জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মধ্যেও বাংলাদেশের জন্য বিরাট সম্ভাবনা দেখছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, দেশে প্রবাহিত ৫৮টি যৌথ নদী বছরে প্রায় দুই বিলিয়ন মেট্রিক টন পলি বহন করে, পরে সেটি সমুদ্রের তলদেশে জমা হয়। এর ফলে সমুদ্র থেকে নতুন জমি জেগে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আজ রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে এক সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ‘বঙ্গবন্ধু: শাশ্বত বাংলার প্রতিরূপ’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে। এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনে নদীর অনেক প্রভাব। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমাদের সবার জীবনেই নদীর অনেক প্রভাব আছে।
ইতিমধ্যে অনেক জমি উদ্ধার হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের ভাসানচর সাত বছর আগে ছিলো না। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ছিলো না। এখন পরিপূর্ণভাবে সেখানে একটি নতুন উপজেলা গঠিত হয়েছে। সমুদ্র থেকে জমি উত্তোলনের বিরাট একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ২১০০ সালের বদ্বীপ পরিকল্পনায় বিষয়টিতে আলোকপাত করা হয়েছে। এটি নিয়ে আরও কাজ করা প্রয়োজন। কয়েক দশকের পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে সমুদ্র থেকে বিরাট একটি অংশ দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু নদীকে ব্যবহার করে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করার কথা ভাবতেন। সেই পথ ধরেই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার নদীপথ উদ্ধার হয়েছে, আরও নদীপথ উদ্ধারের জন্য ড্রেজার ও জাহাজ কেনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শরীরের শিরা-উপশিরার মতো নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদ-নদীও রক্ষা করা জরুরি। হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষের শিরা-উপশিরা দূষিত হয়ে শুকিয়ে গেলে মানুষ রুগ্ন হয়ে যায়। তেমনি নদী দূষিত হলে, দখল হলে বাংলাদেশও শুকিয়ে যায়।
নৌপথ উদ্ধারের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বড় নদীগুলোর ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’–র ৯৩ শতাংশ দেশের বাইরে ভারত, ভুটান ও নেপালে। অপরদিকে মাত্র ৭ শতাংশ বাংলাদেশের ভূমিতে। এজন্য নৌপথ উদ্ধারে আন্তঃদেশীয় পরিকল্পনা নিতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস–এর বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, দৈনিক অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মুসা, বিশিষ্ট পরিবেশবিদ আইনজীবী মনজুর মোর্শেদ, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান আহমেদ শামীম আল রাজী, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হোসেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক প্রমুখ।