ছয় বছর ধরে এক্স-রে মেশিন নষ্ট দুর্ভোগ

ছয় বছর ধরে এক্স-রে মেশিন নষ্ট, দুর্ভোগ

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি ছয় বছর আট মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এক বছর আগে স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন একটি এক্স-রে মেশিন সরবরাহ করে। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই মেশিনও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিক থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে প্রায় ৫৪ জন রোগী আসে চিকিৎসা নিতে। উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের রিফাত আহমেদ (৩৮) গতকাল বেলা দুইটার দিকে বলেন, অটোরিকশা থেকে পড়ে তিনি হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছেন। এখন তিনি জেলা শহরের প্রাইভেট ক্লিনিকে এক্স-রে করাতে যাচ্ছেন।

আসমা গ্রামের গৃহিণী আরিফা বেগম (৫৫) বলেন, গত সোমবার বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যান। জেলা শহরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে এক্স-রে করান। এতে তাঁর ৪৮০ টাকা দিতে হয়েছে। তবে শহরে আসা-যাওয়ার ভাড়া সব মিলে খরচ হয়েছে প্রায় হাজার টাকা। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মেশিনটি বিকল হয়। পরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০২০ সালে নতুন মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ত্রুটি থাকায় তা চালু করা যায়নি। রোগীরা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন ঠিক থাকলে তাঁরা দুই-তিন গুণ কম খরচে পরীক্ষা করাতে পারতেন। দিনের পর দিন তাঁদের ভোগান্তি হচ্ছে। অথচ মেশিনটি ঠিক করা হচ্ছে না।

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের রেডিওগ্রাফার আমিনুল ইসলাম, সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল মেশিনে এক্স-রে করাতে প্রতি প্রিন্ট ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের মে মাসে একটি এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। দীর্ঘদিন বাক্সবন্দী থাকার পর ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে লোক নিয়োগ হলে মেশিনটি চালু করা হয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে মেশিনটি বিকল হয়। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ) মেশিনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।

২০২০ সালের আগস্টে স্বাস্থ্য বিভাগ বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন একটি অ্যানালগ এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বিভিন্ন যন্ত্রাংশে ত্রুটি থাকার কারণে নতুন মেশিনটি চালু করা যায়নি। বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাঈনুল হক বলেন, এই উপজেলায় ১ লাখ ৮৫ হাজারের মতো লোকের বসবাস। হাসপাতালের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় শহরে গিয়ে রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এক্স-রে মেশিনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরেও জানানো হয়েছে। সিভিল সার্জন মো. সেলিম মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়েছে।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *