে, কখনো ঝগড়া হবে না তাও বলছি না। দুটি ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা, দুজন মানুষ মিলে একটি পরিবার গড়ে তোলে, মতের পার্থক্য থাকতে পারে, ছোটখাটো ঘরোয়া ঝগড়াও থাকতে পারে। আর অহংকার থাকাটাই স্বাভাবিক।
এ ধরনের ছোটখাটো দাম্পত্য কলহ নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। এটাই কাম্য। যদি বৈবাহিক স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া ব্যাপক আকার ধারণ করে, তাহলে এই ধরনের ঝগড়া মিটমাট করার জন্য আত্মীয়দের মধ্যে মধ্যস্থতা করা মোটেই ন্যায়সঙ্গত বা সম্মানজনক হবে না।
স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া দূর করার উপায়
দাম্পত্য কলহের ক্ষেত্রে, তাদের পক্ষে মীমাংসা করা ভাল। এরপরও পারিবারিক কলহ তিক্ততায় রূপ নিলে নিকটাত্মীয়কে ডেকে তা মিটিয়ে ফেলা যায়। যাইহোক, এই ধরনের মামলা মোকদ্দমা পর্যায়ে নিষ্পত্তি হয় না, না বিবাহবিচ্ছেদ দাম্পত্য কলহের রূপ নেয়। এটা কারো কাম্য নয়। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া সবচেয়ে সুন্দর হয় তাদের দুজনের মধ্যে যখন মান থেমে যায়। উল্টো এ ধরনের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া দাম্পত্য প্রেমকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
স্বামী স্ত্রী রাগ করে কতদিন পর্যন্ত কথা না বলে থাকতে পারবে?
সমাজ গবেষক ড. হামিদ আল-হাশিমি বিশ্বাস করেন যে সম্পর্কটি কার্যকর করার জন্য উভয় পক্ষেরই দায়িত্ব রয়েছে এবং যদি এটি ব্যর্থ হয় তবে তাদের এর দায় নিতে হবে। তিনি বলেন যে অনেক সময় এক পক্ষ কেবল সবকিছু ঠিক করতে চায় তবে অন্য পক্ষ একই থাকে এবং পরিবর্তনের যে কোনও প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়। যেকোনো সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য, উভয় পক্ষকে কীভাবে তা প্রতিরোধ করা যায় তা শিখতে হবে।
তাদের প্রায়ই কথা বলা উচিত, কোনো আপত্তিকর কথা বলা উচিত নয়, বলেন আল হামিদ। এই ধরনের আচরণ সবসময় পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। কাউন্সিলর আল হামিদ মনে করেন, সম্পর্ক উন্নয়নের একমাত্র উপায় তাদের দুজনেরই দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি। “তাদের একজন যদি অন্যকে কোণঠাসা করে, আপত্তি তোলে, তবে এটি কেবল খারাপ হবে। তাদের খোলাখুলি কথা বলতে হবে এবং সেই সময় শব্দ চয়নের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায়, তারা সম্পূর্ণ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে।”
তিনি বলেন, “স্বামী যদি তার স্ত্রীকে উপহার দিয়ে চমকে না দেন, তাহলে স্ত্রীকে প্রথমে কাজটি শুরু করতে হবে। সবসময় কাজ করার জন্য বসে না থেকে এটি শুরু করলে এটি অনেক বেশি কার্যকর হয়,” বলেন তিনি।
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কখনও হাল ছেড়ে দেওয়া, চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া,” তিনি বলেন, কিছু বিবাহিত দম্পতি এতটাই মানসিক এবং শারীরিকভাবে বিচ্ছিন্ন বোধ করে যে এটি বাস্তব বিবাহবিচ্ছেদের চেয়ে সম্পর্ককে বেশি আঘাত করে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া৷
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া জিনিস নিক্ষেপ. সাত দিনের জন্য ফেস-অফ। তারপর আবার একটু আদর। তারপর কিছুক্ষন গড়াগড়ি না খেয়ে আবার গড়িয়ে পড়লাম! এটা গড় দাম্পত্য জীবনের চিত্র। সত্যি কথা বলতে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মাঝে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া না হলে সম্পর্ক নষ্ট হয় কিভাবে! যারা মনে করেন স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ামানে দূরত্বে আসা, কিন্তু তারা ভুল। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হলো এমন মশলার মতো যা না পড়লে সম্পর্কের স্বাদ ভালো হয় না!
স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বিবাদ হলে কী করবেন
তার মানে কি দাম্পত্য কলহ ভালো স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া? উত্তরটি হ্যাঁ, তবে যতক্ষণ না আপনি একটি নির্দিষ্ট সীমা মেনে চলেন। বিতর্কের সময় যুক্তিতে জয়ী হওয়াই আপনার মূল উদ্দেশ্য কিনা তা দেখার বিষয়। যদি মতানৈক্য আপনার কাছে যুদ্ধের মতো হয়ে যায় এবং সেই যুদ্ধে জয়ী হওয়াই যদি আপনার প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠে, তবে সম্পর্কের বইয়ে তিক্ততা ছাড়া আর কিছুই জমা হবে না! আপনি যদি স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজে পান এবং তারপর শান্তির সাদা পতাকা তুলতে পারেন তবে আপনার স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার সাফল্য!