চরভদ্রাসনে টেঁটা দিয়ে মারা হলো রাসেল ভাইপার

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে এবার টেঁটা দিয়ে মারা হলো পাঁচ ফুট দৈর্ঘ্যের বিষধর রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। চর হরিরামপুর ইউনিয়নের আবদুল হাই খানের হাটসংলগ্ন একটি ধানখেতে আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে সাপটিকে দেখা যায়। দেখার পর আতঙ্কিত এলাকাবাসী টেঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে সাপটি মেরে ফেলেন।এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি একই ইউনিয়নের আমিন খাঁর ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দারা একটি চন্দ্রবোড়া সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলেন। সাপটি আনুমানিক সাড়ে চার ফুট লম্বা ছিল।প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চর শালিপুর পশ্চিম গ্রামের শেখ মোশারফ (৪৩) সেচ দেওয়ার জন্য আজ সকালে তাঁর ধানখেতে যান। এ সময় তিনি সাপ দেখে চিৎকার করেন। তাঁর চিৎকারে পাশে কাজ করতে থাকা অন্য কৃষকেরা এগিয়ে এসে সাপটি দেখতে পান। পরে আতঙ্কিত জনতা টেঁটায় বিদ্ধ করে সাপটি মেরে ফেলেন। পরে সাপটি আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।ছবি দেখে সাপের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক ইব্রাহিম আল হায়দার।

তিনি বলেন, এটি বিষধর রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। আইইউসিএন বাংলাদেশ ২০০২ সালের নিরীক্ষায় সাপটিকে বাংলাদেশে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করে। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালে, কারও কারও মতে ২০০৯ সালে পুনরায় রাজশাহীর চরাঞ্চলে সাপটি দেখা যায়। সম্প্রতি এই সাপ পদ্মা ও মেঘনা নদীর তীরবর্তী বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম জেলায় দেখা গেছে। এই প্রজাতির সাপ নিউরোটক্সিক ও হিমোটক্সিক বিষ ধারণ করে। এ প্রজাতির সাপের দংশনের ফলে প্রাথমিক অবস্থায় স্থানটি ফুলে যায়, ধীরে ধীরে স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনি বিকল হয়ে পড়ে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

ইব্রাহিম আল হায়দার আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং অধিকাংশ জেলা সদর হাসপাতালে এ সাপের বিষের প্রতিষেধক পাওয়া যায়। তাই এই সাপের দংশনের শিকার রোগীকে অতি দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া গেলে মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে চরভদ্রাসন এলাকায় চন্দ্রবোড়া সাপ দেখতে পাওয়া যায়। ২০১৮ ও ১৯ সালে এ সাপের দংশনে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত এই সাপের দংশনে ৮ থেকে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটার প্রতিষেধক থাকায় সাপের দংশনে মৃত্যুর হার কমে আসছে।উপজেলা বন কর্মকর্তা সালাহ্ উদ্দীন বলেন, টেঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে রাসেল ভাইপার মেরে ফেলার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। একটি প্রশিক্ষণ নিতে তিনি ঢাকায় যাচ্ছেন। ঢাকা থেকে ফিরে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন।

By নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *