বর্তমান সময়ে প্লাস্টিক একটি সমস্যার নাম কারণ প্লাস্টিক সহজে পচে না।আবার প্রতিবছর যে পরিমাণ প্লাস্টিক উৎপাদিত হয় তার মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ রিসাইকেল করা সম্ভব হয়;বাকি ৯০ শতাংশ পরিবেশেই বর্জ্য আকারে থেকে যায়।আর এই প্লাস্টিকের শেষ আবাসস্থল হয় কিন্তু সমুদ্রেই।বর্তমানে যা অবস্থা দেখা দিয়েছে সমুদ্রে জীব এর চেয়ে প্লাস্টিকের পরিমাণ বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।আর কিছু বছর পর দেখা যাবে মাছ তথা সামুদ্রিক প্রাণী থেকে প্লাস্টিক ই বেশি থাকবে।প্লাস্টিক গুলো পচে যেতে লাগে বহু বছর।ততদিন এগুলো পরিবেশের ক্ষতি করবে।সাম্প্রতিক এক রিসার্চ থেকে জানা যায় সমুদ্রে প্রতি বছর ৮০ লক্ষ টন প্লাস্টিক ফেলা হয়।আজকাল শিল্পকারখানার বর্জ্য,তেল,লঞ্চ,সমুদ্রে চলা যানবাহন গুলো থেকে প্রতিনিয়ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে যা পানির সাথে মিশে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে।এই পানিগুলোতে বসবাসরত জীবগুলো এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।এছাড়াপ্লাস্টিকের ব্যাগ, প্লাস্টিকের কন্টেইনার, প্যাকেজিং ড্রেইনের মাধ্যমে স্থানীয় খালে বা জলাশয়ে পড়ে, সেখান থেকে নদীতে, সবশেষ সমুদ্রে হয় প্লাস্টিকের স্থান।হাইজিন পণ্য, প্রসাধনী আর ওয়াশিং মেশিনে দেওয়া কাপড় থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক ড্রেনে যায়, সেখান থেকে সমুদ্রে। এভাবে পৃথিবীতে মানুষের কাজে ব্যবহৃত প্রায় ৮০ শতাংশ প্লাস্টিকই সমুদ্রে মিশ্রিত হচ্ছে। এভাবে প্রশান্ত মহাসাগরে বিশাল প্লাস্টিকের স্তূপ তৈরি হয়েছে।একে বলা হয় দ্যা গ্রেট প্যাসিফিক হগারবেজ প্যাঁচ। এর আকার ১ কোটি ৬০ লাখ স্কয়ার কিলোমিটার। জার্মানির চেয়ে আকারে সাড়ে ৪ গুণ বড় এই ময়লার স্তূপ। এখানে মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে শুরু করে বড় আকারের প্লাস্টিকপণ্যে সয়লাব। প্যাসিফিক রিম অঞ্চলের সব দেশের আবর্জনা মিলে তৈরি হয়েছে এই স্তূপ।এমনটা চলতে থাকলে জলজ প্রাণীগুলো খাবার পাবে না।প্লাস্টিক খেয়ে বেঁচে থাকতে চাইবে যা অত্যন্ত বিপদজনক।কারণ প্লাস্টিক খাদ্যনালীতে আটকে যাবে,অন্য কোনো খাবার খেতে পাবে না।ফলে খাদ্যের অভাবে মারা যাবে।গবেষণা করে দেখা গেছে, প্লাস্টিকে থাকা কেমিক্যাল তাদের প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।এতে ভবিষ্যতে জলজ জীব বিলুপ্ত হতে পারে।এমন ক্ষতির মুখে যাতে পড়তে না হয় সেজন্য আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে।বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইকেল ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে।প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।পলিস্টার,নাইলন জাতীয় পোশাক পরিধান করা যাবে না।নিজে তো প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না সাথে অন্য কেউ ও যাতে ব্যবহার না করে সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে,প্রয়োজনে তাদের প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে।সর্বোপরি,আমাদের সকলকে এক যোগে কাজ করতে হবে।
