তারা চোর জুটি। মানুষের বাসা-বাড়ি থেকে চুরি করেন স্বর্ণালঙ্কার। তা বাজারমূল্যের অর্ধেক দামে কিনে নেন এক স্বর্ণকার। বিনিময়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন। তাদের অনুপস্থিতিতে পরিবারের ভরণ-পোষণ করেন। অর্থসংকটে থাকলে টাকা দিয়ে সহায়তা করেন। এমন চোর জুটি পোষার প্রমাণ মিলেছে চট্টগ্রামে। চোর জুটি ও তাদের পালনকারী স্বর্ণকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে নগরের কোতোয়ালী থানার ফিরিঙ্গীবাজার ও হাজারী গলি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
দুই চোর হলেন- চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার মাসুন্দা গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে মো. শরিফ ও কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার নুরু মিয়ার বাড়ির বাকশিমুল গ্রামের মো. বাবুলের ছেলে মো. আবদুল জলিল। গ্রেপ্তার স্বর্ণকার হলেন- চন্দনাইশ থানার বরমা গ্রামের বনিকপাড়ার প্রণব ধর। নগরের কোতোয়ালী থানার হাজারী লেইনে তার স্বর্ণের দোকান রয়েছে।
কোতোয়ালী থানার উপ পরিদর্শক মোমিনুল হাসান জানান, গত কয়েকমাসে নগরের নন্দনকানন, রহমতগঞ্জ ও সিরাজউদ্দৌলা রোডে তিনটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। এসব ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুইজন চোরকে শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে শরিফ ও জলিল চুরির জন্য রিকশা নিয়ে বের হলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরির কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
কোতোয়ালী থানার এসআই মৃণাল কান্তি মজুমদার জানান, সন্ধ্যায় রিকশা নিয়ে বের হন তারা। কোন বাসায় বাতি না জ্বললে সেটিকে টার্গেট করেন। রাস্তায় রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে পাহারা দেন শরিফ। সুযোগ বুঝে বাসার তালা ভেঙে ঢুকে পড়েন জলিল। এরপর বাসার মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিয়ে রিকশায় চম্পট দেন তারা।
কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দীন বলেন, ‘স্বর্ণকার প্রণব ধরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সখ্যতা দুই চোরের। দুইজনের চুরি করে আনা স্বর্ণ তিনি অর্ধেক দামে কিনে নেন। পরে বেশি দামে বিক্রি করেন। তাদের সংকটে টাকা দিয়ে চুরির কাজে বিনিয়োগ করেন তিনি। দুই চোরকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রণব ধরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে শরিফ নগরের বিভিন্ন থানায় পাঁচবার ও জলিল দুইবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জামিনে বেরিয়ে আবারও পুরনো পেশায় ফিরে যান তারা।’