প্রেমে জড়ালো না তো আপনার সঙ্গী

প্রেমে জড়ালো না তো আপনার সঙ্গী

বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি আকর্ষণ একটি প্রাকৃতিক বিষয়। এই আকর্ষণের টানে অনেকেই কোনো সম্পর্কে থাকা অবস্থায় নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। আর বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও বিভিন্ন চ্যাটিং অ্যাপ ব্যবহারের ফলে নারী-পুরুষ একে অপরের সঙ্গে সহজেই পরিচিত হতে পারছেন। এতে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতাটাও বাড়ছে দিনকে দিন। অনলাইনে এই প্রেমের একটি নামও রয়েছে—‘সাইবার অ্যাফেয়ার’।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তির এই যুগে যে কোনো সময়েই আপনার সঙ্গী জড়িয়ে পড়তে পারেন সাইবার অ্যাফেয়ারে। আর এর শেষ ফল হিসেবে পুরোপুরি ভেঙে যেতে পারে বহুদিনের সম্পর্ক।

মনোবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সাইবার অ্যাফেয়ার সব সময় গোপনে আর চুরি করে করা হয়। এ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে পুরোনো সঙ্গীর প্রতি অনুভূতি ও শারীরিক আকর্ষণ কমে যায়। এতে ভেঙে যায় পুরোনো সঙ্গীর সঙ্গে বিশ্বাসের জায়গা। আর যে জুটির সঙ্গে এমনটা ঘটে, তারা মানসিকভাবে অনেক ভেঙে পড়েন। যার প্রভাব পড়ে শরীরেও। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে বেশ বেগ পেতে হয় তাদের।

সঙ্গীর সাইবার অ্যাফেয়ার কি একেবারেই চোখের আড়ালে থাকে? এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ড. সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় নামের এক মনোবিজ্ঞানী। তিনি বলেন, সাইবার অ্যাফেয়ারের অন্যতম প্রধান কারণ বর্তমান সম্পর্কে অনীহা সৃষ্টি হওয়া। এ ক্ষেত্রে আগে থেকেই অনেক সংকেত পাওয়া যায়। কখনো সঙ্গীর মুখের ভাষাতেই বোঝা যায় সাইবার অ্যাফেয়ারের লক্ষণ। আবার এটা অনেক সময় আপনার প্রিয়জনের আচার-আচরণেই বুঝতে পারবেন। সম্পর্ক বাঁচাতে এগুলোর প্রতি সব সময় নজর রাখতে হবে।

এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী পুরবী শাহ বলেন, মানুষ বর্তমানে এমন এক পর্যায়ে রয়েছে, যে কোনো কিছুই তাদের সন্তুষ্ট করতে পারে না। এটা চাকরি হোক কিংবা সংসার। সব সময়ই সে নতুন কিছু খোঁজে, সেটা বর্তমান সঙ্গীকে ধোঁকা দেওয়াই হোক না কেন। প্রতিদিন আপনি যে সঙ্গীকে দেখছেন, তার প্রতি অনীহা সৃষ্টি হতেই পারে। এটা ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে আরও বেড়ে গেছে। এর থেকে বাঁচার জন্য অনলাইনকে একটু দূরে সরিয়ে বই পড়া ও খেলাধুলার দিকে নজর দিতে হবে।

পুরবী শাহের মতে, সাইবার অ্যাফেয়ার মানেই শারীরিক সম্পর্ক নয়। একজন সঙ্গীকে লুকিয়ে অন্য কারো সঙ্গে গোপনে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে পারে। অনেক সময় রাত গড়িয়ে গেলেও চলতে থাকে অনলাইনে চ্যাট। এ ক্ষেত্রে শুধু আবেগ কাজ করে। তবে এ কাজটিও কম দোষের নয়।

এই সমস্যা এড়ানোর জন্য কিছু সাধারণ পরামর্শও দিয়েছেন পুরবী। তিনি জানান, জীবনে ব্যস্ততা থাকবেই। তার মানে এই নয় যে সেই ব্যস্ততা আপনার ব্যক্তিগত জীবনকে গ্রাস করে ফেলবে। এ জন্য সঙ্গীকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে তার পছন্দ-অপছন্দ ও চাওয়া-পাওয়াগুলোর দিকে। আরও শক্ত করে তুলতে হবে বিশ্বাসের জায়গাগুলো। সময় কাটানোর জন্য অনলাইনকে কম গুরুত্ব দিয়ে, বই পড়া, সঙ্গীর সঙ্গে গল্প, একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়া ও খেলাধুলা করাটা বেশি জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *