“নিয়তি” পর্ব-২

ছোটফুপি ট্রেটা হাতে নিয়ে উঠতেই দেখলেন, আলেয়া খালা(আম্মুর কাজে সাহায্য করেন) আমাদের দিকে আসছেন। উনি এই গরমেও কালো বোরখা পরে আছেন। ছোটফুপি আলেয়া খালাকে বললেন, “আলেয়া! ছাদে এগুলো দিয়ে আসো তো।” আলেয়া খালা হেসে বললেন, “বুজান! একনা সবুর করা নাগবে যে! মুই খালি হাত মুজ্যা আর পাও মুজ্যা পড়ি আইসো। তারপর নিয়া যাইম আলা।”

ছোটফুপি আচ্ছা বলে আবারও আড্ডায় যোগ দিলেন। বাকী ট্রেটার ফলমূল ফুপিরা আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে পেটে চালান দিচ্ছেন। আমি একটু অন্যমনস্ক হয়ে এক টুকরা আপেল হাতে নিলাম। তবে এবার আর আমি আড্ডায় মনোযোগী হতে পারলাম না। আলেয়া খালার এই ছোট্ট কথা, আমাকে বেশ ভাবালো।

আমি ঐ একটা কথাই ভাবছি,”ছাদে উনি হাতমোজা-পামোজা ছাড়া যেতে চাইলেন না, আর আমি তো মাথায় কাপড়টাও দেই না।” এরকম আরো অনেক চিন্তা আসতে লাগলো মনে।

সবাই আড্ডা ছেড়ে উঠে গেছে। খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। বাট আমি সোফায় পিঠ এলিয়ে দিয়ে চিন্তার আবহে ডুবে গেছি। আয়ান এসে আমার দুই কাঁধে হাত রেখে আয়রা বলে আলতো ঝাঁকুনি দিতেই, আমি চমকে উঠলাম।

আয়ান: কি হয়েছে তোমার? সবাই কতক্ষণ থেকে ডাকাডাকি করছে! তুমি এখানে বসে কি চিন্তা করছিলে? আমাদের প্লানটা ভুলে গেছ? সবাই খাবার নিয়ে বসে আছে তো।
আমি: আরে নাহ্। তেমন কিছু না। হুম প্লানটা মনে আছে। চল খেতে যাই।

দু’জনেই খেতে চলে গেলাম। যাবার সাথে সাথে একেকজন প্রশ্ন শুরু করে দিল। তখন কেন এলাম না, এত ডাকাডাকি শুনতে পাইনি কেন, কী করছিলাম ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি চুপ করে দাঁড়িয়েই রইলাম। মাথার মধ্যে সেই চিন্তার রেশ এখনো রয়ে গেছে। আমি জোর করে সেই চিন্তাকে মাথা থেকে বের করতে চাচ্ছি। তারই উদ্দেশ্যে মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলাম।

একটু হেসে বললাম, “এত প্রশ্নের উত্তর একসাথে কীভাবে দিব? অনেক সময় লাগবে তো! এরই মধ্যে তোমরা সব খাবার সাবাড় করে ফেলবে। আর আমি শুধু বলেই যাব বলেই যাব? হুহ্! তা হবে না। খালি কথায় চিড়ে ভিজে না, মনে রাখো সবাই।”

হো হো করে হাসতে শুরু করে দিয়েছে প্রত্যেকে।
[চলবে]

Writer: Mahazabin Sharmin Priya

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *