এই অংশে আয়রা ও আয়ানের মধ্যকার এক আন্তরিক মুহূর্ত ফুটে উঠেছে। আয়রা অসুস্থ থাকার পর জেগে ওঠে এবং দেখে আয়ান তার পাশেই বসে আছে, হাত না ধুয়ে। আয়ানের উদ্বিগ্নতা ও যত্ন আয়রাকে আশ্বস্ত করে। আয়ান ভয় পেয়েছিল, কিন্তু আয়রার সুস্থতা দেখে সে স্বস্তি অনুভব করে।
এরপর আয়ান পার্টির পরিকল্পনা করে, কিন্তু আয়রা তাকে আগে খেয়ে নিতে বলে, কারণ সে নিজে কিছুই খায়নি। আয়ান চায় একসঙ্গে খেতে, তবে আয়রা একা বিশ্রাম নিতে চায়। শেষ পর্যন্ত আয়ান বুঝতে পারে যে, ওখানে ফিরে গিয়ে খাওয়াই ভালো হবে, এবং সে তাই করে। এই অংশটি দুজনের সম্পর্কের যত্ন, সংবেদনশীলতা ও বোঝাপড়ার প্রতিচিত্র তুলে ধরে।
বিছানা থেকে উঠে বসে দেখলাম আয়ান পাশেই একটা চেয়ার নিয়ে বসে আছে এখনো। হাতটা পর্যন্ত ধোয়নি। মাংসের চর্বি লেগে হাত শুকিয়ে গেছে। আমার উঠে বসা দেখে একটু এগিয়ে এসে বললো,
-আয়রা, এখন কেমন লাগছে তোমার?
:বেশ ভাল। তোমার হাতটা তো শুকিয়ে গেছে। ধুয়ে ফেলোনি কেন? যাও ধুয়ে এসো।
-ওহ্, তাইতো! তোমার অবস্থা দেখে আসলে আমি ভড়কে গিয়েছিলাম। একটু ভয়ও পাচ্ছিলাম। এখন তোমার ভাললাগছে জন্য আমারও শান্তি লাগছে। হাতটা ধুয়ে আসি তাহলে।
আমি মাথা নাড়ালাম। সে চলে গেল হাত ধুতে। এরপর হাত মুছতে মুছতে এসে বললো, -প্লানটাতো ভেস্তে গেল। তার থেকে সন্ধ্যায় একটা পার্টি দিলে কেমন হয়?
:সে না হয় পরে ভাবা যাবে। তুমি এখন গিয়ে খেয়ে আসো। আমার জন্য তো কিছুই খেতে পারলে না। কষ্ট করে রান্না করেছো, না খেলে স্বার্থকতাটা কোথায়?
-তুমি খাবে না? তুমিও তো তেমন কিছুই খেতে পারোনি। আমি এখানে নিয়ে আসি। তারপর দু’জনে খাবো, কেমন?
:নাহ্, আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। তুমি খেয়ে আসো নাহলে এখানে এনে খাও। তবে আমার মনে হয় ওখানে গিয়ে খাওয়াটাই বেটার হবে। হুট করে চলে আসায় সব হয়তো একটু খারাপ লেগেছে। তুমি ম্যানেজ করো গিয়ে। আমি আবার একটু চোখ বুঝবো।
বলেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম আবারও। সে খানিকটা নিজের সাথে বোঝাপড়া করল এবং যাওয়াটাই তার কাছে ন্যায়সঙ্গত মনে হওয়ায় সে চলে গেল।
.
সেদিন সন্ধ্যায় ছোটখাটো করে একটা জাঁকজমকপূর্ণ পার্টির ব্যবস্থা করে আয়ান। সবার সামনে ঘোষণা দেয় “আমি মা হতে যাচ্ছি।” কি যে লজ্জা পেয়েছিলাম। লজ্জায় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ধরেছিলাম। সবার খুশি যেন ধরে না।
মা তো আমাকে জড়িয়ে ধরে একদম কেঁদেই দিল। একে একে সবাই এসে অভিনন্দন জানালো। সবাই মিষ্টিমুখ করালো।
[চলবে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya