সব সমস্যা আপনাকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য আসে না। কিছু সমস্যা আসে আপনাকে রবের কাছাকাছি হওয়ার জন্য। আবার কিছু সমস্যা আসে যা আআপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, আপনার খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল। কিন্তু না। আপনি হয়তো কাল বা পরশু কিংবা কয়েক বছর পর হলেও বুঝতে পারবেন, ঐ সমস্যাটা আপনার জন্য রব প্রদত্ত আশীর্বাদ ছিল। যা আপনি সেই সময় ঠাওর করতে পারেন নি।
তো যাই হোক, আসুন আপনার সমস্যা নিয়ে কিছু কথা বলি।
প্রথমত যদি আপনার মনে হয় প্রবলেমটা খুব বেশি জেঁকে বসেছে তবে অবশ্যই আপনাকে অবশ্যই একজন ভালো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
আর প্রবলেম যদি ততটা জটিল না হয়, তবে আপনাকে আমি কিছু পরামর্শ দিতে চাই। চাইলে এপ্লাই করে দেখতে পারেন।
(বলে রাখি, আমি কিন্তু ততটা ইবাদতগুজার এখনো হতে পারিনি। আমি গাফেল। আপনাকে যা উপদেশ দিচ্ছি তার সবটা আমি নিয়মিত করি না। হয়তো আগে করতাম বা মাঝেসাঝে করতাম। এটার দায়ভার আমার। আপনি চাইলে এভাবে চলে দেখতে পারেন।)
১। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কন্টিনিউ করবেন।+ তাহাজ্জুদ। আপনি হয়তো জানেন না, তাহাজ্জুদের নামাজ মেন্টালি প্রবলেমগুলো অনেকটাই রিলিফ করে। এটা আমি একটি সাইকোলজিক্যাল বইয়ে পড়েছিলাম। যেখানে অনেকগুলো রোগীদের নিয়ে একটি পরীক্ষা করে সন্তোষজনক রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছিল।
২। সময় নিয়ে কুরআনের বাংলা অনুবাদ শেষ করুন। তাতে আপনার উপর আল্লাহর রহমতের বাণী আপনাকে সান্ত্বনা দিবে। আপনি জীবন ও মৃত্যুর মাঝে ব্যালেন্স করতে পারবেন। আশা করা যায়, মৃত্যু ভয় কাটিয়ে উঠতে পারবেন। যদিও আমাদের সবাইকে একটি মরতে হবে। আর মৃত্যুকে স্মরণ করাও ভালো লক্ষণ। তবে এটা মাত্রাতিরিক্ত হলেই কেবল সমস্যা।
৩। আপনি কোনো ভালো ক্বারীর তিলাওয়াত শুনবেন। ধরুন শুয়ে আছেন, কিছুই ভালো লাগছে না। হেডফোন কানে লাগিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত শুনুন। মনোযোগ সরিয়ে ফেলবেন না। এটা এক প্রকার মেডিটেশন।
৪। রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাহ শুনুন। রেইন ড্রপস মিডিয়ায় সীরাহর সিরিজ আছে। সেটা আমার কাছে বেস্ট মনে হয়।
৫। মুহাম্মাদ হবলস, তারিক জামিল, মুফতি মেন্ক এরকম অনেক ভালো ভালো উস্তাদের লেকচার শুনুন।
৬।জিকির করুন। চলতে, ফিরতে, উঠতে বসতে। সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লহ, আল্লাহু আকবার। বিশেষ করে আস্তাগফিরুল্লাহ ও দরুদ। আপনি হয়তো জেনে থাকবেন আস্তাগফিরুল্লাহ অনেক সমস্যার সমাধান এনে দেয়।
৭। প্রতিটি কাজ করার আগে নিয়তকে শুদ্ধ করে নিন। তাহলে আপনার সব কাজই ইবাদতে পরিণত হবে, ইন শা আল্লাহ এবং আপনি চাইলেও খারাপ কাজের দিকে পা বাড়াতে পারবেন না। কোনো কাজ করার আগে ভাবুন, আমাকে আল্লাহ দেখছে।
৮। আপনি কিছু ভালো বই পড়ুন। ব্যস্ত থাকবেন সবসময়ই। আর অবসর পেলেই বই পড়বেন। যাতে আপনাকে আপনার মন কোনো দুঃখজনক পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে আপনাকে মানসিকভাবে দূর্বল করতে না পারে।
আপনি চেষ্টা করে দেখুন। মাত্র ৩ সপ্তাহ কন্টিনিউ করলেই আপনি উত্তম ফলাফল পাবেন বলে আশা রাখি ইন শা আল্লাহ।
লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া