একটি মাছির প্রতি দয়া করা…

একটি মাছির প্রতি দয়া করা…

আমি আমার শাইখ হযরত ডা. আব্দুল হাই আরেফী রহ.-এর কাছে অনেক বার এ ঘটনা শুনেছি যে, এক বুযুর্গ অনেক বড়ো আলেম, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির ছিলেন। আজীবন দরস-তাদরীস ও রচনা-গ্রন্থনার কাজে ইলমের দরিয়া বইয়ে দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পর একজন তাঁকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলো- হযরত আপনার সঙ্গে আল্লাহ কি আচরণ করেছেন? তিনি বললেন, আল্লাহর মেহেরবানী তিনি আমাকে দয়া করেছেন। তবে আমার সঙ্গে বড়ো আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে।

তাহলো, আমার চিন্তায় ছিলো যে, জীবনে আলহামদুলিল্লাহ দ্বীনের অনেক বড়ো বড়ো খেদমত করেছি। দরস-তাদরীস, ওয়ায-নসীহত, রচনা-গ্রন্থনা ও তাবলীগসহ অনেক খেদমত করেছি। হিসাবের সময় হয়তো সে সব খেদমতের উসিলায় আল্লাহ আমার উপর মেহেরবানী করবেন। কিন্তু ঘটনা হলো এই যে, যখন আল্লাহর সম্মুখীন হলাম তখন আল্লাহ বললেন, তোমাকে আমি ক্ষমা করে দিচ্ছি। তবে কি কারণে ক্ষমা করছি জানো? চিন্তায় আসলো, আমি দ্বীনের যেসব খেদমত আঞ্জাম দিয়েছি হয়তো সেগুলোর বদৌলতে আমাকে ক্ষমা করে দিচ্ছেন। কিন্তু আল্লাহ বললেন, আমি তোমাকে অন্য এক কারণে ক্ষমা করছি, তা হলো-

একদিন তুমি কিছু লিখছিলে। তখন কাঠের কলম কালিতে চুবিয়ে চুবিয়ে লেখা হতো। তুমি লেখার জন্যে যখন কালিতে কলম চুবিয়ে উঠালে, তখন একটি মাছি এসে কলমের মাথায় বসে কালি চুষতে লাগলো। তুমি তখন থেমে গিয়েছিলে এবং চিন্তা করেছিলে যে, মাছিটা পিপাসার্ত। সে কালি পান করে যাক, তারপর আমি লিখবো। তখন এভাবে তোমার কলম বন্ধ করে রাখাটা আমার মহব্বতে এবং আমার মাখলুকের মহব্বতে ইসলামের সঙ্গে হয়েছিলো। তোমার অন্তরে তখন অন্য কোনো প্রেরণা ছিলো না। যাও, আজ আমি সেই আমলের বদৌলতে তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।

[ ইসলাম ও আমাদের জীবন খন্ড ৪ ; মুফতি ত্বাকী উসমানী হাফি. ]

Leave a Comment