আমরা জানি, সূর্যের আলো সাতটি রঙের সমাহার। এই রংগুলোর প্রথম অক্ষর পরপর সাজিয়ে বলা হয় ‘বেনীআসহকলা’ অর্থাৎ বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। ইংরেজিতে বলে ‘VIBGYOR’। এখানে ৭ সংখ্যাটি তাৎপর্যপূর্ণ। সেই প্রাচীন কাল থেকেই সাত দিনে সপ্তাহের হিসাব চালু হয়েছে। আমরা আরও জানি, বিশ্বের সপ্ত আশ্চর্যের কথা। তা ছাড়া, সাত সমুদ্র, সাত মহাদেশ এবং সর্বোপরি ‘সাত ভাই চম্পা’—এগুলো সবই ৭-এর মাহাত্ম্য প্রকাশ করে।
প্রাচীন কাল থেকে মানুষের ধারণায় ৭ সংখ্যাটি সৌভাগ্যের প্রতীক বলে চিহ্নিত হয়েছে বলেই হয়তো এতগুলো ঘটনায় বারবার ৭ সংখ্যাটির আবির্ভাব ঘটেছে। ঠিক কী কারণে ৭ সংখ্যাটি সৌভাগ্যের প্রতীক বলে সবাই গ্রহণ করে নিয়েছে, তা বলা কঠিন। তবে গ্রিক দার্শনিক ও গণিতবিদ পিথাগোরাসের (খ্রিষ্টপূর্ব ৫৭০–৪৯৫) অনুসারীদের মতে, ৭ একটি সম্পূর্ণ বা নিখুঁত সংখ্যা (পারফেক্ট নাম্বার)। কারণ, ৩ ও ৪ এর যোগফল ৭।
তাদের হিসাবে ত্রিভুজ ও বর্গক্ষেত্র হলো নিখুঁত জ্যামিতিক চিত্র এবং তাদের বাহুর সংখ্যা ওই ৩ ও ৪। হয়তো প্রাচীন এই ধারণা থেকে ৭ সংখ্যাটি সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে চালু হয়ে গেছে।
লুডোর ছক্কার ঘুঁটিতে যে সংখ্যাগুলো থাকে, তার মধ্যে একটি ছন্দ আছে। দুই বিপরীত পাশের অঙ্কগুলো যোগ করলে সবসময় ৭ হয়। যেমন, যে পিঠে ৫ তার অপর পিঠে থাকে ২, যে পিঠে ৬, তার অপর পিঠে ১, যে পিঠে ৩, তার অপর পিঠে ৪…ইত্যাদি।
কোনো কোনো খেলায় একসঙ্গে দুটি ঘুঁটির চাল দিয়ে মোট ৭ পয়েন্ট পেলে পুরস্কার পাওয়া যায়। এ জন্য ওইসব খেলায় ৭ একটি সৌভাগ্যের প্রতীক বলে গণ্য হয়। এভাবেই হয়তো লাকি সেভেন কথাটির চল হয়েছে।