মানসিক ভারসাম্যহীন শিকলবন্দি ভাই-বোন আপনার দিকে তাকিয়ে

মানসিক ভারসাম্যহীন শিকলবন্দি ভাই-বোন আপনার দিকে তাকিয়ে

১৩ বছর শিকলবন্দি হয়ে আছেন আম্বিয়া (২৫) ও তার ভাই রুস্তম আলী (২১)। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় দুজনকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার। নিঃস্ব, অসহায় বাবা-মা সন্তানের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না। প্রয়োজন কোনো হৃদয়বানের সহযোগিতা।

আম্বিয়া এবং রুস্তম জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিয়ালা গ্রামের সরকারী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা। বাবা রফিকুল ইসলাম দিনমজুর। মা রওশন আরা গৃহিণী। এই দম্পতির তিন ছেলেমেয়ে। কিন্তু বড় মেয়ে এবং মেজ ছেলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তাদের সুখের সংসারে এখন দুর্দিনের ঘোর আঁধার।

রফিকুল ইসলাম জানান, শুরুতে ছেলেমেয়ের চিকিৎসার জন্য টাকা-পয়সা খরচ করেছেন। কিন্তু ফল পাননি। উল্টো সঞ্চয়টুকুও শেষ হয়ে গেছে। এখন তিনি সর্বশান্ত অসহায় এক বাবা। প্রতিবেশীদের যাতে কোনো অনিষ্ট করতে না পারে এ কারণে হৃদয়ের টুকরো সন্তানদের এভাবে বেঁধে রাখেন বলে জানান তিনি।

রওশন আরা বেগম জানান, ১৩ বছর আগে আম্বিয়ার মানসিক ভারসাম্যে পরিবর্তন দেখা দিলে মেয়েকে বিয়ে দেন। ভেবেছিলেন স্বামীর সংসারে গেলে মেয়ে ভালো হতে পারে। কিন্তু ৬ মাস পার হতেই জামাই মেয়ের সঙ্গে ঘর-সংসার করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আম্বিয়াকে রেখে যান।

এই দুঃসময়ের মধ্যেই দেখা দেয় রুস্তমের রোগ। রোগের উপসর্গ বোন আম্বিয়ার মতোই। ছোট-খাটো কবিরাজ, ডাক্তার দেখানো হলেও রোগ ভালো হয়নি। অসহায় এই বাবা-মায়ের এখন একটাই চাওয়া- সমাজের কোনো বিত্তবান যদি অর্থ সহায়তা করতেন তবে উন্নত চিকিৎসা করাতেন। প্রতিবেশী রাবেয়া আক্তার, আলোমা খাতুন, তমিজউদ্দিন, হাতেম আলীও মনে করেন, উন্নত চিকিৎসা করলে দুই ভাই-বোন সুস্থ হয়ে উঠবেন।

এ প্রসঙ্গে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভাই-বোনের উন্নত চিকিৎসার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *