জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, অর্থমন্ত্রী সব সময় অর্থ পাচার অস্বীকার করতেন। কিন্তু এবার তিনি পাচারকে কেবল স্বীকৃতি দেননি, ভালো কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সাধারণ আলোচনায় এ কথা বলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান।
বিদেশে পাচার করা অর্থ কর দিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়ার যে প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী করেছেন, তার বিরোধিতা করে জি এম কাদের বলেন, কর দিলেই অবৈধ অর্থ বৈধ হয়ে যাবে। এটা থেকে তো দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন হচ্ছে না। বরং দুষ্টের পালন ও শিষ্টের দমন হচ্ছে। এটা সুশাসনবিরোধী। এটা সমর্থন করা যায় না। অর্থ পাচারকারীরা কেউ ফেরত আনবেন না। বরং পাচার যাতে না হয় এবং পাচারকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে সঠিক কাজ।
প্রস্তাবিত বাজেটকে ঋণনির্ভর ও উচ্চাভিলাষী বাজেট আখ্যা দিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বাজেটের সব খাতে ব্যয় বেড়েছে কিন্তু কোনো দর্শন চোখে পড়েনি। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতিতে এই বড় বাজেট অস্বাভাবিক। উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়ন, রাজস্ব আদায় ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন না।
ঋণের বোঝা বাড়বে, মন্তব্য করে জি এম কাদের বলেন, আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অবনতিশীল। বেকারত্ব বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রা সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখার দিকনির্দেশনা নেই বাজেটে।
বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার সুযোগ দিতে যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তার বিরোধিতা করে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এই প্রস্তাব অনৈতিক ও বেআইনি। দেশদ্রোহীদের পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। বিদেশে যাতে টাকা পাচার না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল।
বাজেট বাস্তবধর্মী: মতিয়া চৌধুরী
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, কঠিন সময় মোকাবিলায় অর্থমন্ত্রী একটি বাস্তবধর্মী বাজেট দিয়েছেন। দেশের অর্থনীতি সচল আছে। একসময়ের বিশ্বের দশম দরিদ্রতম দেশ থেকে বাংলাদেশ এখন ৪১তম অর্থনীতির দেশ। দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। তিনি রাজস্ব আয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যারা কর দিতে পারে, তারা দেয় না। আর যারা দেয়, তাদের ওপর করভার বেশি হয়। অতিধনী ও ধনী ব্যবসায়ীরা কর অব্যাহতির জন্য আকুল আবেদন ছাপান, এটা বন্ধ করার জন্য তিনি তাঁদের প্রতি আহ্বান জানান।